|
|
|
|
|
|
স্টুডিয়োর বাইরে সমিধ মুখোপাধ্যায়-এর মুখোমুখি পথিক পণ্ডিত |
‘বাংলা ভাষা বাঁচাও’ কমিটি এত আন্দোলন করা সত্ত্বেও আপনি আদ্যেপান্ত একটা বাংলা ছবিতে (‘মাচো মস্তানা’) আস্ত একটা হিন্দি গান (‘রুকেগা বাদল...’) ঢুকিয়ে ছেড়েছেন? কেউ মানহানির মামলা ঠোকেনি তো?
সমিধ: (হা হা হা হাসি) আমি যেমন রিলিজিয়নে বিশ্বাস করি না, তেমনই গানের ল্যাঙ্গুয়েজেও।
কিন্তু এই ছবির দর্শকদের কাছে হিন্দি তো বিজাতীয় ভাষা?
সমিধ: চলুন আমার সঙ্গে ২০ তারিখে নন্দীগ্রামে। দেখিয়ে দেব বোঝে কি বোঝে না? ‘কোলাভেরি ডি’ও তো তামিল ভাষায় গাওয়া, এখানকার ক’টা লোক তামিল বোঝে বলুন তো। বাঙালি কি ‘কোলাভেরি ডি’ শুনছে না?
আপনার ওই মুণ্ডিত মস্তক, এবং পিছনের দিকে টিকির মতো একগোছা চুল এই স্টাইলটার নাম কী?
সমিধ: (মাথায় হাত বুলিয়ে হা হা হাসি) জানি না। এটা কিন্তু অনেকেই টাক বলে ভুল করে বসেন। টাক নয়। নিয়মিত সেলুনে গিয়ে কামাতে হয়। আমার লম্বা কালারফুল চুল ছিল। আট বছর হল এই নামগোত্রহীন স্টাইলটা করেছি।
আপনার গান গাওয়ার শুরু কবে থেকে? শিখেছেন কারও কাছে?
সমিধ: মাধ্যমিক পরীক্ষার পর থেকে রেজাল্ট বেরনো অবধি বেশ কিছু দিন ছুটি থাকে। ওই সময় হঠাৎ করে এক দিন ঝোঁক চাপল যে গিটার বাজাব। বাবাকে বললাম। বাবা গড়িয়াহাট থেকে তিনশো টাকা দিয়ে একটা গিটার কিনে দিলেন। কারও কাছে শিখিনি। আমি মনে করি, নিজেকে খুঁজে বের করাটা জরুরি।
গানের জগতে এলেন কী ভাবে?
সমিধ: মামার বাড়িতে গানবাজনার একটা চল ছিল। দাদু অর্গান বাজাতেন, আমার সাত জন মামা প্রত্যেকেই তবলা বাজাতেন। এক মামা আবার রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সঙ্গত করতেন। ওখানে গিয়ে বোলটোলগুলো একটুআধটু শুনতাম। যা-ই হোক, আমিও বোধ হয় মামাবাড়ির গুণটা কিছুটা পেয়েছি। তবে বাবা-মা রাবীন্দ্রিক ঘরানার লোক। রবীন্দ্রনাথের গান, বর্ষামঙ্গল শুনতেন। ওই পর্যন্তই। লোডশেডিং হলে দেখতাম বাবা-মাকে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে। |
|
যে লিরিকসে কাজ করছেন, বা যে সুর করছেন, তাতে সন্তুষ্ট? তা মানুষকে আকর্ষণ করছে বলে মনে করেন?
সমিধ: ডেফিনিটলি। না হলে ‘খোকাবাবু যায় লাল জুতো পায়...’ বা ‘প্যায়ারেলাল’, বা ‘কোকাকোলা...’ গানগুলো শুনে লক্ষাধিক লোক নেচে ওঠে কেন?
‘পরশপাথর’ ছাড়লেন কেন?
সমিধ: আমার মনে হয়েছিল, ফাইভ স্টার হোটেলে বসে যারা স্কচ-হুইস্কি খায় তাদের নিয়ে তো আর আমার দেশ নয়। মনে হত, আরও কিছু লোক আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
জন্ম কোথায়? বাড়িতে কে কে আছেন? স্কুলিং?
