নলকূপ বসানো নিয়ে দুই পরিবারের বিবাদ। আর তার জেরেই অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলার পেটে লাথি মারায় মারা গেল গর্ভস্থ সন্তান। গত ৮ মার্চ চাঁচলের ডাহুকা এলাকায় ওই গণ্ডগোলের ঘটনায় আহত হয়েছিলেন সেরিনা বিবি। শনিবার মালদহের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি একটি মৃত সন্তান প্রসব করেন।
নিছকই দুই পড়শির ওই বিবাদে লেগেছে রাজনীতির রঙ-ও। স্থানীয় তৃণমূলের দাবি, নিগৃহীত মহিলা তাঁদের সমর্থক। তাঁকে মারধর করেছে সিপিএম সমর্থকেরা। অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারা মামলা করা হয়েছে। অভিযুক্তরা সকলেই পলাতক। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
ডাহুকা এলাকায় তজমূল হকের বাড়ির সামনে পঞ্চায়েতের উদ্যোগে একটি নলকূপ বসানো হচ্ছিল। সেখানে হাজির ছিলেন জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সিপিএমের সামেনুর বিবিও। উপপ্রধানকে সামনে পেয়ে সেরিনা বিবির মা আয়েষা বিবি তাঁদের পাড়াতেও একটি নলকূপ বসানোর আব্দার করতে তাকেন। গ্রামের শেখ ইসমাইলের বাড়িতে পঞ্চায়েতের একটি নলকূপ থাকলেও তাঁদের জল নিতে দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ করেন আয়েষা। সেখানে ওই সিপিএম সমর্থক দাবি করেন, পঞ্চায়েত নলকূপ বসালেও তা খারাপ হওয়ার পরে নিজের টাকায় মেরামত করেছেন তিনি। গ্রামবাসীরা কেউ খরচ দেননি। আচমকা তা নিয়েই দুপক্ষের বচসা বেধে যায়। ক্রমে তা হাতাহাতিতে গড়ায়।
সেরিনা বিবির স্বামী আসরাফুল হক বলেন, “গণ্ডগোলের মাঝে পড়ে গিয়েছিল সেরিনা। তাঁর মাথায় বাঁশ দিয়ে আঘাত করা হয়। পেটেও লাথি মারা হয়।” চাঁচল-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রশান্ত দাসের অভিযোগ, “অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই সক্রিয় সিপিএম কর্মী। এলাকার অনেকেই সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছিলেন। সন্ত্রাস ছড়াতে তাই সেরিনা বিবির উপরে হামলা হয়।”
সিপিএমের চাঁচল জোনাল কমিটির সম্পাদক হামেদুর রহমান বলেন, “নিছকই দুই পড়সির ঝামেলা। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।” |