তন্তুজ পণ্য কিনুক প্রকৃত তাঁতিদের থেকে, দাবি
মাকুতে তৈরি তাঁতের কাপড় ও গামছা প্রকৃত তাঁতিদের কাছ থেকে লাভজনক দরে কিনুক তন্তুজ। রবিবার শ্রীরামপুরে তন্তুজ আয়োজিত একটি সভায় এমনই দাবি করলেন বর্ধমানের তাঁতিরা। সমবায়, স্বনির্ভর গোষ্ঠী থেকে তাঁত বস্ত্র সংগ্রহ করার লক্ষ্যে শ্রীরামপুরে তন্তুজের রিজিওনাল গোডাউনে তন্তুজের উদ্যোগে ওই সভার আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন, সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর রবীন্দ্রনাথ রায়, বিপণন কর্তা প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং পূর্বস্থলীর বিধায়ক স্বপন দেবনাথ (দক্ষিণ) ও তপন বন্দ্যোপাধ্যায় (উত্তর)। সভায় যোগ দিয়েছিলেন বর্ধমান জেলার বিভিন্ন তাঁত সমবায় সমিতি।
প্রকৃত তাঁতিদের কাছ থেকে পণ্য না কিনে বিভিন্ন সমবায়ের মাধ্যমে পণ্য কেনার পরিকল্পনার বিরোধিতা করেন সভায় উপস্থিত তাঁতিরা। তাঁদের অভিযোগ, আগেও ওই সংস্থা এই ধরনের পরিকল্পনা করায় সরকারি প্রকল্পের সুফল সামান্যই পেয়েছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, আগে কিছু কিছু সমবায় বাজার থেকে নামমাত্র দামে কাপড় কিনে তা তাঁতিদের কাছ থেকে কেনা বলে সংস্থার কাছে চড়া দামে বিক্রি করেছে। ফলে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তাঁরা। অন্য দিকে, গুণমান খারাপ হওয়ায় ক্রেতারাও ওই পণ্য কিনতে চাননি। তাই, সরকারি প্রকল্পের সুফল নিশ্চিত করতে প্রকৃত তাঁতিদের কাছ থেকে কাপড় বা গামছা কেনার আবেদন জানান তাঁরা।
অন্য দিকে, তাঁত সমবায়গুলিও নিজেদের দুরাবস্থার কারণ হিসেবে তন্তুজকেই দায়ী করেছেন। তাঁদের দাবি, টাকা পেতে দেরি হওয়ায় অধিকাংশ তাঁতিই বাজারে তাঁদের পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হন। তেলি ন’পাড়ার মহিলা তাঁত সমবায় সমিতির সদস্য মানিক চক্রবর্তীর কথায়, “তন্তুজকে কাপড় বিক্রি করার মূল সমস্যা, কবে টাকা পাওয়া যাবে তার কোনও নিশ্চয়তা না থাকা। ফলে বেশিরভাগ তাঁতি খোলাবাজারে তাঁদের পণ্য বিক্রি করতে আগ্রহী।” তামাঘাটা তাঁত সমবায় সমিতির সদস্য সুদেব অবতার বলেন, “তিনদশক আগে কালনা, কাটোয়া এলাকায় সমবায় ছিল ১৭৯টি। তার মধ্যে এখন টিকে রয়েছে মাত্র ৬৪টি। ১৯৮৯ সাল থেকে সংস্থা সাময়িক ভাবে সমবায় থেকে পণ্য কেনা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলে ওই সমবায়গুলি ধাক্কা খায়। এই সময়ে সমবায়গুলির লক্ষ লক্ষ টাকা আটকে রাখে তন্তুজ। পরে সেই টাকা সমবায়গুলিকে শোধ করে দিলেও ততদিনে ব্যাঙ্কে ঋণের পাহাড় জমে গিয়েছে। পাওনা টাকা ব্যাঙ্কের সুদ মেটাতেই চলে যায়।”
তাঁতিদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন দুই বিধায়ক। স্বপনবাবু দাবি করেন, প্রকৃত তাঁতিদের থেকেই পণ্য কিনতে হবে তন্তুজকে। সে কাজ ঠিকমতো চলছে কিনা তা দেখার জন্য পৃথক একটি কমিটিও গড়ার প্রস্তাবও দেন তিনি। তপনবাবুর দাবি, বছরে মাত্র দু’বার নয়, বরং মাসে দুবার করে তাঁতিদের থেকে পণ্য কিনুক সংস্থা। সেই প্রস্তাব মেনে নিয়ে সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর বলেন, “পূর্বস্থলীতে একটি কমিটি গড়া হবে। বিধায়কের প্রতিনিধিও থাকবেন সেখানে।’ এর পাশাপাশি বছরে আরও কয়েকবার তাঁতিদের কাছ থেকে পণ্য কেনা যায় কিনা সে বিষয়েও ভাবনা চিন্তা করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। সংস্থার বিপণন কর্তা জানান, রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকার পণ্য কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বধর্মান থেকে ৭০ লক্ষ টাকার পণ্য কেনা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.