|
|
|
|
|
ত্বকের ব্যাপারে আপস? চলবে না
প্রকৃতির নিয়ম মেনে রূপচর্চা করুন। জৌলুস বাড়বেই। বললেন
হোটেল হিন্দুস্থান ইন্টারন্যাশনালের সালোঁ তথা-র ম্যানেজার সাক্ষী মালহোত্র |
|
জীবনের সমস্ত সম্পর্ক নিয়ে আপস করা যায়। করতে হয়ও। অফিসে বসের চোখরাঙানি, সংসারে শাশুড়ির চোখরাঙানি নিঃশব্দে হজম করে দিন কাটাতে হয়। কোথাও চাকরি বাঁচাতে, কোথাও শান্তি বাঁচাতে। আত্মসম্মান সব জায়গাতেই জলাঞ্জলি যায়। আমরা মনকে বোঝাই, বৃহত্তর স্বার্থের খাতিরে নিজের ক্ষুদ্র ইচ্ছা বিসর্জনে গর্ব আছে। কিন্তু ত্বকের প্রশ্নে কোনও আপস চলে না। এ ক্ষেত্রে আপসের ফল হবে উলটো, ত্বক অন্য সুরে কথা বলবে। বিশেষ করে, প্রসাধনীর গুণমানের ব্যাপারে। কসমেটিকসের সুন্দর গন্ধ আমাদের চিরকাল আকর্ষণ করে এসেছে। কিন্তু যে কসমেটিকসের গন্ধ খুব ভাল, তা ব্যবহার করা চলবে না। কারণ, বুঝতে হবে, সেটি খারাপ মানের। এখন পিয়োরিটি যাচাই করার যুগ। যে জিনিসটি যত খাঁটি সেটি তত গ্রহণযোগ্য।
রূপচর্চার ব্যাপারে তথা-র নিজস্ব কিছু তত্ত্ব আছে। এখানে প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার জীবনযাত্রা, সাংস্কৃতিক চর্চা, তৎকালীন পারিপার্শ্বিক পরিবেশের প্রভাব, বৈদিক সভ্যতার ধ্যানধারণা, পবিত্রতা, শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপনের ধারা থেকে রূপচর্চার যে মূল সূত্রের জন্ম হয়েছে, তার ওপরে আস্থা রাখা হয়। এটিই তথা-র মূল সূত্র।
রূপচর্চা এবং শরীরচর্চার সমস্ত দ্রব্য একশো ভাগ খাঁটি এবং কোনও রাসায়নিক এ সবের জন্য ব্যবহার করা হয় না। ত্বকচর্চার সমস্ত সামগ্রী এবং এসেনশিয়াল অ্যারোমা অয়েল সংরক্ষিত হয় কাচের পাত্রে। তার কারণ হল, প্লাস্টিকের সংস্পর্শে এলে অ্যারোমা অয়েলগুলি তাদের গুণাগুণ হারিয়ে ফেলে। |
জোডিয়াক রিচুয়াল |
প্রাচীন ভারতে রাশি ও নক্ষত্র অনুযায়ী এক জন ব্যক্তির আচার-আচরণ, স্বভাব, খাদ্যাভ্যাস সম্বন্ধীয় বিভিন্ন তথ্য জানা যেত। তার উপর ভিত্তি করে তার চিকিৎসা ও রূপচর্চার পদ্ধতি বিবেচিত হত। এখানেও ব্যক্তির জোডিয়াক চিহ্ন অনুযায়ী ভেষজ, বিভিন্ন অ্যারোমা অয়েল, ফুলের নির্যাসের মিশ্রণে রূপচর্চা হয়। যেমন, কোনও ব্যক্তির জোডিয়াক চিহ্ন অনুযায়ী, তিনি যদি রাগী হন, তবে তাঁর ক্ষেত্রে ঠান্ডা জাতীয় পদার্থ ব্যবহৃত হয়। বিশ্বাসীদের জন্য উপযোগী ব্যবস্থা।
|
বস্ত্রম্ (ভেষজ কাপড়, সুস্থ জীবনের জন্য) |
এই ধারণা পাঁচ হাজার বছর আগে থেকে প্রচলিত। এটি উন্নত মানের শারীরিক সুস্থতার জন্য প্রয়োগ করার চল ছিল। এটি সম্পূর্ণ হাতে বোনা এবং কাপড়টির মধ্যে বিশেষ ধরনের ভেষজ ও তেল মিশ্রিত থাকে। কোনও ধরনের কেমিক্যাল এখানে ব্যবহার করা হয় না। একটি নির্ধারিত সময় পর্যন্ত এটি জড়ানো থাকে। তবে শারীরিক প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী ভেষজ ও শারীরিক পরিবর্তন হয়। এটির মধ্য দিয়ে আপনার শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পায়। শরীর থেকে সমস্ত টক্সিন বেরিয়ে গিয়ে শরীরকে হালকা করে দেয়। আধুনিক স্পা-র যা উদ্দেশ্য, আপনি ‘বস্ত্রম্’ পদ্ধতির মধ্য দিয়েও তার অনুরূপ ফল পাবেন।
এ ছাড়া, ঋতুর বৈচিত্র্য অনুযায়ী বিভিন্ন ফলের মিশ্রণে ফেশিয়াল করা হয়। যেমন জানুয়ারিতে কমলালেবু ব্যবহার করা হয়। ফেব্রুয়ারি মাস ভ্যালেন্টাইন স্পেশাল। সেই কারণে চকলেট ফেশিয়ালের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এ ছাড়া চকলেট ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। মার্চ মাসে স্ট্রবেরি, এপ্রিল ও মে-তে আম, জুন মাসে কালো জাম, জুলাইতে পিচ, অগস্ট মাসে শসা, অক্টোবর-নভেম্বরে কলা, সবেদা, এ ছাড়াও বিভিন্ন ফলের মিশ্রণে ফেশিয়াল করা হয়। ডিসেম্বর মাসে ওয়াইন ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। কারণ শীতকালে ত্বক শুকিয়ে যায় এবং ত্বকের উজ্জ্বল ভাব হারিয়ে যায়। ওয়াইন ব্যবহারে ত্বক সর্বদা উজ্জ্বল থাকে। ফলের সঙ্গে ত্বকের ধরন অনুযায়ী অ্যারোমা অয়েলের মিশ্রণে প্যাক ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া অক্সিজেন থেরাপির মধ্য দিয়েও ত্বকের হারানো জৌলুস ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়।
|
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা |
|
|
|
|
|