|
|
|
|
|
|
উত্তর কলকাতা: পাইকপাড়া, ব্যারাকপুর
|
বিটি রোড |
জটের সরণি |
কাজল গুপ্ত |
হাতঘড়িতে ঘন ঘন সময় দেখছেন রবিন রায়। এক ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ নম্বর সেক্টরে পৌঁছতে হবে। কিন্তু গাড়ি এক চুলও এগোচ্ছে না। ডানলপ থেকে সিঁথির মোড় পার করতেই প্রায় ৪০ মিনিট সময় লেগেছে। কাঁটাকল স্টপের পরে বাস দাঁড়িয়ে গিয়েছে। বিরক্ত হয়ে বললেন, “এখানে নেমে অন্য কোনও ভাবে পাঁচ নম্বর সেক্টরে যাওয়ার উপায় নেই। রোজই যানজট হয়। অথচ প্রশাসনের কোনও হুঁশ নেই।”
কেবল রবিন রায়ই নন, বিটি রোডের অধিকাংশ অফিসযাত্রীর একই অভিযোগ। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শুধু অফিস টাইমেই নয়, বিটি রোডে যানজট লেগেই থাকে। তাঁদের অভিযোগ, একাধিক কারণে যানজট হচ্ছে। এক দিকে, বিটি রোডে কলকাতা পুরসভার জল সরবরাহ প্রকল্পের কাজ চলছে। এর জন্য বেশ কয়েকটি জায়গা ঘিরে রাখা হয়েছে। অন্য দিকে, রাস্তার ধারে ‘বেআইনি’ পার্কিং ছাড়াও অটোরিকশা ও ট্যাক্সির স্ট্যান্ড রয়েছে। অধিকাংশ সময়ে ট্রাফিককর্মীর দেখা মেলে না। |
|
বিটি রোডের এক দিক কলকাতা পুলিশের ও অন্য দিক ব্যারাকপুর কমিশনারেটের অন্তর্গত। অভিযোগ উঠেছে, প্রতিশ্রুতিই সার, যান চলাচল ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না। ফলে ডানলপ মোড়, অনন্যা বাসস্টপ থেকে সিঁথির মোড়, কাঁটাকল থেকে চিড়িয়া মোড় হয়ে পাইকপাড়া পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অংশে রোজ যানজটের জেরে অসংখ্য যাত্রীর ভোগান্তি হচ্ছে।
বরাহনগরের বাসিন্দা অনিন্দ্য বসুর অভিযোগ, “আগে দেখতাম পরীক্ষার সময়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হত। এ বার তা-ও চোখে পড়ছে না।” সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিটি রোডে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে। ডানলপ থেকে সিঁথির মোড় পর্যন্ত ২ কিলোমিটার অংশেই আটটি বাসস্টপ। এ ছাড়া হাত দেখালেই গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে বলেও অভিযোগ। এই অংশে রাস্তা পারাপারের জন্য বেশ কয়েকটি ‘কাট আউট’ও রয়েছে। অভিযোগ, সব সময় ট্রাফিক পুলিশ থাকে না। ফলে কাট আউট দিয়েও গাড়ি যাতায়াত করে। ফলে গাড়ির চাপ বাড়লেই যানজট শুরু হয়ে যায়। ঘটে দুর্ঘটনাও। |
|
কলকাতার ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “একটি সরকারি প্রকল্পের জেরে বিটি রোডে কয়েকটি জায়গা ঘিরে কাজ চলছে। ফলে রাস্তার বেশ কিছু জায়গা সঙ্কীর্ণ হয়ে গিয়েছে। ফলে গাড়ির চাপ বাড়লে যানজট হচ্ছে। সমস্যা সম্পর্কে আমরা ওয়াকিবহাল।”
কলকাতা পুরসভার ১ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তৃণমূলের তরুণ সাহা বলেন, “জল সরবরাহ প্রকল্পের কাজ চলছে। তবে বিটি রোডের সব জায়গায় প্রভাব পড়ার কথা নয়। কাজ দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। কাজ শেষ হলে সমস্যা কেটে যাবে।”
ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “সিঁথি মোড় থেকে ব্যারাকপুর পর্যন্ত ট্রাফিকের গতি অনেক মসৃণ হয়েছে। তবে এত দিন লোকবলের অভাবে বেআইনি স্ট্যান্ড বা পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে সে ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছিল না। এখন অফিসার পর্যায়ে অনেক লোকবল বেড়েছে। এ বার সেই অভিযানও শুরু হবে। আশা করা যায়, আগামী মাস দু’য়েকের মধ্যে বিটি রোডে ট্রাফিকের গতি আরও বাড়বে।”
|
ছবি: দেবস্মিতা চক্রবর্তী |
|
|
|
|
|