সকাল থেকেই অনিয়মিত বাস চলাচল। প্রতিবাদে যাত্রীদের পথ অবরোধ। তার পরেও দুপুর পর্যন্ত বাস চলাচল স্তব্ধ। সব মিলিয়ে চরম হয়রানির শিকার হতে হল ধুবুলিয়া, সোনাডাঙা, বামুনপুকুর, মায়াপুর এলাকার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের। বাস না থাকায় রোদের মধ্যে যন্ত্রচালিত ভ্যানে চড়ে তাদের পরীক্ষা দিতে যেতে হয়। এই ঘটনায় প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছে পরীক্ষার্থীরা।
বেশ কয়েক দিন ধরেই বাস চলা চল অনিয়মিত কৃষ্ণনগর-মায়াপুর রুটের। রবিবার সারা দিন এবং সোমবার সকালেও বাস চলাচল অনিয়মিত হওয়ায় ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। এর প্রতিবাদে তাঁরা সকাল সাতটা থেকে সোনাডাঙা এলাকায় পথ অবরোধ শুরু করেন। এলাকার মানুষের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসনকে বারবার বলা সত্ত্বেও বাস চালানোর জন্য তাদের তরফে তেমন কোনও উদ্যোগ ছিল না। সোনাডাঙার বাসিন্দা সইফুজ্জামান মোল্লা বলেন, “প্রায় শ’খানের পরীক্ষার্থীকে হয়রান হতে হল। প্রশাসন যদি বাস মালিকদের বাস চালানোর জন্য চাপ দিত তাহলে বাস নিশ্চয় চলত। আর প্রশাসনের উদ্যোগ সত্ত্বেও যদি এই ঘটনা হয় তাহলে এটা প্রশাসনের ব্যর্থতা।” এ দিন সকাল ন’টা নাগাদ অবরোধ উঠে গেলেও দুপুর একটা পর্যন্ত ধুবুলিয়া-মায়াপুর রুটে বাস চলাচল বন্ধ ছিল। কিন্তু বাস বন্ধের কারণ নিয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি প্রশাসনের কর্তারা।
এই এলাকা থেকে প্রতিদিন কয়েকশো মানুষ কৃষ্ণনগরে আসেন। এ ছাড়া ট্রেন ধরার জন্যও আসেন অনেকে। সকালে বাস না পাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা সিপিএমের ফজলুর রহমান বিশ্বাস বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই এই রুটের বাস চলাচল অনিয়মিত। অধিকাংশ দিনই শেষ বাস চলে না। ফলে চরম হয়রানির শিকার হতে হয় মানুষকে। বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হয়নি। এ দিন পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও বাস না চলার ঘটনা পুরোপুরি প্রশাসনিক ব্যর্থতাই প্রমাণ করে।” বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়া জেলার প্রায় ১৩০ টি বাস প্রশাসনের কোনও রকম অনুমোদন না নিয়েই বীরভূমের পাথরচাপুড়ির মেলায় ভাড়া খাটছে। মায়াপুর রুটেরও বেশ কয়েকটি বাস ভাড়া খাটতে গিয়েছে। ফলে ওই রুটে বাস চলাচল অনিয়মিত। নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির সহ-সম্পাদক অসীম দত্ত বলেন, “সকালের দিকে দু’একটি বাস চলেনি। আর এই সামান্য কারণেই এলাকার মানুষ ও যন্ত্রচালিত ভ্যান চালকেরা অবরোধ করেন।” কিন্তু অবরোধ উঠে যাওয়ার পরেও কেন বাস চালানো হয়নি সে প্রশ্নের উত্তরে তাঁর সাফাই, “শ্রমিকেরা ভয়ে বাস চালাতে চাইছিলেন না।” জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক মলয় রায় বলেন, “অবরোধের খবর পাওয়া মাত্রই আমরা অবরোধ তোলার ব্যবস্থা করেছিলাম।” কিন্তু এ ভাবে বারবার বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল অনিয়মিত হওয়ার পরেও কেন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন? এর উত্তরে মলয়বাবুর সাফাই, “কেউ নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ করেননি।” |