দুষ্কৃতী সন্দেহে ব্যাঙ্ক থেকে তিন জনকে গ্রেফতারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার দুপুরে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে হাওড়ার সাঁকরাইলের ধুলাগড়ি বাঁশতলায়। ব্যাঙ্কের বাইরে হাজির কয়েকশো গ্রামবাসী দাবি করেন, ধৃতদের তাদের হাতে তুলে দিতে হবে। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পুলিশ মৃদু লাঠি চালায়। নামানো হয় র্যাফ। পুলিশ জানায়, ধৃতেরা হল মহম্মদ আলি, শেখ মহম্মদ এবং শেখ ওসমান। এরা মেটিয়াবুরুজ ও গার্ডেনরিচ এলাকার বাসিন্দা। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগ করেছেন থানায়। যদিও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ধৃতেরা কেপমার। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে এ দিন এই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ধুলাগড়ি বাঁশতলা শাখা কার্যালয়ের ভিতরে দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ তিন জন যুবককে বসে থাকতে দেখেন গ্রাহকেরা। দীর্ঘ ক্ষণ ধরে তারা বসে থাকায় জনা দুই গ্রাহক জিজ্ঞাসা করেন, কী কারণে তারা ব্যাঙ্কের ভিতরে এত ক্ষণ ধরে বসে রয়েছে? ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, এ কথা শুনেই ওই তিন জন দ্রুত ব্যাঙ্ক থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ধাওয়া করে গ্রাহকেরা তাদের ধরে ফেলেন। ভিতর থেকে কোলাপসিবল গেট বন্ধ করে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। গ্রাহকদের অভিযোগ, সন্তোষজনক উত্তর মেলেনি ওই তিন জনের কাছ থেকে। সন্দেহ করা হয়, তিন জনই ডাকাত। ব্যাঙ্কে ডাকাতি করার উদ্দেশেই এসেছিল।
ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ খবর দেন সাঁকরাইল থানায়। পুলিশ আসে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, সকলেই কেপমার। ব্যাঙ্কের ভিতরে ঘাপটি মেরে বসেছিল। পরে সুযোগ বুঝে কোনও গ্রাহক বেশি টাকা তুলে বাইরে গেলেই তার গায়ে নোংরা ফেলে হাত থেকে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে চম্পট দেওয়ার ছক ছিল তাদের। পুলিশ আরও জানতে পারে, ওই তিন জন এসেছিল একটি গাড়িতে করে। ওই গাড়ি নিয়েই পালানোর তালে ছিল। পুলিশ গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করেছে।
এ দিকে, দুষ্কৃতীদের তাদের ‘হাতে’ তুলে দিতে হবে, এই দাবি তুলে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা ব্যাঙ্কের চারপাশে ঘিরে ফেলেন। তাঁদের বক্তব্য, গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি কেপমারির ঘটনা ঘটেছে। এ জন্য এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ জমেছিল আগেই। এ দিন ধৃতদের ছিনিয়ে নিয়ে জোর করে ব্যাঙ্কের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে জনতা। খবর পেয়ে আরও পুলিশ আসে। হাজির হয় র্যাফ। জনতা কিছুটা পিছু হঠলে পুলিশ ওই তিন জনকে নিয়ে থানায় যায়।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “পর পর কয়েকটি কেপমারির ঘটনা ঘটে যাওয়ায় গ্রামবাসীরা কিছুটা উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।” |