পূর্ব কলকাতা
চকচকে শহরে
জঞ্জালের জ্বালা
মেগাসিটি নিউটাউনে ঢোকার মুখেই যেন স্বাগত জানাচ্ছে জঞ্জালের স্তূপ।
কোথাও নির্মাণ-সামগ্রীর ডাঁই তো কোথাও আবর্জনার স্তূপ। এয়ারপোর্ট থেকে নিউটাউনে ঢুকতে গেলে চিনার পার্ক মোড়ের দু’দিকে এমন দৃশ্যই চোখে পড়বে। জনসংখ্যা যত বাড়ছে ততই যেন জঞ্জাল বেড়ে চলেছে। পায়ে হাঁটার পথ, এমনকী সার্ভিস রোড-দু’টির দু’পাশে অনেক জায়গাতেই জঞ্জালের স্তূপ।
চিনার পার্ক এলাকা এক দিকে নিউটাউনের প্রবেশপথ, অন্য দিকে রাজারহাট রোড ধরে রাজারহাট যেতে হলে এই এলাকা ধরেই যেতে হয়। ফলে গুরুত্ব বাড়ছে এলাকাটির। তৈরি হয়েছে আবাসন, অফিস, রেস্তোরাঁও। ফলে বছর কয়েক আগেও রাত হলেই যে এলাকা খাঁখাঁ করত সেই এলাকাই এখন রাত এগারোটাতেও আলোয় ঝলমল করছে।
কিন্তু অভিযোগ, আলোর নীচেই অন্ধকার। স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বদীপ মজুমদার বলেন, “লোকসংখ্যা যত বাড়ছে তত জঞ্জাল বাড়ছে। চিনার পার্ক থেকে নিউটাউন যাওয়ার পথে রাস্তার ডান দিকে বড়সড় জঞ্জালের স্তূপ। জঞ্জাল অনেক সময় উপচে পড়ে সার্ভিস রোডেও।” এলাকার এক পেট্রোল পাম্পের কর্মী বলেন, “অনেক সময় দুর্গন্ধে কাজ করাই মুশকিল হয়ে যায়। কেউ বা কারা কোনও কোনও রাতে জঞ্জালে আগুন ধরিয়ে দেয়। পাম্পের পাশে এ ভাবে আগুন জ্বালানোও খুবই বিপজ্জনক। পুরসভাকে বেশ কয়েক বার জানিয়েও ফল হয়নি।” অথচ, বছর কয়েক আগেও দু’টি সার্ভিস রোডই ছিল যথেষ্ট ঝকঝকে। নিউটাউনের অ্যাকশন এরিয়া-২-র এক আবাসনের বাসিন্দা দেবরাজ ঘোষ বলেন, “মূল নিউটাউন রোডের মতোই ওই রাস্তা ছিল ঝকঝকে। এখন সেখানে হাঁটাই কষ্টের। আবর্জনা, নির্মাণ-সামগ্রী পড়ে থাকে।” ওই রাস্তায় সকালে হাঁটতে বেরোন নিবেদিতা মণ্ডল। বললেন, “সার্ভিস রোড ধরে এখন মর্নিংওয়াক করাটাই কঠিন। জনসংখ্যা বেড়ে চলেছে। ভবিষ্যতে চিনার পার্ক-সংলগ্ন নিউটাউন এলাকার কী হাল হবে ভাবতেই পারছি না।”
রাজারহাট পুরসভার চেয়ারম্যান ইন-কাউন্সিল (পিডব্লিউডি) দেবাশিস মণ্ডল বলেন, “দিনে জঞ্জাল পরিষ্কার করলেও রাতের অন্ধকারে কে বা কারা জঞ্জাল ফেলে চলে যাচ্ছে। আমরা তবু সচেতনতা বাড়ানোর নানা চেষ্টা করছি। হোর্ডিং লাগাচ্ছি। এমনকী, নজরদারিও করা হবে। রাস্তার ধারে নির্মাণ-সামগ্রী ফেলে রাখার বিষয়টি পুলিশকেও জানিয়েছি।”
রাজারহাট নিউটাউনের চিনার পার্ক এলাকা এখন বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের অধীন। তার কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, “রাজারহাট নিউটাউন এলাকা কমিশনারেট হওয়ার পরে পুলিশের জিপের টহলদারি বেড়েছে। নির্মাণ-সামগ্রী ফেলার বিষয়টিতে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।”

ছবি: সুদীপ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.