এল বিধায়ক নিয়ে শর্তও
ফের শুরু অপহৃত ইতালীয়র মুক্তি আলোচনা
কাটল অচলাবস্থা। অপহৃত ইতালীয় পাওলো বোসুস্কোর মুক্তি নিয়ে ওড়িশা সরকার এবং মাওবাদীদের পছন্দের মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে ফের কথা শুরু হল। মাওবাদীদের অপর যে গোষ্ঠীটি বিজেডি বিধায়ক ঝিনা হিকাকাকে অপহরণ করেছিল, দু’দিন নীরব থাকার পর মুখ খুলল তারাও। মুক্তির শর্ত হিসেবে জানিয়ে দিল, অবিলম্বে জঙ্গলে সামরিক অভিযান বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে জেলবন্দি মাওবাদীদের মুক্তি দিতে হবে।
১২ দিন আগে অপহৃত ইতালীয় ক্লদিও কোলোঙ্গেলোকে শনিবার মাওবাদীরা মুক্তি দিলেও তাঁর সঙ্গী বোসুস্কোর মুক্তি এখনও অনিশ্চিত। দুই ইতালীয়ের মুক্তি নিয়ে গত ২৪ মার্চ মাওবাদী মধ্যস্থতাকারী ও সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা যখন চলছে, তখনই কোরাপুট জেলায় অপহৃত হন লক্ষ্মীপুরের বিজেডি বিধায়ক ঝিনা হিকাকা। এর পর আলোচনা আর চালাতে চাননি মধ্যস্থতাকারীরা। ঠিক তার পর দিনই মাওবাদীরা ক্লদিওকে মুক্তি দেয়। মাওবাদীদের এই নতুন পদক্ষেপ ফের এক বার আলোচনার রাস্তা তৈরি করে দেয়।
একটি আদিবাসী ছেলের সঙ্গে অপহৃত ইতালীয় পাওলো বোসুস্কো। ফাইল চিত্র
বোসুস্কোর মুক্তি নিয়ে খুব শীঘ্রই আলোচনা শুরু হতে পারে বলে সকালেই জানিয়েছিলেন মাওবাদীদের বেছে নেওয়া মধ্যস্থতাকারী দণ্ডপাণি মহান্তি এবং বি ডি শর্মা। আলোচনায় রাজ্য সরকারের তরফে রয়েছেন স্বরাষ্ট্রসচিব ইউ এন বেহরা, পঞ্চায়েতসচিব পি কে জেনা এবং আদিবাসী ও উপজাতি উন্নয়ন দফতরের সচিব এস কে সারঙ্গী।
মধ্যস্থ ও সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক শুরুর পর ওড়িশার স্বরাষ্ট্রসচিব বেহরা বলেন, “বোসুস্কো যাতে মুক্তি পান তা নিয়ে যথেষ্ট বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশেই আলোচনা শুরু হয়েছে। আশা করা যায় শীঘ্রই সমাধানসূত্র মিলবে।” মধ্যস্থদের অন্যতম মহান্তি জানিয়েছেন, তাঁর কাছে এখনও পর্যন্ত যা খবর, নিরাপদেই আছেন ঝিনা।
অপর মধ্যস্থ বি ডি শর্মা জানিয়েছেন, মাওবাদীদের মধ্যে যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু তার প্রভাব আদৌ পড়বে না অপহৃতদের মুক্তি সংক্রান্ত আলোচনায়।
আজ দুপুরে সাংবাদিকদের হাত দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের নামে চিঠি পাঠায় মাওবাদীদের একটি সংগঠন। তাতে বলা হয়েছে, ঝিনাকে ফিরে পেতে হলে অবিলম্বে জঙ্গলে তল্লাশি অভিযান বন্ধ করতে হবে। জেল থেকে মুক্তি দিতে হবে ‘রাজনৈতিক বন্দি’দের। শাখা সংগঠন চাষি মূলিয়া আদিবাসী সঙ্ঘের কর্মীদের মুক্তির দাবিও রাখা হয়েছে।
এরই মধ্যে বিধায়ক অপহরণের দায় ঘাড় থেকে একেবারে ঝেড়ে ফেলে মাওবাদী শীর্ষ নেতা সব্যসাচী পণ্ডা আজ জানিয়ে দিয়েছেন, অন্য একটি গোষ্ঠী বিধায়ককে অপহরণ করেছে এবং মালকানগিরিতে এক সাব-ইনস্পেক্টরকে খুন করেছে। ওই ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। তবে সরকার তাঁদের দাবি না মানলে বোসুস্কোকে মুক্তি দেওয়া হবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন সব্যসাচী। অবশ্য বোসুস্কোর কোনও ক্ষতি করা হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে রয়েছে তা আজ পুরোপুরি স্বীকার করে নিয়ে সব্যসাচী বলেন, “এখন আর গোপন করার কিছু নেই।”
আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিধায়ক ঝিনা অপহরণ সম্পর্কে নবীন পট্টনায়ক সকালে বিধানসভায় বলেন, “বিধায়কের মুক্তির ব্যাপারে অপহরণকারীরা এখনও কোনও শর্ত জানায়নি।” ঝিনা সম্পর্কে কোনও তথ্য জানতে পারেনি পুলিশও। এই কথা জানার পরই সভায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিরোধী দলের বিধায়করা। তাঁরা ওয়েলের দিকে ধেয়ে যান। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির দায় স্বীকার করে অবিলম্বে নবীনের পদত্যাগের দাবি জানান তাঁরা। বিরোধীদের অভিযোগ, কোরাপুটে জেলা পরিষদ নির্বাচনে মাওবাদীদের শাখা সংগঠন চাষি মূলিয়া আদিবাসী সঙ্ঘের সঙ্গে বোঝাপড়া করেছিল ক্ষমতাসীন বিজেডি। কিন্তু বোঝাপড়া কোনও কারণে চিড় খাওয়ার জেরেই অপহৃত হয়েছেন বিধায়ক। তুমুল হৈ-হট্টগোলের মধ্যে সভা মুলতুবি করে দেওয়া হয়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.