|
|
|
|
বকেয়া পাওয়ার আশায় খুশি ডানলপ কর্মীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • সাহাগঞ্জ |
আদালতের রায়ে ডানলপের শ্রমিকেরা খুশি। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা সাহাগঞ্জের ডানলপ কারখানার শ্রমিকরা মনে করছেন, হাইকোর্টের রায়ে তাঁদের বকেয়া পাওনা হাতে আসার পথ খুলে গেল।
২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে বন্ধ কারখানার দরজা খোলার পরে বার বার আশ্বাস দিলেও কর্তৃপক্ষ উৎপাদন সে ভাবে শুরু করেননি। শ্রমিকদের আশঙ্কা ছিল, উৎপাদনে গতি না এলে কারখানার দরজা ফের বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেই আশঙ্কা যে অমূলক ছিল না, পরের ৩ বছরের পরিস্থিতি তা-ই প্রমাণ করেছে। ২০১১ সালের ৮ অক্টোবর কারখানা ফের বন্ধ হয়ে যায়। ডানলপের হোস-পাইপ বিভাগে ১৯ বছর ধরে কর্মী ছিলেন উত্তম শীল। তিনি বলেন, “পিএফ, গ্র্যাচুইটি এবং অন্যান্য বকেয়া মিলিয়ে কমপক্ষে আড়াই লক্ষ টাকা আমার পাওনা রয়েছে। হাইকোর্টের রায়ে আমি খুশি। অনেকেই আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু বকেয়া পাইনি। এ বার আশা করছি, তা পেতে পারি।” ডানলপের মিল বিভাগের কর্মী ব্রজভূষণ সিংহ ৩২ বছর ধরে এই কারখানায় কাজ করছেন। বাড়ি বিহারের সিওয়ান জেলায়। তিনি বলেন, “স্ত্রী-সন্তানদের দেশে পাঠিয়ে দিয়েছি। আদালতের রায়ে আশা করছি, ভাগ্যের শিকে এ বার ছিঁড়বে।”
গত বছর কারখানা বন্ধের পরেই সিটু, আনএনটিইউসি এবং আইএনটিটিইউসি সংস্থার দরজা খোলার দাবিকে সামনে রেখে যৌথ আন্দোলনে নেমে ‘জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’ তৈরি করে। ডানলপ গেটে স্থায়ী মঞ্চ বাঁধা হয়। প্রত্যেক শ্রমিক সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে গঠিত ওই কমিটি রাজ্যে শ্রমিক আন্দোলনে নতুন দিশা দেখিয়েছিল। হাইকোর্টের রায় শোনার পরেই এ দিন বিকেলে শ্রমিকেরা কমিটির মঞ্চের সামনে জড়ো হন।
আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি বিদ্যুৎ রাউত বলেন, “ডানলপের বর্তমান কর্তৃপক্ষ নিজেদের এত দিন সব আইনের ঊর্ধ্বে মনে করতেন। বার বার আশ্বাস দিয়েছেন উৎপাদন চালুর। কিন্তু কথা রাখেননি। শ্রমিকদের বকেয়া পাওনার তালিকা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে জমা দিয়েছিলাম। আশা করছি হাইকোর্টের রায়কে অন্তত মান্যতা দিয়ে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের পাওনা মেটানোর ব্যাপারে পদক্ষেপ করবেন।” সিটুর রাজ্য নেতা শান্তশ্রী চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য বক্তব্য, “ডানলপ কারখানায় প্রতিরক্ষা দফতরের এরো টায়ার এবং অন্যান্য সরঞ্জাম তৈরি হত। এখন একমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারই ডানলপ কারখানাকে অধিগ্রহণ করে বাঁচাতে পারে। এর আগে আমরা এই আবেদন রেখেছিলাম। আমাদের দলের সাংসদরা আবারও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই অনুরোধ করবেন। রাজ্য সরকারও আমাদের প্রচেষ্টাকে বাস্তবায়িত করতে সহযোগিতা করুক, এটাই আমরা চাই।” |
|
|
|
|
|