মমতাকে তাঁর দফতরের বাজেটে চান বামপন্থীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বিধানসভার গত অধিবেশনের মত এ বারও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অধীনস্থ একাধিক দফতরের বাজেট পেশ এড়িয়ে গেলে স্পিকারের কাছে সমবেত প্রতিবাদ জানাবেন বাম বিধায়করা। প্রয়োজনে ওয়াক-আউটও করা হবে। তেমন হলে বামেরা বিতর্কে অংশও নেবে না। শুক্রবার বামফ্রন্টের পরিষদীয় দলের বৈঠকের পর সিপিএমের বিধায়ক তথা পাবলিক
অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান আনিসুর
রহমান বলেন, “গত অধিবেশনেই দেখেছি মুখ্যমন্ত্রী বার বার বিধানসভা এড়িয়ে যাচ্ছেন। এটা সংসদীয় গণতন্ত্রের পরিপন্থী। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর হাতে-থাকা পুলিশ, স্বাস্থ্য, সংখ্যালঘু দফতরের বাজেটের সময় তাঁর কাছ থেকে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব চাই।”
বাজেট অধিবেশনে বিধায়কদের ভূমিকা নিয়ে এ দিন বাম পরিষদীয় দলের বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত হয়, রাজ্যপালের বক্তৃতায় যে বিষয়গুলি উল্লেখ করা হয়নি, এ বারের বাজেট অধিবেশনে সেই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনার জন্য নানা ভাবে সরকারের উপরে ‘চাপ’ সৃষ্টি করবে বামেরা। রাজ্যপালের বক্তৃতা বা বিভিন্ন দফতরের বাজেট বিতর্কের সময়েও সেই বিষয়গুলির উল্লেখ করা হবে। বামফ্রন্টের ৬১ জন বিধায়ককে নিয়মিত বিধানসভায় উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। সূর্যবাবু ছাড়াও শরিক দলের নেতারাও বিধায়কদের উপস্থিতির উপর জোর দেন। রাজ্যপালের বাজেট ভাষণে আমরি-কাণ্ডে ৯৩ জনের মৃত্যু, বিষমদে ১৭৩ জনের মৃত্যু, কৃষকের আত্মহত্যা, কিষেণজির মৃত্যু, মগরাহাট, নদিয়ায় পুলিশের গুলিতে মৃত্যু, শিক্ষাক্ষেত্রে অশান্তি, পার্ক স্ট্রিট, কাটোয়ার ধর্ষণের ঘটনার কোনও উল্লেখ নেই। বিধানসভার বিতর্কে অংশ নিয়ে এই বিষয়গুলি তুলে ধরতে চায় বামেরা। সেই সঙ্গে সরকারের প্রতিটি ‘জনবিরোধী’ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানানো হবে। জোর দেওয়া হবে প্রশ্নোত্তর পর্বের উপরেও। অধিবেশন চলাকালীন যে সব ঘটনা ঘটছে, সে ব্যাপারে বিধায়কদের ওয়াকিবহাল থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে তাঁরা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন।
প্রশ্নোত্তর-পর্বে বাম বিধায়কদের উপস্থিত নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। কোনও বিধায়ক জরুরি কারণে বিধানসভায় না-আসতে পারলে তা আগাম জানানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রবীণ বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার বিধানসভায় আসেননি। এ নিয়ে বিধায়কদের মধ্যে আলোচনা হয়। পরে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, রেজ্জাক অসুস্থ থাকায় আসতে পারেননি। রেজ্জাক নিজে অবশ্য কাউকেই কিছু জানাননি।
এ দিন বিধানসভা শোকপ্রস্তাবের পর মুলতুবি হয়ে যায়। সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক প্রদীপ তা’র নাম প্রস্তাবের প্রথমেই ছিল। বাকিদের মধ্যে ছিলেন ফুটবলার শৈলেন মান্না, ভাস্কর শর্বরী রায়চৌধুরী, কবি জয়দেব বসু, রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী ঋতু গুহ ও মায়া সেন এবং অভিনেত্রী ভারতী দেবী। |