দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
রাস্তা সম্প্রসারণ
গতিময় উদ্যোগ
বশেষে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু করল পূর্ত দফতর। টালিগঞ্জ মহাবীরতলা থেকে ঠাকুরপুকুর মোড় পর্যন্ত মহাত্মা গাঁধী রোডটি প্রায় সাত মিটার চওড়া করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তা সম্প্রসারণ সম্পূর্ণ করতে পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
দক্ষিণ শহরতলির টালিগঞ্জ মহাবীরতলা থেকে ঠাকুরপুকুর মোড় পর্যন্ত যে রাস্তাটি ডায়মন্ড হারবার রোডে গিয়ে মিশেছে, সেই রাস্তার সম্প্রসারণ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। ওই রাস্তাটি কলকাতা পুরসভার দু’টি ওয়ার্ড ছাড়াও গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মধ্য দিয়েও গিয়েছে। রাস্তাটি সরু হওয়ায় সব সময় যানজট লেগেই থাকে। বিশেষ করে, টালিগঞ্জ করুণাময়ী মোড় থেকে কেওড়াপুকুর বাজার পর্যন্ত রাস্তার দু’ধার বেদখল হয়ে থাকায় পথচলতি মানুষকে গাড়ির রাস্তা দিয়েই হাঁটাচলা করতে হয় বলে অভিযোগ।
বহু বছর ধরে রাস্তার দু’ধারের দোকানগুলির পুনর্বাসন নিয়ে বেশ কিছু সমস্যা ছিল। বিশেষ করে কলকাতা পুরসভার ১১৫ এবং ১২২ নম্বর ওয়ার্ডে দখলদারির সংখ্যা বেশি ছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু সম্প্রতি এই দু’টি ওয়ার্ড বিশেষ ব্যবস্থা নিতে শুরু করায় সমস্যার সমাধান হতে চলেছে।
টালিগঞ্জ করুণাময়ী ব্রিজ শেষ হওয়ার পর থেকেই মহাত্মা গাঁধী রোডের শুরু। রাস্তাটি শেষ হয়েছে ঠাকুরপুকুর মোড়, অর্থাৎ, ডায়মন্ড হারবার রোডের মুখে। গত কয়েক বছর ধরে এই রাস্তাটিই ডায়মন্ড হারবার, জোকা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কিছু জায়গায় পৌঁছনোর শর্টকাট হয়ে যাওয়ায় গাড়ির চাপ বহু গুণে বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে এলাকার জনসংখ্যাও। কিন্তু রাস্তা সেই সরুই রয়ে গিয়েছে। ফলে অফিসের সময় প্রবল যানজটে মানুষকে নাকাল হতে হয়। পথচলতি মানুষকে প্রাণ হাতে করে রাস্তার উপর দিয়েই যাতায়াত করতে হয় বলে অভিযোগ।

গত কয়েক বছর ধরে রাস্তা সম্প্রসারণ হওয়ার কথা থাকলেও রাস্তার দু’ধারে প্রচুর ঘরবাড়ি তৈরি হওয়ায় সম্প্রসারণে অসুবিধা হচ্ছিল। জানা গিয়েছে, ২০০৪ থেকে রাস্তাটি চওড়া হওয়ার কথা ছিল। সেই সময় জমি অধিগ্রহণ না করায় পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। তার উপর অনেক জায়গাতেই রাস্তার উপর গজিয়ে উঠেছিল দোকানপাট। অনেক দোকানই বহু পুরনো হওয়ায় পুনর্বাসন ছাড়া তাদের ওঠানো সম্ভব হচ্ছিল না।
১১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রত্না শূর বলেন, “আমার ওয়ার্ডে যাঁরা রাস্তায় দোকান খুলেছিলেন, তাঁরা স্বেচ্ছায় জায়গা ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছেন। তবে যেহেতু অনেক বছর ধরে তাঁরা বসে আছেন, আমরা নিজেরাই ওঁদের একধারে কিছুটা জায়গা দিচ্ছি কিয়স্ক করার জন্য। এতে রাস্তার অনেকটাই দখলমুক্ত হবে। ওঁরাও কিয়স্ক করে নিজেদের কাজ করতে পারবেন।” তাঁর কথায়: “নির্দিষ্ট জায়গায় কিয়স্ক করলে দেখতেও ভাল লাগবে।”
পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (হাইওয়ে ডিভিশন) দেবাশিস ঘোষ বলেন, “২০০৪ থেকেই সম্প্রসারণের কথা হচ্ছিল। নানা কারণে কাজ শুরু হয়নি। বিশেষ করে করুণাময়ী মোড় থেকে কেওড়াপুকুর পর্যন্ত কাজটি করতে অসুবিধা হচ্ছিল। টাকা মঞ্জুর হওয়ায় রাতে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেছি। অন্য সমস্যাগুলি স্থানীয় কাউন্সিলরদের সহায়তায় মিটে যাওয়ায় আমাদের কাজটা সহজ হয়ে গিয়েছে।”

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.