২০১১ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের ঠিক এক বছর পরে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান। সেই ম্যাচে পরিস্থিতি এমন ছিল যে, হারলেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যেতে হবে। এ বারের এশিয়া কাপের ম্যাচটাও নকআউট। তবে শুধু ভারতের জন্য। পাকিস্তান দুটো ম্যাচ জিতে ইতিমধ্যেই ফাইনালে চলে গিয়েছে। বাংলাদেশের কাছে অভাবনীয় হারের পরে ধোনিরা এমন একটা জায়গায় যেখানে রবিবার জিতলেও নানা রকম অঙ্ক চলে আসবে। পরিস্থিতি বেশ গোলমেলে হয়ে দাঁড়াবে। যদি পাকিস্তানের কাছে ভারত হারে আর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শ্রীলঙ্কা জেতে, তা হলে দ্বিতীয় দলের ফাইনালে ওঠার লড়াইটা জমে যাবে।
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বাকি সবের থেকে আলাদা। এটা এমন ম্যাচ যা রাতারাতি কাউকে মহানায়ক বানিয়ে দিতে পারে। ক্রিকেটবিশ্বে এটাই সবচেয়ে বড় মাপের লড়াই। হ্যাঁ, অ্যাসেজের থেকেও বড়। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আগে দুটো দেশের সামাজিক এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক নিয়েও কথা ওঠে। প্রত্যেক ক্রিকেটারের মানসিক শক্তির পরীক্ষা হয়। কেউ যদি নিজের সেরা ফর্মেও থাকে, এই ম্যাচে ভাল না খেলতে পারলে এক মুহূর্তে সমালোচনা শুরু হয়ে যায়। হালফিলে দুটো দেশ খুব বেশি ম্যাচ খেলেনি বলে এই ম্যাচ ঘিরে উন্মাদনা আরও বেড়ে গিয়েছে। দুটো দলের মনোভাবই খুব সহজ তুমি যে কোনও দেশের কাছে হারতে পারো। কিন্তু একে অন্যের কাছে নয়।
বিশ্বকাপের ওই ম্যাচটার পরে দুটো দলেই অনেক বদল হয়েছে। ভারতীয় দলে সহবাগ, যুবরাজ, হরভজন আর জাহির নেই। মহারথীদের যুদ্ধে এ বার কোহলি, রায়না, জাডেজা, অশ্বিনদের লড়াই করার সময়। সচিন, গম্ভীর, ধোনির মতো সিনিয়রদের কাছ থেকে ওরা সাহায্য পাবে। এদের মধ্যে সচিনকে দেখেছি, পাকিস্তান ম্যাচে সব সময় অন্য রকম হয়ে যায়। একশোতম সেঞ্চুরির প্রত্যাশার চাপ ঝেড়ে ফেলে সচিন এখন অনেক হালকা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওর খিদে নিশ্চয়ই বেড়ে যাবে। ভারতের সমস্যা বলতে বোলিং। জাহির না থাকায় বোলারদের নেতৃত্ব দেওয়ার কেউ নেই। উপমহাদেশের উইকেটে অশ্বিন, জাডেজাকেও বিষাক্ত দেখাচ্ছে না।
ফাইনালে উঠে যাওয়ায় পাকিস্তান খোলামেলা ভাবে খেলতে পারবে। ওদের দলে উমর আকমল, আইজাজ চিমা, হামাদ আজম, সইদ আজমলের মতো তরুণরা রয়েছে যারা এই ম্যাচে প্রভাব ফেলতে চাইবে। তার উপর দলে থাকবে মিসবা, ইউনিস খান, আফ্রিদি আর উমর গুল-দের মতো সিনিয়র। পাক বোলিং যথেষ্ট শক্তিশালী। কিন্তু ওদের ব্যাটিংটা বেশ দুর্বল।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে কে জিতবে বলা অসম্ভব। নির্দিষ্ট ওই দিনে যে-দল মাথা ঠান্ডা রাখতে পারবে, যারা নিজেদের খেলায় বাড়তি উৎসাহ আনতে পারবে, তারাই এগিয়ে যাবে। |