দিনভর যানজট লেগেই রয়েছে। তার উপরে রাস্তায় উপচে পড়া ড্রেনের জল। রাস্তা জুড়ে আবর্জনা। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর বেলডাঙার বড়ুয়া মোড়ে এ ছবি রোজকার। এলাকার বাসিন্দারা জানালেন, বড়ুয়া মোড়ের বাজারে প্রত্যহ প্রায় এক লক্ষ মানুষ যাতায়াত করেন। তবে পুরসভার নূন্যতম পরিষেবাটুকুও মেলে না ওই এলাকায়। এখনও তৈরি হয়নি একট বাসস্ট্যান্ডও।
রাস্তার দু’ধার জুড়ে বাজার আর এর মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বাস ধরতে আসা হাজার হাজার মানুষকে। এলাকার মানুষদের অভিযোগ, এই রাস্তা ও আবর্জনা ভর্তি বাজার নিয়ে উদাসীন পুরসভা। বার বার জানানো সত্ত্বেও কোনও রকম পরিষেবার ব্যবস্থা করেন নি তাঁরা। নিকাশি না থাকায় রাস্তাতেই জমে থাকে জল। এ ছাড়া রাস্তার দু’দিকের জায়গা দখল করে গজিয়ে উঠেছে দোকান, হোটেল। পণ্যবাহী গাড়ির উপদ্রবে রাস্তা পার হওয়ায় একটা সমসা। রাস্তার উপরে যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে লরি। সব মিলিয়ে নিত্য দিন ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে এলাকার মানুষ জনকে। কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার পথে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর বড়ুয়া মোড়ে বসে এলাকার সব থেকে বড় বাজার। মোড়ের এক দিকে বেলডাঙা পুরসভা ও অন্য দিকে বেলডাঙা-১ পঞ্চায়েত সমিতির এলাকা। এই মোড়েই বসে বেলডাঙার কাপড়ের হাট ও পশু হাট। দুই হাটেই রাজ্যের নানা জায়গা থেকে মানুষ আসেন। এ ছাড়া পাশেই শিয়ালদহ-লালগোলা শাখার বেলডাঙা স্টেশন ও বেলডাঙা-আমতলা রাজ্য সড়ক। ফলে এই এলাকায় মানুষের আনাগোনা লেগেই আছে। বাস তো দূরের কথা, ভ্যান বা রিকশা দাঁড়ানোরও কোনও নির্দিষ্ট জায়গা নেই। ফলে পড়ুয়া থেকে নিত্যযাত্রী, রোগী, বৃদ্ধ সকলকেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয় জমা জলের উপরে। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, প্রশাসন কিছুই করছে না। বেলডাঙার বাসিন্দা আইনজীবী সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাকে রোজ বহরমপুর যেতে হয়। বড়ুয়া মোড়ে যেতে ইচ্ছে করে না। বাস ধরার জায়গা নেই, চারিদিক আবজর্না ভর্তি। দুটো যাত্রী প্রতিক্ষালয় থাকলেও সেখানে বাস দাঁড়ায় না। কিন্তু তা নিয়ে প্রশাসন, পুরসভা, পঞ্চায়েত সমিতি কারও কোনও মাথাব্যাথা নেই।” |
বেলডাঙার পুরপ্রধান অনুপমা সরকার বলেন, “সমস্যা আছে। তবে বড়ুয়া মোড়ের আবর্জনা ফেলার জন্য আমরা পুরসভার পক্ষ থেকে একটা বড় গাড়ি রেখেছি। সকাল থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত এলাকা পরিষ্কার রাখা হয়। তবে নিত্যযাত্রী ও ব্যবসায়ীরা সচেতন হলে তবেই সমস্যা কমবে।” বেলডাঙা বড়ুয়া ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মুকতাদির মোল্লা বলেন, “পুরসভার কোনও ইচ্ছেই নেই সমস্যা মেটানোর। আমরা নিজেরাই কর্মী নিয়োগ করে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি। এ ছাড়া পুরসভা বাড়তি বিজ্ঞাপন লাগিয়ে ব্যবসা করছে। ফলে রাস্তার কিছুটা অংশ দখল করে নিচ্ছে হোর্ডিং। তাতেই যানজট আরও বাড়ছে। অপরিচ্ছন্ন এলাকায় মানুষ আসছেন না। ফলে সবথেকে সমস্যায় পড়ছেন ব্যবসায়ীরা।”
বেলডাঙার বিডিও সচ্চিদানন্দ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “এলাকায় সমস্যা আছে। একটা বড়ো ড্রেন তৈরির প্রস্তুতি চলছে। সেটা হয়ে গেলে সমস্যা কিছুটা কমবে। তবে এলাকায় প্রশাসন নেই এটা ঠিক নয়। কারণ প্রত্যহ পাঁচরাহা রেলগেট ও বড়ুয়া মোড়ে পুলিশকর্মী নিযুক্ত থাকেন। তবে মানুষ সচেতন হলেই সমস্যা অনেক কমে যাবে। তাঁদের সচেতন হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।” |