সমিধ: জন্মেছি কানপুরে। বাবার ট্রান্সফারেবল চাকরি ছিল। জন্মের পরে পরেই বাবা আমাদের নিয়ে কলকাতায় চলে আসেন। এখানে আমি একান্নবর্তী পরিবারে বড় হয়েছি। জ্যাঠা-জেঠি-কাকা-কাকি ভাই-বোন সবার সঙ্গে। আর পাঁচটা সাধারণ ছেলেমেয়ের যেমন কাটে আমারও শৈশবটা ঠিক ওই রকমই কেটেছে। পরিবার বলতে আমার বাবা-মা, স্ত্রী ও আমার দুই ছেলে। পড়াশোনা বউবাজারের সেন্ট জোসেফ কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক, তার পর হাজরা ল’ কলেজ থেকে আইনে স্নাতক।
প্রথম প্রেমে কবে পড়েছিলেন?
সমিধ: টিউশনি পড়তে গিয়ে প্রথম একটি মেয়ের প্রেমে পড়েছিলাম। প্রেম আমার জীবনে বারে বারে এসেছে। আবার ফিরেও গিয়েছে। আমার প্রেমের বিয়ে। প্রথম প্রেমিকা কিন্তু আমার স্ত্রী নয়।
আপনি নাকি অল্প বয়সে বিয়েটা সেরে ফেলেছিলেন?
সমিধ: যখন আমার বন্ধুরা স্টেডি গার্লফ্রেন্ড জোটাতে পারেনি, তখন আমি ২১ বছর বয়সে বিয়ে করে ফেলি। আর যখন আমাদের প্রথম সন্তান হল, তখন বন্ধুরা বিয়েই করেনি। আমার সবই একটু অন্য রকম ব্যাপার। (হাসি)
মঞ্চ না স্টুডিয়ো, আপনি কোনটা বেশি এনজয় করেন?
সমিধ: এখনও সমান ভাবে মঞ্চ।
কেন?
সমিধ: রিয়েল, লাইভ অডিয়েন্সের অ্যাকশনটা আর কোথায় পাব। আর এটা না পেলে আবার আমার গান গাইতে, সুর করতে ইচ্ছে করে না।
আপনার ফেভারিট মিউজিক ডিরেক্টর?
সমিধ: রাহুল দেব বর্মন। এখনকার ফেভারিট যদি বলেন, বলব আমি (হা হা হা হাসি)
সঙ্গীত পরিচালনার ক্ষেত্রে ওঁকে অনুসরণ করেন?
সমিধ: না। কখনও করিনি, করবও না। তিনি তাঁর মতো করে কাজ করেছেন। কেন অনুসরণ করব বলুন তো?
কেমন মহিলাদের পছন্দ?
সমিধ: লেডি লাইক, নারীত্ব ভাব যার মধ্যে আছে। যে নারীর মাতৃত্ব ভাব আছে। যে খুব কম খায়, কম কথা বলে। যারা বেশি খায়, বেশি কথা বলে তাদের ম্যানলি মনে হয়।
মহিলা ফ্যানদের সংখ্যা কি হাজার পাঁচেক ছাড়িয়েছে?
সমিধ: কোনও দিন কাউন্ট করে দেখিনি। তবে বেশির ভাগই তো মহিলা ফ্যান।
এই নিয়ে বাড়িতে বউয়ের সঙ্গে অশান্তি হয় না?
সমিধ: হয় না আবার। বউকে বলি, আরে, ওরা আমার গানকে ভালবাসে, আমাকে নয়। (হাসি) |
|
|
মুখ খোলার, গল্প করার, গলা ফাটানোর নতুন ঠিকানা চারিদিক থেকে কানে আসা
নানা কথা নিয়ে আমরা শুরু করে দিলাম। এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ভার আপনাদের |
• যাবতীয় ব্যাপারে সরকার থেকে বিরোধী পক্ষ কেবল আমজনতা আমজনতা করছেন। ফলে কাঁঠালজনতা রেগে কাঁই আপনারাই আমাদের এঁচোড়ে পাকিয়েছেন, এখন আমরা শুধু ভুতি?
