উচ্চ মাধ্যমিকের ইংরেজি পরীক্ষার আগের দিন এক ছাত্রের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা নিয়ে রহস্য দানা বাঁধছে। বৃহস্পতিবার বিকেল নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের চাঁচলে। পুলিশ জানায়, ওই পরীক্ষার্থীর নাম সাইনুর রহমান। বাড়ি চাঁচলের মহানন্দপুরে। মেসবাড়ি থেকে বের হয়ে না-ফেরায় স্থানীয় সিদ্ধেশ্বরী স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের ওই ছাত্রের পরিবারের লোকজন এ দিন গভীর রাতে পুলিশের দ্বারস্থ হন। যদিও শুক্রবার সকালে ছাত্রটি নিজেই মোবাইল ফোনে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানায়, সে কলকাতায় আছে। তাঁকে রাস্তা থেকে দুষ্কৃতীরা অপহরণ করেছে। এর পরেই ঘটনাটি নিয়ে রহস্য দানা বাঁধে। চাঁচলের আইসি সাগর সাহা বলেন, “ছাত্রটি সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। কলকাতা থেকে ফিরে এলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সত্যি ওকে অপহরণ করা হয়েছে নাকি ঘটনার পিছনে অন্য কোনও গল্প আছে সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাইনুরের বাবা আবদুল লতিফ দিনমজুর। দরিদ্র পরিবারের ওই ছেলে দু’বছর আগে মাধ্যমিকে স্টার নম্বর পেয়ে চমকে দেয়। এর পরে চাঁচলের প্রাথমিক শিক্ষক শেখ মতিয়ুর রহমানের বাড়ির একতলায় মেসবাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত। বৃহস্পতিবার বিকালে সেখান থেকে বেরিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত না ফেরায় বাড়ির মালিক সাইনুরের পরিবারকে খবর দেন। শুক্রবার ওই ছাত্র মোবাইল ফোনে কাকা নৌসাদ আলিকে জানায়, সে শিয়ালদহ স্টেশনে। বৃহস্পতিবার মেসবাড়ি থেকে বের হওয়ার পরে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে পূর্ত দফতরের অফিসের সামনে একটি মেসের ঠিকানা জানতে চায় কয়েকজন অপরিচিত ব্যক্তি। ঠিকানা দেখানোর সময় তাকে পেছন থেকে ধরে গাড়িতে তোলা হয়। এর পরে আর কিছু মনে নেই। নৌসাদ সাহেব বলেন, “গরিব পরিবারের ছেলে জন্য সাইনুরের উন্নতি অনেকে সহ্য করতে পারছে না। কেউ শত্রুতা করে ওই কাজ করেছে বলে সন্দেহ হচ্ছে।” মা সাইনুর বিবি বলেন, “আমাদের শত্রু নেই। কে এ ভাবে ছেলেটার একটা বছর নষ্ট করল জানি না।” প্রথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, নিখোঁজের দিন এক দোকানে আলাপচারিতার সময় একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেম এবং তা নিয়ে সমস্যার কথা নিজেই বলেছে সাইনুর। মাধ্যমিকে ভাল ফল করলেও নানা কারণে এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল প্রস্তুতি নিতে পারেনি সাইনুর। পুলিশের সন্দেহ ওই কারণে পরীক্ষা এড়াতে ছাত্রটি নিজেই পরিকল্পনা করে নিখোঁজ হয়ে থাকতে পারে। |