লাগাম টানা গেল না রাজকোষের ঘাটতিতে
ইনটি তাঁদেরই তৈরি, কিন্তু কার্য ক্ষেত্রে তার বাস্তবায়ন করতে পারলেন না খোদ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীই। রাজকোষ ঘাটতির পরিমাণ ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রার অনেক উপরেই রইল। ২০১১-১২ সালে রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪.৬%। বছর শেষে সংশোধিত বাজেটে সেই পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫.৯%। ২০১২-১৩ সালে রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা কী হবে তা-ও ২০১১-১২ সালের বাজেট পেশ করতে গিয়েই ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। ৪.১%। কিন্তু আজ বাজেটে শেষ পর্যন্ত সেই লক্ষ্য ১% বাড়াতে হয়েছে তাঁকে।
কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির আর্থিক ভারসাম্য রক্ষার উদ্দেশে রাজকোষ ঘাটতিকে ৩ শতাংশের মধ্যে বেঁধে রাখার লক্ষ্যে আর্থিক দায়বদ্ধতা ও বাজেট নিয়ন্ত্রণ আইন (এফআরবিএম) তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু চার-চারটি আর্থিক বছর পার করেও সেই লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। অর্থমন্ত্রীর যুক্তি, ২০০৮ সালে বিশ্ব-বাজারে মন্দা এবং এফআরবিএম রূপায়ণে সময়ের যে সমাপতন, সেটাই রাজকোষ ঘাটতির ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পথে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আরও নির্দিষ্ট ভাবে, ভারতীয় অর্থনীতিতে বিশ্বমন্দার ঢেউ আটকাতে এই সময়েই যে ‘ফিস্কাল ইনসেনটিভ প্যাকেজ’ সরকারকে হাতে নিতে হয়, তার কারণেই রাজকোষ ঘাটতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়নি।
পরিকল্পনা ও পরিকল্পনা-বহির্ভূত খাতে বরাদ্দ লক্ষ্যমাত্রা বছর শেষে ধরে রাখাও কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ২০১২-১৩ সালের বাজেট প্রস্তাবে পরিকল্পনা খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৫ লক্ষ ২১ হাজার ২৫ কোটি টাকা। গত আর্থিক বছরের তুলনায় ১৭.৯৯%বেশি। পাশাপাশি, পরিকল্পনা-বহির্ভূত খাতে মোট বরাদ্দ পরিকল্পনা বরাদ্দের প্রায় দ্বিগুণ (৯ লক্ষ ৬৯ হাজার ৯০০ কোটি টাকা) হলেও সেখানে বৃদ্ধির হার ৮.৭১%-এর মধ্যেই বেঁধে রাখার চেষ্টা হয়েছে। প্রসঙ্গত, এই পরিকল্পনা-বহির্ভূত খাতে বরাদ্দ থেকে ১ লক্ষ ৪ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা স্থায়ী সম্পদ গড়ার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। এই মূলধনী ব্যয়ের পরিমাণ শতাংশের হিসেবে পরিকল্পনা-বহির্ভূত বরাদ্দের ১০.৭৫%।
এক ঝলকে শুনতে খারাপ না-হলেও সংশোধিত বাজেটের পরিপ্রেক্ষিতে বিচার করলে দেখা যায়, ছবিটা উল্টো। ২০১১-১২ সালে অর্থমন্ত্রীর বাজেট প্রস্তাব ও রূপায়ণের ফাঁকটা চোখে লাগে। ২০১১-১২ সালে পরিকল্পনা বরাদ্দের প্রস্তাব ছিল ৪ লক্ষ ৪১ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা। এই মার্চে সংশোধিত বাজেটে তার পরিমাণ ১৫ হাজার কোটি টাকা কমেছে। পরিকল্পনা-বহির্ভূত বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত খরচ প্রায় ৭৬ হাজার কোটি টাকা বেড়ে গিয়েছে। অথচ পরিকল্পনা-বহির্ভূত খাতে মূলধনী ব্যয় যতটা ধরা হয়েছিল তার থেকে কম খরচ হয়েছে। ধরা হয়েছিল, এই খাতে খরচ হবে ৮২ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা। খরচ হয়েছে ৭৬ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ছ’হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ করা যায়নি বা হয়নি।
২০১২-১৩ আর্থিক বছরে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বছরের প্রবণতা দেখে প্রশ্ন ওঠে, সেই পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা এই জন-অভিমুখী বাজেটে কতখানি সম্ভব। চলতি আর্থিক বছরে রাজস্ব ঘাটতি প্রস্তাবিত লক্ষ্যের থেকে ৮৭ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা বেড়ে গিয়ে সংশোধিত বাজেটে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লক্ষ ৯৪ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.