স্কুল শিক্ষক নিয়োগে কেন্দ্রীয় আইনকে পাশ কাটিয়ে ত্রিপুরা সরকার শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করায় রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে ‘স্বজন পোষণ’-এর অভিযোগ এনেছে বিরোধী দল, কংগ্রেস। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের ছাড়পত্র না নিয়েই কেন্দ্রীয় সরকারের আরোপিত শর্তাবলী নিজেরা একতরফা ভাবে শিথিল করছে বলেও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ যে আদৌ অমূলক নয় তা স্পষ্ট হয়েছে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তীর কথাতেই। তপনবাবু বলেন, ‘‘এনসিটিই নোটিফিকেশন মোতাবেক যোগ্য প্রার্থী ত্রিপুরা রাজ্যে প্রায় নেই বললেই হয়।” সেই কারণেই নিয়োগের শর্ত শিথিল করা হয়েছে বলে মন্ত্রীর বক্তব্য। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় শর্তাবলী শিথিলের অধিকার একমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের হাতেই রয়েছে।
২০১৩ সালের বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যে প্রায় এক হাজার শিক্ষক নিয়োগে রাজ্য উদ্যোগী হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই বিরোধী দল স্বজন পোষণের অভিযোগ তুলেছে। বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের রতনলাল নাথের জোরালো অভিযোগ, রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকার স্কুল শিক্ষক নিয়োগের Aশিক্ষক নিয়োগ করতে চলেছে। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুযায়ী, ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ টিচার এডুকেশন (এনসিটিই) স্কুল শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কী কী যোগ্যতা থাকা দরকার এবং কী ভাবে যোগ্য প্রার্থীকে বাছাই করা বা নিয়োগ করা যাবে, তা পরিষ্কার করে সব রাজ্যকে জানিয়ে দিয়েছে।
শিক্ষা অধিকার আইনে, সংশ্লিষ্ট রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি না থাকলে বা শিক্ষক প্রশিক্ষণের উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান না থাকলে, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতা শিথিল করতে পারে একমাত্র কেন্দ্রীয় সরকার। অথচ এ রাজ্যে ২০১১ সালের রাজ্য সরকারের গেজেট বিজ্ঞপ্তির পরেও স্কুল শিক্ষক নিয়োগের যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে সেখানে এনসিটিই-র শর্তাবলী মানা হচ্ছে না। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যোগ্যতা শিথিল করার অনুমতি রাজ্য এখনও পায়নি।
কেন নিয়মাবলীকে পাশ কাটিয়ে রাজ্য নতুন প্রায় হাজার শিক্ষক নিয়োগ করতে যাচ্ছে? স্কুল শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী এ প্রসঙ্গে বলেন, এই বিজ্ঞপ্তির আগেই বিদ্যালয় শিক্ষা দফতর শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজনীয় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করে। রাজ্যে যেহেতু প্রয়োজনীয় সংখ্যক বি এড কলেজ নেই তাই শর্তাবলী শিথিল করার জন্য কেন্দ্রকে অনুরোধ করা হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী জোর দিয়ে বলেন বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার স্কুল শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ অবস্থায় ওই প্যানেল বাতিল করে দেওয়া যায় না।’’ |