|
|
|
|
|
|
উত্তর কলকাতা
|
পার্কিং |
নিয়ম ভাঙার খেলা |
কৌশিক ঘোষ |
খাতায়-কলমে বেশির ভাগ জায়গাই ‘নো পার্কিং জোন’। অথচ রাস্তার দু’ধার দখল করে সার দিয়ে লরি, ম্যাটাডর এবং অন্যান্য গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকছে। অভিযোগ উঠেছে, এর ফলে ফুটপাথ দিয়ে যাতায়াত করাও কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এই ছবি চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের উপরে মহাজাতি সদনের সামনে, মদনমোহন বর্মণ স্ট্রিটে, জ্যাকেরিয়া স্ট্রিটে, রবীন্দ্র সরণিতে বালমুকুন্দ মক্কর রোডে, রামলোচন মল্লিক স্ট্রিট-সহ জোড়াসাঁকো অঞ্চলে প্রায়ই দেখা যায়।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (পার্কিং) রাজীব দেব বলেন, “চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের কলুটোলা থেকে বিডন স্ট্রিট পর্যন্ত ‘নো পার্কিং জোন’-এ গাড়ি রাখার অভিযোগ এসেছে। এমনকী, রবীন্দ্র সরণির অনেক জায়গায় একই অবস্থা। পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানানো হয়েছে। কয়েক দিন আগেই জোড়াসাঁকো এলাকার বাসিন্দারা আমাকে বেআইনি পার্কিংয়ের ব্যাপারে তাঁদের সমস্যার কথা জানিয়েছেন।”
|
|
|
রবীন্দ্র সরণি |
তারাচাঁদ দত্ত স্ট্রিট |
|
মধ্য কলকাতার মদনমোহন বর্মণ স্ট্রিট, বালমুকুন্দ মক্কর রোড, রামলোচন মল্লিক স্ট্রিট এবং রবীন্দ্র সরণির একাংশে জুড়ে ফলপট্টির লরিগুলি রাস্তার দু’ধারেই রাখা থাকে। স্থানীয় ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিএমের রীতা চৌধুরী বলেন, “আমার ওয়ার্ডের অনেকটাই ফলফট্টির মধ্যে পড়ে। এ ছাড়াও, এই ধরনের পার্কিংয়ের জেরে আশপাশের এলাকাতেও সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এটি বড় সমস্যা। রাস্তা সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়ছে। পারাপারে অসুবিধা হচ্ছে। যানজটও হচ্ছে। পুরসভা এবং পুলিশকে জানিয়েও কাজ হয়নি।”
স্থানীয় বাসিন্দা নির্বাণ রায়ের অভিযোগ, “বাড়ির সামনে এমন ভাবে লরি পার্ক করা থাকে যে বের হওয়া দুষ্কর। পুলিশ অভিযান চালানোর পরে কিছু দিন ঠিকঠাক থাকে। তার পরে যে-কে-সেই।” স্থানীয় বিধায়ক তৃণমূলের স্মিতা বক্সীর কথায়: “পার্কিং সমস্যা আছে। পুলিশের সঙ্গে কথাও হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। এর পরেই পুরসভা, পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট দফতরকে নিয়ে আলোচনায় বসব।”
ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, মদনমোহন বর্মণ স্ট্রিট, বালমুকুন্দ মক্কর স্ট্রিট, জ্যাকেরিয়া স্ট্রিট, তারাচাঁদ দত্ত স্ট্রিট এবং রামলোচন মল্লিক স্ট্রিটের পার্কিংয়ের জায়গা মাত্র কয়েকটি। কিন্তু এ সব জায়গায় সমস্ত রাস্তা জুড়েই সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে।
|
|
|
চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ |
জ্যাকেরিয়া স্ট্রিট |
|
অন্য দিকে, রবীন্দ্র কাননের সামনে রবীন্দ্র সরণির একাংশ এবং রতু সরকার লেনের পুরোটাই ‘নো পার্কিং’ অঞ্চল ঘোষণা করা সত্ত্বেও সেখানে অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘ফি পার্কিং’ জোনেও এমন ভাবে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে যে যাতায়াতে অসুবিধা হয়। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশকে জানানো হলেও ব্যবস্থা নেওয়া
হয় না।
কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শহরের ‘নো পার্কিং’ জোনে পার্কিং বন্ধ করতে যে পরিকাঠামো প্রয়োজন তা নেই। গাড়ি ধরে মামলা করলেও রাস্তা থেকে দ্রুত সরানোর ব্যাপারে অসুবিধা থাকে। উপরন্তু নজরদারিরও সমস্যা আছে। তা সত্ত্বেও এই অঞ্চলে মাঝেমধ্যেই অভিযান চালিয়ে বেআইনি পার্কিংয়ের গাড়ি আটক করা হয়েছে। সম্প্রতি জোড়াসাঁকো এলাকার রতু সরকার লেন এবং সুদাম শীল স্ট্রিটে সমীক্ষা করা হয়। এর পরে রতু সরকার লেনে গাড়ি পার্কিং বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, সুদাম শীল লেনে রাস্তার এক দিকে গাড়ি পার্কিং থাকবে।” |
ট্রাফিক পুলিশের হিসেব (২০১১) |
বেআইনি পার্কিংয়ের কেস |
• চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ- ৩৭৫
• মদনমোহন বর্মণ স্ট্রিট- ৩২৭ |
• রামলোচন মল্লিক স্ট্রিট- ১০৭৮
• বালমুকুন্দ মক্কর স্ট্রিট- ১৬১ |
|
অভিযোগ, শহরে রাত ১০টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত ট্রাক চলাচলের ক্ষেত্রে অনুমতি থাকলেও অনেক সময়েই ফলপট্টি অঞ্চলে নির্দিষ্ট সময়ের বাইরেও ট্রাক চলাচল করতে দেখা যায়। দিলীপবাবু বলেন, “শহরের বেশির ভাগ জায়গায় নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে ট্রাক চলাচল প্রায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু দু’-একটি ট্রাক যে ঢুকে পড়ে না তা নয়। ধরতে পারলে যথাযথ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।” |
ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য |
|
|
|
|
|