জেলা স্কুল পরিদর্শকের নির্দেশ সত্ত্বেও এক ছাত্রীকে স্কুলে ভর্তি না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রানিগঞ্জে। সোমবার এ নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার কাছে বিক্ষোভ দেখাতে যান ওই ছাত্রীর অভিভাবকেরা। কিন্তু প্রধান শিক্ষিকা দুর্ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ তাঁদের। জেলা স্কুল পরদর্শক আব্দুল হাই জানান, ভর্তি না নেওয়ার ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকার নানা প্রাথমিক স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়ার পরে রানিগঞ্জের বাসন্তী গোয়েঙ্কা বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে গিয়েছিলেন ২৫ জন ছাত্রী। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ ভর্তি না নেওয়ায় ওই ছাত্রীদের অভিভাবকেরা জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে আবেদন জানান। জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই) ওই স্কুল কর্তৃপক্ষকে ২৫ জনকে ভর্তি নেওয়ার ব্যাপারে লিখিত নির্দেশ দেন।
এই নির্দেশের পরে ২৪ জনকে ভর্তি করা হলেও সেলিমা খাতুন নামে এক ছাত্রীকে নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ওই ছাত্রীর বাবা মহম্মদ ইসমাইল জানান, তাঁরা আগে নিমচায় থাকতেন। এখন রানিগঞ্জের টিকিয়া মহল্লায় থাকেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নথিতে ঠিকানা হিসেবে নিমচার উল্লেখ থাকায় তাঁর মেয়েকে ‘বহিরাগত’ আখ্যা দিয়ে ভর্তি নিতে অস্বীকার করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষিকা জানান, পুরসভার থেকে নিজেদের নতুন ঠিকানার শংসাপত্র আনতে হবে। সেই মতো উপ-পুরপ্রধানের থেকে লিখিয়ে আনলেও মেয়েকে ভর্তি নেওয়া হয়নি বলে ইসমাইলের অভিযোগ। তাঁর আরও দাবি, পাণ্ডবেশ্বর, উখড়া, বহুলা থেকে আসা ছাত্রীদের ভর্তি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই হাইস্কুল থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ হলেও সেলিমাকে ভর্তি নেওয়া হয়নি।
সোমবার তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের রানিগঞ্জ ব্লক সভাপতি জাভেদ ইকবাল বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে স্কুলে যান। তাঁর অভিযোগ, “ডিআই-এর নির্দেশ সত্ত্বেও কেন ওই ছাত্রীকে ভর্তি না নিয়ে হয়রান করা হচ্ছে তা প্রধান শিক্ষিকার কাছে জানতে চাই। কোনও সদুত্তর না দিতে পেরে তিনি দুর্ব্যবহার করে ফিরিয়ে দেন।”
প্রধান শিক্ষিকা সূচি গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য দুর্ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি জানান, ওই ছাত্রীর আগের স্কুলের নথিতে ঠিকানা হিসেবে নিমচা লেখা থাকায় তিনি সেখানকার স্কুলে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। পরে নতুন ঠিকানার ব্যাপারে পুর প্রতিনিধির অনুমোদন আনতে বলা হয়। কিন্তু ছাত্রীর অভিভাবকেরা তা আনতে দেরি করায় ভর্তি নেওয়া যায়নি বলে দাবি প্রধান শিক্ষিকার। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “আলোচনার নাম করে এসে জাভেদ ইকবাল এ দিন আমাদের অপমান করেছেন। ওঁরাই দুর্বব্যহার করেছেন। অসম্মানজনক কথাবার্তাও বলেছেন আমাকে।”
জেলা স্কুল পরিদর্শক আব্দুল হাই বলেন, “২৫ জনকে ভর্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কাউকে ভর্তি না নেওয়ার ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |