তমলুকের ব্যাঙ্কে সমবায় দফতরের প্রতিনিধি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
ঋণের টাকা আদায়ে ঋণখেলাফিদের বন্ধকী জমির নিলাম-নোটিস দিয়ে আগেই মুখ্যমন্ত্রীর কোপে পড়েছে তমলুক কোঅপারেটিভ এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক। রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলের নির্দেশে নিলাম স্থগিত করতে হয়েছিল ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে। নিলামের পোস্টার দেওয়ায় ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মেদিনীপুর-২ রেঞ্জের অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার অব কো-অপারেটিভ সোসাইটিজ (এআরসিএস)। শুক্রবার আবার তদন্তে এল রাজ্য সমবায় দফতরের উচ্চপর্যায়ের এক প্রতিনিধিদল।
এ দিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ তমলুকের ব্যাঙ্কে তদন্তে আসেন সমবায় দফতরের যুগ্মসচিব ভবানী চক্রবর্তী ও আশিস মণ্ডল। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সেন্ট্রাল ল্যান্ড ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিও। তাঁরা কথা বলেন ব্যাঙ্কের মুখ্য নির্বাহী আধিকারিক অরুণ মিশ্র এবং নিলাম-নোটিসে উল্লিখিত সেল্ অফিসার মুনমুন সান্যালের সঙ্গে। বিভিন্ন নথিপত্রও খতিয়ে দেখেন সমবায় দফতরের প্রতিনিধিরা। তবে তাঁরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনও কথা বলতেই চাননি। মন্তব্য করেননি ব্যাঙ্কের মুখ্য নির্বাহী আধিকারিকও।
ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান তথা শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূলের সভাপতি এবং কাঁখরদা পঞ্চায়েতের প্রধান নিকুঞ্জ মান্না অবশ্য বলেন, “রাজ্য সমবায় দফতরের আধিকারিকেরা এ দিন রুটিন পরিদর্শনে এসেছিলেন। প্রতি বছরই আসেন। তদন্তে এসেছিলেন বলে জানা নেই।” |
 |
বৈঠক শেষে। ছবি তুলেছেন পার্থপ্রতিম দাস। |
অনাদায়ী ঋণ আদায়ে বার বার তাগাদা নোটিস দিয়েও ফল না হওয়ায় সমবায় আইন অনুসারেই কয়েক জন ঋণখেলাফির বন্ধকী জমি নিলামে নোটিস দিয়েছিল তমলুকের এই কৃষি সমবায় ব্যাঙ্ক। ৯ জনের জমির নিলাম-নোটিসের পরে ৭ জনই অবশ্য ঋণ-শোধের আগ্রহ প্রকাশ করে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শুধু তমলুকের কুরপাই গ্রামের পঞ্চানন চৌধুরী এবং চাতরাদাঁড়ি গ্রামের নিতাই মাইতিই ঋণ শোধে আগ্রহ দেখাননি। ১৬ ও ১৯ মার্চ তাঁদের বন্ধকী জমি নিলামের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু গত ১২ মার্চ মহাকরণে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী নিলাম-নোটিসের পোস্টার হাতে তুলে ধরে তমলুক ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেন। কোনও অবস্থাতেই কৃষকের জমি বাজেয়াপ্ত করা যাবে না বলে জানিয়ে দেন। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা নেওয়া’রও হুঁশিয়ারি দেন। পরের দিনই মহাকরণে ডেকে পাঠানো হয় ব্যাঙ্কের শীর্ষ-কর্তাদের। তার পরেই নিলাম স্থগিত করতে বাধ্য হন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। বুধবার ব্যাঙ্কের তমলুক শাখার ম্যানেজারের নামে থানায় ডায়েরি করেন এআরসিএস। আর শুক্রবার ঘুরে গেলেন রাজ্য সমবায় দফতরের প্রতিনিধিরা। ঘটনার ঘনঘটায় ঋণ-আদায় অবশ্য থমকে গিয়েছে। সমবায় ব্যাঙ্কটির ভবিষ্যৎ নিয়েও তৈরি হচ্ছে উদ্বেগ। |
|