বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রায় চল্লিশ মিনিট বিদ্যুতের খুঁটি থেকে ঝুলে রইলেন রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বরাতপ্রাপ্ত এক ঠিকাদার সংস্থার কর্মী।
শুক্রবার দুপুরে দেগঙ্গার বেড়াচাঁপার ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, খবর পেয়েও রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্মীরা সময় মতো আসেননি। পরে একটি ভ্যানে পাঁচ কর্মী এলে ক্ষিপ্ত জনতা তাঁদের মারধর করেন। ভ্যান ভাঙচুর করা হয়। শেষ পর্যন্ত সাহারুল মণ্ডল (২৮) নামে ওই কর্মীকে নামানো হলেও বাঁচানো যায়নি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু ঘটলে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী পথ অবরোধ করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুর দেড়টা নাগাদ বেড়াচাঁপার একটি রেস্তোরাঁয় মিটার বসানোর পরে তার নিয়ে উল্টো দিকের বিদ্যুতের খুঁটিতে উঠেছিলেন স্থানীয় বল্লভপুর গ্রামের বাসিন্দা সাহারুল। সঙ্গে মই ছিল না। সহকর্মীরা নীচে ছিলেন। খুঁটিতে ৪৪০ ভোল্টের তার রয়েছে। কয়েক ফুট উপর দিয়ে গিয়েছে ১১ হাজার ভোল্টের তার। অসর্তকতায় সাহারুল বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। |
এর পরে খুঁটি থেকেই ঝুলতে থাকে সাহারুলের অসাড় দেহ। এলাকার বাসিন্দারা স্থানীয় জীবনপুর পাওয়ার হাউসে খবর দিলে তারা ওই তারের বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে দেয়। কিন্তু মই না থাকায় সাহারুলকে নামিয়ে আনা যাচ্ছিল না। সওয়া ২টো নাগাদ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বেড়াচাঁপা অফিস থেকে জনা পাঁচেক কর্মী মোবাইল-ভ্যান নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। তখনই জনতা তাঁদের উপরে চড়াও হয়। পরে এলাকারই কয়েক জন একটি পাট বোঝাই ট্রাকে উঠে সাহারুলকে নামান। বিদ্যুৎকর্মীরা তাঁদের সাহায্য করেন। পুলিশও আসে। প্রথমে স্থানীয় বিশ্বনাথপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, পরে সেখান থেকে বারাসত হাসপাতালে পাঠানো হলেও পৌনে ৩টে নাগাদ রাস্তাতেই সাহারুলের মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই বেড়াচাঁপায় ফের উত্তেজনা ছড়ায়। বিদ্যুৎকর্মীদের গাড়ি আটকে, জিনিসপত্র ফেলে হাড়োয়া-বেড়াচাঁপা রোড অবরোধ করে জনতা। তাদের অভিযোগ, বেলা দেড়টা নাগাদ খবর দেওয়া হলেও বিদ্যুৎকর্মীরা দেরিতে আসেন। সে কারণেই সাহারুলকে বাঁচানো যায়নি। বিদ্যুৎকর্মীরা অবশ্য দাবি করেন, খবর পাওয়া মাত্রই তাঁরা ঘটনাস্থলের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েছিলেন। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এক কর্তা বলেন, “কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে আমরা নথিভুক্ত ঠিকাকর্মীদের ক্ষতিপূরণ দিই। তবে অনেক সময়েই ঠিকাকর্মীরা নিরাপত্তার নিয়ম-কানুন না মেনে কাজ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সে কারণেও দুর্ঘটনা ঘটে।” |