ম্যাচের পর ম্যাচ পেরিয়ে যায়। ‘একশোর একশো’ আর হয় না। সচিনের শততম শতরানের উৎকণ্ঠা একশো একুশ কোটির মধ্যে একজনের যেন আরও খানিক বেশি। হবে নাই বা কেন? ক্রিজে সচিন মানেই তো গ্যালারিতে তিনি। সচিনের হাতে ব্যাট, তাঁর হাতে শাঁখ। তিনি বিহারের মজফ্ফরপুরের বাসিন্দা সুধীর কুমার। টেলিভিশনের দৌলতে যাঁর চেহারা চেনেন কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারীর ক্রিকেটপ্রেমীরা।
মাথায় জাতীয় পতাকার ছাঁটে কাটা চুল। বুকে তেরঙ্গার উপরে লেখা তেন্ডুলকর লেখা সেই সুধীর কুমারের একশো সেঞ্চুরির প্রতীক্ষা শেষ হল ঢাকায়। সচিনের একশোতম সেঞ্চুরি দেখে সাইকেলে কলকাতা ফেরার পথে রবিবার বনগাঁয় তাই তিনি দৃশ্যতই উচ্ছ্বসিত। জানান, সেঞ্চুরি না হওয়া অবধি কী উৎকণ্ঠায় ছিলেন তিনি। সুধীরকুমারের কথায়, “অস্ট্রেলিয়ায় সেঞ্চুরি না হওয়ার পরে ঠিক থাকতে পারিনি। সাইকেল নিয়ে সোজা গেলাম দেওঘর। শঙ্করবাবার কাছে প্রার্থনা জানিয়ে গেলাম ৪২ কিলোমিটার দূরের আরেকটি মন্দিরে। সেখানে প্রার্থনা জানিয়ে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে। তারপর সাইকেল নিয়ে সোজা ঢাকা।”
সেখানেই সত্যি হতে দেখলেন এত দিনের লালিত স্বপ্ন। |
সেঞ্চুরি হওয়ার পর গ্যালারিতে আনন্দে চোখে জল এসে গিয়েছিল সুধীরের। তবে ঢাকায় সচিনের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়নি সুধীরের। কারণ জানালেন তিনি নিজেই, “ঈশ্বর আমার কথা শুনেছেন। তবে শততম সেঞ্চুরি করলেও দল হেরে যাওয়ায় সচিন খুশি হননি। সাংবাদিক সম্মেলনে আসেননি। তাই আর দেখা হয়নি।” তবে দেখা তিনি করবেনই। বাড়ি ফিরেই ১লা এপ্রিল ফের বেরিয়ে পড়ছেন মুম্বই-এর উদ্দেশে। আইপিএলের খেলা দেখতে গিয়ে শততম সেঞ্চুরির জন্য সচিনকে বিশেষ উপহার দিতে চান তিনি।
কী সেই উপহার?
সুধীরের জবাব, “সচিন সাঁইবাবার ভক্ত। তাই কলকাতায় অর্ডার দিয়ে একটি চার ফুটের সাঁইবাবার মূর্তি বানিয়েছি। সেটি চাল, ডাল, থার্মোকল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।” সচিনকে নিজের বাড়ি মজফ্ফরপুরের লিচুও উপহার দিয়েছেন তিনি। আইপিএলে তাই ফের সচিন-জাদুতে মাতবেন সুধীর। সুধীরের মতে, পরের বিশ্বকাপ অবধি খেলা চালিয়ে যাওয়া উচিত সচিনের। কিন্তু সচিন অবসর নিলে কী করবেন তিনি? কথা হারিয়ে যায় সুধীরের মুখে।
|