পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা রেঞ্জ থেকে আসা প্রায় ২৪টি হাতির একটি দলের তাণ্ডবে ওই জেলারই সুলতানপুর এবং সংলগ্ন হুগলির গোঘাটের বেশ কিছু গ্রামের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। হাতির হানায় গোঘাটে এক ব্যক্তি জখম হয়েছেন।
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত প্রায় দেড়টা নাগাদ হাতির দলটি গড়বেতা ও চন্দ্রকোনার শ্রীনগর হয়ে সুলতানপুরে ঢুকে পড়ে।
বোরো ধান ও তিল চাষের জমিতে তাণ্ডব চালায় তারা। এই প্রথম ওই এলাকায় হাতির পাল ঢুকল। ফলে, কী করণীয় বুঝে উঠতে পারেননি এলাকার বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু তার আগেই রঞ্জপুর, গোবিন্দপুর হয়ে হাতির পালটি বাঁকুড়ায় ঢোকার চেষ্টা করে। কিন্তু বিষ্ণুপুরের বাঁকাদহ রেঞ্জ এলাকায় গ্রামবাসীদের কাছ থেকে বাধা পেয়ে হাতিরা ঢুকে পড়ে গোঘাটে।
ওই দলে কয়েকটি দাঁতাল এবং কয়েকটি ছোট হাতিও রয়েছে। রাত থেকেই দলটি গোঘাটের নকুণ্ডা এহং শ্যাওড়া পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন গ্রামে দাপিয়ে বেড়ায়। নষ্ট করে বোরো ধান, পেঁয়াজ এবং ডালশস্যের খেত। সোমবার সকাল থেকেই বনকর্মীরা হাতির পালকে জঙ্গলে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করেন। |
তাতে সামিল হন গ্রামবাসীরাও। তাঁরা টিন বাজিয়ে হাতিদের পিছু নেন। বন দফতরের অভিযোগ, ওই সুযোগে কিছু মানুষ ইট ছুড়ে, নানা রকম শব্দ করে হাতির পালকে উত্যক্ত করার চেষ্টা করছিলেন। সেই দলে বেলেকুসুমা গ্রামের মনসা রায়ও ছিলেন। বিকেলে একটি হাতি আচমকা তাঁকে তাড়া করে। মনসাবাবু পড়ে গেলে হাতিটি তাঁকে পা দিয়ে চেপে দেয়। মনসাবাবু হাত-পা-মাথায় চোট পান। তাঁকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বিকেলে আরামবাগের মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী ঘটনাস্থলে আসেন। রাত পর্যন্ত হাতির পালটির অবস্থান ছিল গোঘাটের বিস্তীর্ণ ‘দলকার জলা’য়।
রাতেই চলে আসে ‘হুলা পার্টি’। বন দফতরের আরামবাগ ডিভিশনের রেঞ্জ অফিসার চন্দ্রশেখর মাহাতো বলেন, “হাতির পালটিকে জঙ্গলে ফেরানোর চেষ্টা চলছে। ফসলের ক্ষতির পরিসংখ্যান জানতে মঙ্গলবারই এলাকায় মাপজোক করা হবে। রিপোর্ট দফতরের ডিভিশনাল অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।”
ঘাটালের বিডিও দেবব্রত রায় এ দিন বলেন, “কিছু ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বন দফতরে খবর দেওয়া হয়েছে।” |