ভবভূতি। বালিয়া
• জনগণ চাইছে রেলের ভাড়া বাড়ুক, কিন্তু রাজনৈতিক নেতারা চাইছেন না। এর থেকেই বোঝা যায়, দারিদ্রসীমার নীচে কারা আসলে বাস করেন!
অনিন্দ্য। শান্তিপুর
• রেলের আসনের দাম বাড়াতে গিয়ে নিজের আসন হারিয়ে দাম মেটালেন দীনেশ ত্রিবেদী!
রহস্যময়। চন্দননগর
• রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রীর সৌজন্যে কলকাতার ট্যাক্সিতে একটি বিশেষ ধরনের মিটারযন্ত্র বসতে চলেছে, যাতে যাত্রীর ওঠা থেকে নামা ইত্যাদি অনেক তথ্য থাকবে। খুব ভাল হবে। তবে এটা দেখে কোনও বিদেশি আরোহী গদগদ হয়ে বলতেই পারেন, ‘থ্যাঙ্ক ইউ মিস্টার মদন মিটার’!
বাপী ঘোষাল। ব্যান্ডেল
• রাহুল দ্রাবিড় এবং সুচিত্রা মাহাতো একই দিনে অবসর নিলেন। রাহুল ছিলেন ব্যাটে পারদর্শী, তো সুচিত্রা কমব্যাটে!
শোভনলাল বকসী। লেক গার্ডেন্স
• গাড়ি তৈরির কারখানা করেও আন্দোলনের জেরে এ রাজ্যকে ‘টা টা’ করে চলে যেতে হয়েছিল টাটাকে। রাজ্যে আসতে ইচ্ছুক গাড়ি নির্মাণ সংস্থা ফোকস্ভাগেনর আসার পর ‘ভাগেন এ বার’ বলা হবে না তো?
দেবব্রত ঘোষ। সল্ট লেক
• পৃথিবীর ব্যাপারটা ঠিক জানি না। তবে পশ্চিমবঙ্গ যে ২০১১-র মে মাসেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, সেটা দিব্যি টের পাওয়া যাচ্ছে!
বোধিসত্ত্ব। বড়িশা
• সে দিন কালীঘাটে গিয়েছিলাম। একটা বিউটি পার্লার দেখলাম। তার নাম ‘সাজানো’!
হার্মাদ।
• মেট্রো স্টেশনের ‘Exact Fare’ বা ‘ঠিক ভাড়া’ চিহ্নিত কাউন্টারগুলিতে একটি বিজ্ঞপ্তি বিশেষ ভাবে লক্ষণীয়: কাউন্টার ছাড়িবার পূর্বে ফেরৎ অর্থ দেখিয়া লইবেন!
মুক্তি দাশ। সোনারপুর
• সুচিত্রা মাহাতো সামনে এসে কী লাভ, আমরা সেনকে চাই!
প্রদীপ পাল। নিউটাউন |
|
|
প্রবোধ সিংহ |
২০০১ সালে সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, কিছু বিশেষ শ্রেণির আবগারি লাইসেন্স লটারির মাধ্যমে বিলি করা হবে। আমি তখন কলকাতার কালেক্টর অব এক্সাইজ। সেই উপলক্ষে গিরীশমঞ্চে আয়োজিত একটা সরকারি অনুষ্ঠানে শ্রদ্ধেয় শৈলেন মান্না, প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অরুণ ঘোষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সে দিন বোধ হয় অগস্ট মাসের একটা রবিবার। অনুষ্ঠান শুরুর আগে আমি শৈলেন মান্নার সঙ্গে কথা শুরু করলাম। বললাম, শৈলেনদা, আমি ১৯৫৪ সালে থেকে আপনার খেলা দেখেছি। আপনার সেই বিশ্ববিখ্যাত ফ্রি-কিক, যেটা হয় গোল হত, নয় ক্রসবারে লেগে ফিরত! |
|
এত নিখুঁত ক্যালকুলেশন কী ভাবে করতেন? শৈলেনদা কপালে হাত ছুঁইয়ে বললেন, ‘সবই ঈশ্বরের কৃপা ভাই। আমি বিশ্বাস করি কোনও শিল্পই ঐশ্বরিক কৃপা ছাড়া পারফেকশনে পৌঁছয় না।’ আমি বললাম, আপনি বোধ হয় ইস্টবেঙ্গলের আমেদ খানকেই সবচেয়ে বেশি সমীহ করতেন। ভারতের সর্বকালের সেরা ফুটবলার সেই অমায়িক ভদ্র হাসিটা হাসলেন ‘না, ভাই, আমেদের ব্যাপারটা আমি বুঝতাম। ভয় পেতাম আপ্পা রাওকে। ও রকম ইন্টেলিজেন্ট ফুটবলার কলকাতার মাঠে আর আসেনি। আমার বাঁ-পাটা একটু উইক ছিল। ও ব্যাটা সামনে এসে ডান পা বাঁ পা করে মাঝে মাঝে মুখ ভেংচে আমাকে টিজ করত।’
আমি বললাম, আর একটা ডেলিকেট প্রশ্ন করব শৈলেনদা। কে বড় ড্রিবলার? আমেদ না চুনী? আপনার নিজের মত কী?
