ডুয়ার্সে ফের ব্যবসায়ী অপহৃত। এ বার অসম সীমান্ত লাগোয়া কুমারগ্রামের বারবিশায়। শুক্রবার রাতে হাট থেকে ফেরার সময়ে তাপস সাহা নামে ওই ব্যবসায়ীকে দুই দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে জঙ্গলে নিয়ে যায়। তাপসবাবুর সঙ্গে ছিলেন অন্য দুই ব্যবসায়ী তপন দত্ত ও কাজল দাস। সকলেই সাইকেলে ছিলেন। তাঁরা বাধা দিতে গেলে দুষ্কৃতীরা শূন্যে এক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। বেগতিক দেখে তাঁরা সরে পড়েন। তাপসবাবুর সাইকেলটটিও পাওয়া যায়নি।
বারবিশার সুভাষপল্লির ওই বাসিন্দা ধানের ব্যবসা করতেন। ব্যবসায়িক প্রয়োজনেই তিনি ওই দিন বালাপাড়া গ্রামের টাপুহাটে গিয়েছিলেন। এলাকাটি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের লাগোটা সঙ্কোশ নদীর পাড়ে। অপহরণের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই ব্যবসায়ীর দাদা মদন সাহা। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনুপ জয়সোয়াল বলেন, “অপহরণের অভিযোগ পেয়েছি। ব্যবসায়ীর সন্ধানে তল্লাশি চলছে।” অপহৃত ব্যবসায়ীকে অসমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জেলা পুলিশের অনুমান। এ ব্যাপারে অসম পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।
দেড় বছর আগে অসমের কোকরাঝাড় জেলা থেকে ফেরার সময়ে বারবিশা এলাকার এক ব্যবসায়ী অপহৃত হয়েছিলেন। তের দিন পরে তিনি বাড়িতে ফেরেন। জঙ্গিরাই তাঁকে অপহরণ করেছিল বলে এলাকার বাসিন্দারা সন্দেহ প্রকাশ করলেও সে বার পুলিশ কাউকেই ধরতে পারেনি। আট বছর আগে নরেশ দাস নামে এক ব্যবসায়ী নিখোঁজ হন। আজও তাঁর হদিশ মেলেনি। তাপসবাবু অপহরণের ঘটনায় উদ্বিগ্ন এলাকার ব্যবসায়ী সমিতিও। বারবিশা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কার্তিক সাহা বলেন, “ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধারের পুলিশ তৎপর না হলে লাগাতার আন্দোলনে নামব।”
অপহৃত ব্যবসায়ীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাপসবাবুদের একান্নবর্তী পরিবার। স্ত্রী, ছেলে ছাড়াও তাপসবাবুর তিন ভাই এবং বাবা-মা রয়েছেন। তাপসবাবুর ভাই বাচ্চু সাহা বলেন, “প্রতি শুক্রবার দাদা বালাপাড়া হাটে যান। ওই দিনও গিয়েছিলেন। রাত আটটা নাগাদ আমরা খবর পাই দাদাকে দুই দুষ্কৃতী তুলে নিয়ে গিয়েছে। দাদার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি। কোন ফোনও আসেনি। খুবই দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে।” পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যবসায়ী সামান্য হাজার দশেক টাকার পুঁজি নিয়ে ধান-পাটের কারবার করতেন। ছোট মাপের ওই ব্যবসায়ীকে কেন অপহরণ করা হল তা নিয়ে ধন্দে তাই পুলিশ। |