|
|
|
|
নরওয়ে-কাণ্ড |
অভিযোগ ফিরিয়ে নিলেন বাবা, ভূমিকা নিয়ে দ্বিধায় কেন্দ্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
নরওয়ে থেকে বাঙালি দম্পতির দুই ছেলেমেয়েকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আর কোনও ধরনের সহায়তা করা হবে কি না, তা নিয়েই এখন দ্বিধায় কেন্দ্র।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ওই শিশুদের বাবা অনুরূপ ভট্টাচার্য জানান, শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক ভিন্নতার জন্যই তাঁদের দুই সন্তানকে সরিয়ে নেননি নরওয়ে কর্তৃপক্ষ। স্ত্রী সাগরিকার মানসিক সমস্যা রয়েছে এবং তাঁকে মারধরও করেছেন বলে অভিযোগ করেন অনুরূপ। সে কারণে তিনি বিবাহবিচ্ছেদ চাইছেন। সন্তানদের পেতে সুবিধা হবে ভেবেই গোড়ায় তিনি এই পারিবারিক সমস্যার কথা জানাননি বলেও যুক্তি দেন। তবে এখন মনে করছেন প্রকৃত তথ্য জানালেই সুবিধে হবে।
বুধবার অনুরূপ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিচ্ছেদের কোনও মামলা তিনি করেননি। ব্যক্তিগত সমস্যা যাই থাক, সন্তানদের দেশেই ফিরিয়ে আনতে চান তাঁরা। তবে এ ক্ষেত্রেও দেখা দিয়েছে সমস্যা। অনুরূপের ভাই অরুণাভাস জানিয়েছিলেন, তিনিই ওই দুই শিশুর দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। কিন্তু এখন তিনিও এই বিষয়ে আর আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বলে সরকারি সূত্রে খবর।
তবে সাগরিকার বাবা মনোতোষ চক্রবর্তী আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, “অভিজ্ঞান এবং ঐশ্বর্যার থেকে দূরে থাকার জন্য সাগরিকা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছে। এই অবস্থায় ছোটখাটো ঘটনা হতেই পারে। কিন্তু তা অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে। আমার মেয়ে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ। এই পরিস্থিতিতেও যে ও লড়ে যাচ্ছে সেটাই যথেষ্ট প্রমাণ। অনুরূপের সঙ্গেও কথা হয়েছে। বিবাহবিচ্ছেদের কোনও কথা বলাই হয়নি। গত বছর ডিসেম্বর মাসে নরওয়ে কর্তৃপক্ষ অনুরূপকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন সাগরিকাকে ডিভোর্স দিলে ছেলেমেয়েদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছিল ও নিজেই।” ২৩ মার্চ চূড়ান্ত শুনানির আগে এই ধরনের রটনার পিছনে কোড়ও ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলেও মনে করছেন মনোতোষবাবু। অরুণাভাস দুই শিশুর দায়িত্ব আর নিতে চান না বলে যে কথা শোনা গিয়েছে তাও ভুল বলে দাবি করেছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, পরিবারের সবাই একজোট হয়ে অভিজ্ঞান এবং ঐশ্বর্যাকে পরিবারে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
বাঙালি প্রবাসী দম্পতির দুই শিশুকে দেশে ফেরত আনার জন্য কেন্দ্রও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিল। নরওয়ের উপর চাপ তৈরি করার জন্য কূটনৈতিক দৌত্য চালানোর পাশাপাশি সে দেশের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন এস এম কৃষ্ণ নিজেও। ২৩ মার্চ সে দেশের একটি আদালত এই মামলার শুনানি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনুরূপের মন্তব্য এবং অরুণাভাসের পিছিয়ে আসার খবরে স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তিতে পড়েছে কেন্দ্র। পরে তিনি এই বক্তব্য অস্বীকার করলেও কেন্দ্র কোন অবস্থান নেবে তা নিয়েই ভাবনা চলছে। এই টানাপোড়েনের মাঝে অনির্দিষ্ট কালের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ অফিসারের নরওয়ে যাত্রার দিন। অনুরূপ এবং সাগরিকার দুই সন্তানকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে আলোচনার জন্য দূত হিসেবে পাঠানো হচ্ছিল তাঁকে।
এই প্রসঙ্গে বিদেশ প্রতিমন্ত্রী প্রীনীত কউর বলেছেন, “ভারত সরকার প্রবাসী বাঙালি দম্পতির দুই সন্তানকে দেশে ফেরত আনার সব ধরনের চেষ্টা করেছে। কিন্তু পরিস্থিতি এখন অন্য রকম, তাতে আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারি না।” |
|
|
|
|
|