দিনের পর দিন জনসংখ্যা বেড়েছে। একটি মাত্র শ্মশাঘাট নিয়ে মহকমার মানুষকে সমস্যায় পড়তে হলে সে দিকে কোনও নজরই নেই জেলা প্রশাসনের। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হলেও কোনও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ মহকুমার বাসিন্দাদের। এমনকী সাড়া মেলেনি বৈদ্যুতিক চল্লির আবেদনেও।
শ্মশানের সংখ্যা কম হওয়ায় এলাকার মানুষকে মৃতদেহ নিয়ে বেশিরভাগ সময়েই ছুটতে হয় কলকাতার নিমতলা বা বারুইপুরের কীর্তনখোলা শ্মশানে। মহকুমার গোসাবা, বাসন্তী, জীবনতলা, ক্যানিং সর্বত্র একই চিত্র। এই সমস্ত এলাকার মানুষকে মৃতদেহ নিয়ে ছুটতে হয় শহর ও শহরতলিতে। এ ছাড়া প্রত্যন্ত গ্রামে আর্থিক অনটনের কারণে সুন্দরবনের বহু দ্বীপে নদীর চরে পুঁতে দেওয়া হয় মৃতদেহ। কোথাও কোথাও বাড়িতেই দাহ করা হয় মৃতদেহ।
মহকুমা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্যানিংয়ে ইংরেজ আমলে চালু হওয়া শ্মশানঘাটটি আজও বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। শ্মশানে কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই। নেই পানীয় জলের ব্যবস্থা, শৌচালয়। ফলে শ্মশানে মৃতদেহ সৎকারে এলে চরম সমস্যায় পড়তে হয় লোকজনদের। |
ইতিমধ্যে পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে শ্মশানঘাটটির সংস্কার করা হলেও আলো, পানীয় জল, শৌচালয় সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা সনৎ কুমার সাঁপুই বলেন, “শ্মশানঘাটের ছাউনির অবস্থা ভাল না হওয়ায় বর্ষাকালে মৃতদেহ পোড়ানোর সময় বৃষ্টির জলে আগুন নিভে যায়। তা ছাড়া ছাউনির জায়গা অপ্রতুল হওয়ায় অনেক সময় বট গাছের নীচে আশ্রয় নিতে হয় মৃতদেহ নিয়ে আসা লোকজনদের। এ ছাড়া গরমের সময় সম্যসাও মারাত্মক আকার নেয়। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দাবি বৈদ্যুতিক চুল্লির। কিন্তু সেদিকেও কোনও নজর নেই প্রশাসনের।”
শ্মশানঘাট নিয়ে সমস্যার প্রসঙ্গে ক্যানিং-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নারায়ণ ঘোষ বলেন, “শ্মশানের উন্নতির জন্য আমাদের পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শ্মশানে পানীয় জল, বিদ্যুৎ ও শৌচালয় তৈরির ব্যবস্থা হচ্ছে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি সেগুলির ব্যবস্থা হয়ে যাবে।” তবে বৈদ্যুতিক চুল্লির দাবির প্রসঙ্গে ক্যানিংয়ের মহকুমা শাসক শেখর সেন বলেন, “মাতলা নদীর চরে এ জন্য জায়গা বাছা হয়েছে। কিন্তু পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা আছে। সেগুলি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বৈদ্যুতিক চুল্লির তৈরির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।” |