শৈলেনদা বললেন, ‘দু’জনেই নিজের নিজের স্টাইলে বড় ড্রিবলার। তবে খালি পায়ের আমেদের একটু অ্যাডভান্টেজ ছিল পায়ের চেটো দিয়ে বল টানবার, যেটা বুটে হয় না।
খ্যাতি তাঁর ভদ্রতাকে কখনও মলিন করেনি। আজ তাঁকে প্রণাম জানাই। |
|
|
ভাড়া বাড়লেই করো প্রতি বার হাল্লা।
এই বার চুপ, মাপিছ কি বসি পাল্লা?
দীনেশে-মুকুলে ভাসাবে দু’কূলে তৃণ
এই কথা ভাবি কাটাইছ রাত, দিনও।
গত ভোটে হয়ে ঢিট, কেমনে ফিরাব সিট
রাজনীতি তব শুধু ক্ষমতার গেম,
ঘুঁটে মালা তাই গলে নাও সিপিএম |
|
|
|
রেল বাজেটের রাতে মনমোহন সিংহের গান:
দিনশেষের রাঙা মুকুল জাগল চিতে...!
মনীশ গঙ্গোপাধ্যায়, বালিগঞ্জ প্লেস |
|
|
|
ক্ষমা চাইছি |
|
বাবার দরজির দোকান। দোকানের সামনে অনেকে সাইকেল রেখে বাজার করতে যেতেন। বাবা আমাদের বাজারটা তাঁদেরই কাউকে দিয়ে আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিতেন। মাকে কোনও কথা বলার থাকলে বাবা একটা কাগজে তা লিখে বাজারের ব্যাগে দিয়ে দিতেন। এক দিন এক কাকু আমার হাতে বাজারের ব্যাগটা দিয়ে গেলেন। তখন বাড়িতে কেউ ছিল না। দেখলাম, ব্যাগে দুটো বড় বড় আম। আমি হুবহু বাবার হাতের লেখা নকল করে একটা কাগজে লিখলাম, একটা আম ছোট ছেলেকে দিয়ো, বাকিটা তোমরা সবাই মিলে খেয়ো। মা সেই কাগজ পড়ে আমাকে মুড়ি আর একটা আম দিয়ে, বাকি আমটা দাদা আর দুই দিদিকে ভাগ করে দিলেন। সে-দিন খুব মজা পেলেও আজও ঘটনাটা মনে পড়লে ব্যথা পাই। বাবা-মা কেউই আজ বেঁচে নেই, যদি পরলোক বলে কিছু থাকে, তা হলে নিশ্চয় এক দিন তাঁদের দেখা পাব। সে দিন তাঁদের পা দুটো ধরে ক্ষমা চেয়ে নেব।
প্রদ্যোত মুখোপাধ্যায়
হুগলি |
|
ই মেল-এ অথবা ডাকে, চিঠি পাঠান।
ই-মেল: chirkut.rabi@abp.in
চিঠি: চিরকুট, রবিবাসরীয়,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১
|
|
|
|
|
|
|