|
|
|
|
মাওবাদীদের হাতে নিহত ১৬ জনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মাওবাদীদের হাতে নিহত পরিবার-পিছু ৩ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। আগে দু’টি পর্যায়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে ১২টি পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের টাকা এসেছিল। এ বার আরও ১৬টি পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার অর্থ এসে পৌঁছল জেলায়। পরিবারের উপযুক্ত সদস্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ওই টাকা জমা দিয়ে দেওয়ার কথা প্রশাসনের। ইতিমধ্যেই ১২ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলাও হয়ে গিয়েছে বলে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক পার্থ চক্রবর্তী জানিয়েছেন। বাকিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও দ্রুত খোলার ব্যবস্থা করে ক্ষতিপূরণের টাকা ব্যাঙ্কে জমা দিয়ে দেওয়া হবে বলে পার্থবাবু জানান।
তবে, ক্ষতিপূরণ খাতের এই অর্থ খুবই ঢিমেতালে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও প্রশাসনিক কর্তারা এ কথা মানতে রাজি হননি। তাঁদের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে নানা ধরনের নথির প্রয়োজন হয়। তা পাঠাতে হয় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। সে-সব নথি নিয়ে প্রশ্ন থাকলে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের কাছে ফের জানতে চায়। জেলা প্রশাসন সে-সব প্রশ্নের উত্তর পাঠানোর পরেই ক্ষতিপূরণের অর্থ মঞ্জুর হয়। তা ছাড়াও, শুধু পশ্চিমবঙ্গ বা পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরই নয়, ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যের একাধিক জেলা মাওবাদী প্রভাবিত।
সেই সব এলাকাতেও মাওবাদী হামলায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তাই কেন্দ্রের কাছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই আবেদন পৌঁছচ্ছে। আবেদনের সুবিপুল সংখ্যার কথা বিবেচনা করলে সব নথি খতিয়ে দেখে ক্ষতিপূরণ বরাদ্দে একটু সময় লাগতে পারে বলেই জেলা প্রশাসনের একাধিক কর্তার অভিমত। নিয়মিত নথি পরীক্ষার কাজ চলছে, টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়াও থেমে নেই বলেই দাবি তাঁদের।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় গত তিন বছরে অন্তত আড়াইশো জন মাওবাদী হামলায় নিহত হয়েছেন বলেই প্রশাসনের হিসাব। প্রথমে ক্ষতিপূরণ চেয়ে ২১ জনের নথি পাঠানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। কিন্তু সুরতহাল রিপোর্ট বাংলায় হওয়ায় সমস্যা দেখা দেয়। পরবর্তীকালে ইংরাজিতে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়। সেই কাজ আগেই হয়ে গিয়েছিল। তার পর ধীরে ধীরে জেলার বিভিন্ন থানা থেকে নিহতদের তালিকা সংগ্রহ, নথিপত্র সংগ্রহ শুরু করে জেলা প্রশাসন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ চেয়ে ১৭৯ জনের নামের তালিকা ও নথি পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। আরও ২১ জনের নথি তৈরি করা হয়েছে। তা শীঘ্রই পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এ ভাবেই ধাপে ধাপে ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারও ধাপে ধাপে টাকা পাঠাতে শুরু করেছে।
প্রথম দফায় ৯ জন নিহতের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের অর্থ পাঠানো হয়েছিল। তার পর ৩ জন নিহতের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের অর্থ আসে। এ বার আরও ১৬টি পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের অর্থ এসে পৌঁছেছে জেলায়। অন্য ২০টি পরিবারের আবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নথি নিয়ে কিছু প্রশ্নও করেছে কেন্দ্র। রাজ্য সরকারের কাছে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন সে-সব প্রশ্নেরও জবাব তৈরি করছে। |
|
|
|
|
|