বাজারের মন পেলেন না প্রণব, সূচক পড়ল ২০৯
শেয়ার বাজারকে এক গুচ্ছ উপহার দিয়েও মন পেলেন না কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। যার ফলে বাজেট পেশের আগে হু হু করে উঠতে থাকা শেয়ার সূচক দিনের শেষে নেমে এল ২০৯.৮৫ পয়েন্ট। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অবশ্য অনেকরই ধারণা, আর্থিক বৃদ্ধির লক্ষ্যে যে-সব প্রস্তাব বাজেটে রয়েছে, তা বাস্তবায়িত হলে বাজারের উপর ভাল প্রতিক্রিয়া পড়বে।
বাজারকে চাঙ্গা করতে প্রণববাবু অবশ্য চেষ্টার ত্রুটি করেনেনি। কিন্তু পাশাপাশি পরিষেবা কর এবং উৎপাদন শুল্কের হার বাড়ানোর বিরূপ প্রতিক্রিয়া তাঁর সেই চেষ্টাকে আপাতত অনেকটাই ম্লান করে দিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শেয়ার বাজারকে চাঙ্গা করতে অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবগুলি হল:
সাধারণ লগ্নিকারীদের শেয়ারে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা। শেয়ারে বিনিয়োগ করে কমপক্ষে ৩ বছর পর তা বিক্রি করলে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত লগ্নির অর্থের উপর ৫০ শতাংশের উপর আয়কর ছাড় পাওয়া যাবে। অবশ্য যে-সব লগ্নিকারীর বার্ষিক আয় ১০ লক্ষ টাকার মধ্যে, তাঁরাই ওই সুবিধা পাবেন। এর জন্য ‘রাজীব গাঁধী ইকুইটি সেভিংস স্কিম’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রস্তাব এনেছেন অর্থমন্ত্রী।
দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে শেয়ার লেনদেনে সিকিউরিটিজ ট্রানজাকশন ট্যাক্স (এসটিটি) ২০% কমিয়ে ০.১% করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। এর ফলে শেয়ার লেনদেনের খবচ কমবে।
বন্ডের বাজার চাঙ্গা করতে বিদেশি বিনিয়োগের পথ খুলে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এখন থেকে উপযুক্ত বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থা বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারবে।
যে-সব সংস্থা কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা সংগ্রহ করার জন্য বাজারে প্রথম শেয়ার (আইপিও) ছাড়বে তাদের শেয়ার কেনার জন্য এ বার থেকে অনলাইনে আবেদন করা যাবে।
পতনে হতাশা। বিএসই-তে। ছবি: এএফপি
বাজারকে চাঙ্গা করতে অর্থমন্ত্রীর একটি বিশেষ লক্ষ্য রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। কী সেই লক্ষ্য? গত বছর রাজকোষ ঘাটতি পূরণে কেন্দ্রীয় সরকার বিলগ্নিকরণ খাতে ৪০ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করার পরিকল্পনা করছিল। কিন্ত বাজারের হাল খারপ থাকায় সে পরিকল্পনা মাঠে মারা গিয়েছে। বিলগ্নিকরণে মাত্র ১৪ হাজার কোটির মতো টাকা তুলতে পেরেছেন অর্থমন্ত্রী। এই বাজেটেও ৩০ হাজার কোটি টাকা বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে তোলার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। সে পরিকল্পনাও যাতে ভেস্তে না যায়, তার জন্যই সরাসরি বাজারকে চাঙ্গা করতে কিছু ব্যবস্থা রয়েছে।
তবে পরিষেবা কর এবং উৎপাদন শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাবে অখুশি শেয়ার বাজার। এঞ্জেল ব্রোকিংয়ের এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর বিনয় অগ্রবাল বলেন, “বর্তমানে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু পরিষেবা কর এবং উৎপাদন শুল্ক বাড়ায় বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়বে।”
তবে শেয়ার বাজারের ভবিষ্যৎ নিয়ে অবশ্য বিশেষ আশাবাদী বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকে। প্রবীণ বিশেষজ্ঞ অজিত দে বলেন, “পরিকাঠামো উন্নয়ন-সহ আর্থিক বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণববাবু যে-সব প্রস্তাব এনেছেন, তা বাস্তবায়িত হলে বাজার যে চাঙ্গা হবে, তাতে সন্দেহ নেই। আগামী মাস ছয়েকের মধ্যেই এর প্রমাণ পাওয়া যাবে।” বাজার যে বাড়বে তাতে অবশ্য সন্দেহ নেই ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখ অথবা ভিসি কর্পোরেট অ্যাডভাইজরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিজয় চণ্ডকের মতো বাজার বিশেষজ্ঞেরও। তবে তাঁরা মনে করেন, “বাজেটের জন্য নয়, বাজার বাড়বে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থার বিনিয়োগের সুবাদে। অর্থমন্ত্রী ২০১২-১৩ সালের জন্য দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৭.৬ শতাংশ হবে বলে জানিয়েছন। এই তথ্যই ভারতের বাজারে বিদেশি লগ্নিকারীদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করবে।”
একই ভাবে বন্ডের বাজারে বিদেশি বিনিয়োগের পথ খুলে দেওয়ার ফলে এ বার দেশে বন্ডের বাজারও চাঙ্গা হবে বলে মনে করছেন পিয়ারলেসের ফিনান্সিয়াল প্রডাক্টস ডিস্ট্রিবিউশনের ডিরেক্টর জয়ন্ত বায়।
তিনি বলেন, “পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগ আসাটা বিশেষ জরুরি ছিল। এ বার বন্ডের মাধ্যমে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে দার্ঘকালীন ভিত্তিতে বিদেশি বিনিয়োগের পথ সুগম হল।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.