সদ্যোজাত কন্যাকে পাশের ঘরে রেখে হাসপাতালে বসে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছেন এক গৃহবধূ। সদ্য মা হওয়া ওই পরীক্ষার্থীর নাম টুম্পা বর্মন। কোচবিহার জেলা সদরের এমজেএন হাসপাতালে বসে তিনি পরীক্ষা দিচ্ছেন। কোচবিহারের দেওয়ানহাট হাই স্কুলের ছাত্রী টুম্পা গত সোমবার প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে কোচবিহার জেলা সদরের ওই হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। ওই দিনই তাঁর ‘সিজার’ করেন চিকিৎসকরা। ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন টুম্পা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সপ্তাহের জন্য তাঁকে ছুটি দিতে রাজি হননি চিকিৎসকরা। তার পরেই হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। বুধবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন থেকে সদ্যোজাতকে পাশের ঘরে আত্মীয়দের কাছে রেখে হাসপাতালেরই অন্য একটি ঘরে পরীক্ষা দিচ্ছেন টুম্পা। |
শুক্রবার ওই হাসপাতালে বসেই ইংরেজি পরীক্ষা দিয়েছেন ওই পরীক্ষার্থী। কোচবিহারের ডিআই (সেকেন্ডারি) মহাদেব শৈব্য বলেন, “মোয়ামারি স্কুলে ওই পরীক্ষার্থীর সিট পড়েছিল। প্রথম দিন থেকেই হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন সদ্য মা হওয়া ওই পরীক্ষার্থী। তার মনোবল সত্যিই প্রশংসনীয়।” ওই পরীক্ষার্থীর পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দেড় বছর আগে দেওয়ান হাটের বাসিন্দা ওই পরীক্ষার্থীর সঙ্গে দেখাশোনা করে বিয়ে হয় পসারিরহাটের বাসিন্দা পরিমল বর্মনের। পেশায় মুদি দোকানদার পরিমলবাবু অবশ্য বরাবর টুম্পাকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করেন। তার জেরেই উচ্চ্যমাধ্যমিকে বসার প্রস্তুতি নেন টুম্পা দেবী। ওই পরীক্ষার্থীর স্বামী পরিমল বর্মন বলেন, “প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ওকে ভর্তি করালে সিজারে মেয়ে হয়। ফলে হাসপাতাল থেকে ছুটি নেওয়া সম্ভব ছিল না। ও পরীক্ষা দিতে চাইছিল। তাই সেখানেই ব্যবস্থা করার জন্য যোগাযোগ করি।’’ টুম্পার কথায়, “সারা বছরের প্রস্তুতি নষ্ট করতে চাইনি। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষাটা দিতে পারছি ভেবেই একটা আলাদা তৃপ্তি পাচ্ছি।” |