খেতে ফুল ফুটিয়ে খুশি আলু চাষিরা
খেতের আলুর দাম নিয়ে এখন কেউ ভাবে না। ধসা রোগের দুশ্চিন্তা নিয়েও রাত কাটে না ওঁদের। উল্টে মাঠ ভরা রকমারি ফুলের বাহার দেখে আনন্দে ভরা মন। আলু খেত পাল্টে হয়েছে ফুলের বাগান। কী ফুল নেই সেখানে! গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, পিটুনিয়া, ড্যানটাস, কসমস, সিনেরিয়া সহ নানা প্রজাতির ফুলে ভরা চারদিক। ধূপগুড়ি শহর থেকে সাত কিলোমিটার দূরে বারোঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্য বোড়াগাড়ি গ্রামের ২২টি পরিবার এ ভাবে আলু চাষ ছেড়ে ফুল চাষি হয়েছেন। বিকল্প চাষের এমন উদ্যোগ দেখে খুশি ধূপগুড়ি ব্লক কৃষি আধিকারিক দেবাশিস সর্দার। তিনি বলেন, “আলুর মত ঝুঁকিবহুল চাষ ছেড়ে অন্য কিছু আবাদের কথা আমরা বেশ কিছুদিন থেকে বলছি। মধ্য বোড়াগাড়ি গ্রামের চাষিরা আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়েছেন। এটা ভাল দিক।” উত্তরবঙ্গে আলু চাষের প্রসিদ্ধ ধূপগুড়ি। ব্লকের ৮০ শতাংশ জমিতে ফি বছর আলু চাষ হয়। কোনও বছর ধসা, আবার কোনও বছর অধিক উৎপাদনের ফলে বাজারে দাম না থাকায় চাষিদের মাথায় হাত পড়ে। ফের লাভের আশায় নতুন করে আলু চাষ শুরু করেন তাঁরা। এ ভাবে চলতে গিয়ে লোকসানের বহর বাড়ে।
ছবি: রাজকুমার মোদক।
দিশেহারা চাষিরা আত্মঘাতী হন। গত বছর উৎপাদিত আলু বেশি দামে বিক্রির আশায় হিমঘরে রাখেন অনেকে। কিন্তু দাম না পেয়ে হিমঘর থেকে আলু তুলতে পারেনি এমন ঘটনা নেহাত কম নেই। আত্মহত্যা করেন রবীন বর্মন নামে এক চাষি। ওই পরিস্থিতি দেখে কৃষি দফতরের তরফে বিকল্প চাষের জন্য প্রচার শুরু হয়। চাষিদের বলা হয়, আলু চাষ শুধুমাত্র ঝুঁকিবহুল নয়। প্রচুর রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে ভবিষ্যতে জমি বন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আলু চাষ ছেড়ে চাষিদের ফুল চাষ দেখে কৃষি আধিকারিকদের দাবি তাঁদের প্রচারে কিছুটা হলেও সাফল্য এসেছে। আলু চাষে লোকসানের ফলে ৭ বছর আগে ফুল চাষ শুরু হয় মধ্য বোড়াগাড়ি গ্রামে। চাষিরা শিলিগুড়ি থেকে নানা জাতের বীজ এনে আলু খেতের জন্য তৈরি জমিতে ফুল বাগান গড়ে তোলেন। শুরুতেই সাফল্য মিলে যায়। এখন ভোরে ফুল তুলে তাঁরা পৌছে দেন মালবাজার, বানারহাট, চামুর্চি, গরুথান এলাকার বাজারে। বছরে ৭ মাস ফুল চাষ করে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা। ফুল বাগানের মালিক প্রদীপ বিশ্বাস এক সময় ৭ বিঘা জমিতে আলু চাষ করতেন। লোকসানের ফলে ৫ বছর আগে তিনি ফুল চাষ শুরু করেন। প্রদীপবাবু বলেন, “এখন ভাল আছি। অভাব অনেকটাই মিটেছে।” গণেশ বিশ্বাসের ৩ বিঘা আলু খেত এখন রকমারি ফুলে ভরা। তাঁর স্ত্রী দীপালি দেবীর কথায়, “ফুল চাষ করে শান্তি মিলেছে।” মাত্র আধ বিঘা জমিতে ফুল চাষ করে দিব্যি সংসার চালাচ্ছেন হরদেব রায়। ওই চাষির স্ত্রী বলেন, “সরকারি সাহায্য পাওয়া গেলে বারো মাস ফুলের চাষ করতাম। ভাল বাজার আছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.