কুলিক পক্ষিনিবাসে ৪৪ প্রজাতির প্রজাপতির হদিস পেল বন দফতর। সম্প্রতি, বন দফতর রায়গঞ্জের ওই পক্ষিনিবাসে একটি সমীক্ষা করেন। সেখানে একসঙ্গে একাধিক প্রজাতির প্রজাপতির দেখা মেলায় খুশি বন দফতরের কর্তা ও পরিবেশপ্রেমীরা। বন দফতরের আশা, পরিযায়ী পাখিরা চলে যাওয়ার পর প্রজাপতি দেখতেও পক্ষিনিবাস চত্বরে পর্যটকরা ভিড় জমাবেন। বিষয়টি পর্যটকদের জানাতে বন দফতরের তরফে প্রজাপতির ছবি ও বিবরণ সংবলিত একটি লিফলেট বিলি করার কাজ শুরু করা হয়েছে। রায়গঞ্জের বিভাগীয় বনাধিকারিক অপূর্ব সেন বলেন, “পক্ষিনিবাস চত্বরে প্রজাপতি দেখতে এখন থেকে সারা বছর ধরে পর্যটকরা ভিড় জমাবেন বলে আশা করছি। আমরা বিষয়টি নিয়ে শহরে প্রচারে নেমেছি। প্রকৃতির নিয়মেই প্রজাপতিরা পক্ষিনিবাসে বসবাস করছে। তাদের সংরক্ষণের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” তিনি জানান, পক্ষিনিবাস চত্বরে প্রজাপতির অবাধ বিচরণ ও খাদ্য হিসাবে মধু সংগ্রহ করতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য বনকর্মীদের আগাছা ও নানা ফুলগাছ না ছাঁটার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবছর জুন-জুলাই নাগাদ ওপেন বিল স্টক, লিটিল করমোন্যান্ট, নাইট হেরন, লিটিল ইগ্রেট সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি পক্ষিনিবাসে আসে। প্রজননের পর জানুয়ারি-ফ্রেব্রুয়ারি মাস নাগাদ তারা ফিরে যায়। পরিযায়ী পাখিদের দেখতে প্রতিবছর প্রচুর পর্যটক পক্ষিনিবাসে ভিড় করেন। পরিযায়ীরা চলে যাওয়ার পর পর্যটকরা যান না। ফলে সেই সময় বন দফতরের আয় কমে যায়। বন দফতরের কর্তারা টানা সমীক্ষা চালিয়ে পক্ষিনিবাস চত্বরে কমন ওয়ানডেরার, বারোনেট, অ্যাঙ্গলেড ক্যাসটর, গ্রেট এগফ্লাই, কমন ক্যাসটর, ব্লু মরমন, কমন মরমন, কমন গ্রাস ইওলো, রাইস সুইফ্ট, কমান্ডার, মটলেড এমিগ্র্যান্ট, লাইম, কমন সেইলর, পাল্মফ্লাই, কমন মাইম, পিকক প্যান্সি, গ্রে প্যান্সি, লেমন প্যান্সি, কমন ক্রো, কমন ইভিনিং ব্রাউন, কমন ব্যারোন, কমন পিয়েরোট, রাউন্ডেড পিয়েরোট, সাইক, গ্র্যাস ডেমন, কমন সিলেট ব্লু, কমন টিগার, পাল গ্র্যাস ব্লু, কমন রেড আই, লাইম ব্লু, চকোলেট রয়্যাল, ডার্ক গ্র্যাস ব্লু, হোয়াইট টুফটেড রয়্যাল, স্কারলেট ফ্ল্যাস, শ্রীলঙ্কান কমন কুয়াকার, ডার্ক পাল্ম ডার্ট, অ্যাপেফ্লাই, কমন ব্রুশ ব্রাউন, কমন জ্যা, কমন লিওপার্ড, কমপ্লিট পেন্ট ব্রাশ সুইফ্ট, ইয়ামফ্লাই, মায়ানমার কমন কুয়াকার ও লেসার গ্র্যাস ব্লু প্রজাতির প্রজাপতির খোঁজ পেয়েছেন। ওই প্রজাপতি গুলির গায়ে সাদা, বাদামি, হলুদ, কালো, নীল, ছাই, রাণী, বেগুনি কমলা, আকাশি সহ বিভিন্ন রঙের নজরকাড়া নকশা রয়েছে। প্রজাপতিগুলির আকৃতিও বিভিন্ন নকশার আলপনার মতো। রায়গঞ্জের পরিবেশ প্রেমী সংগঠন হিমালয়ান মাউন্টেনার্স অ্যান্ড ট্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি অতীন বক্সি বলেন, “পক্ষিনিবাস চত্বরে বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতির খোঁজ মেলায় আমরা খুশি। বিজ্ঞানসম্মত ভাবে পক্ষিনিবাস চত্বরে প্রজাপতি সংরক্ষণ করার জন্য বন দফতরের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে। প্রজাপতির বিষয়ে সচেতন করতে অ্যাসোসিয়েশনের তরফে শহরের বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে খুব শীঘ্রই প্রকৃতি পাঠ শিবির আয়োজন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।” |