|
|
|
|
বাজেট টুকরো |
জাতীয় মিশনের প্রস্তাব খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে |
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পকে চাঙ্গা করতে এ বারের বাজেটে জাতীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মিশন চালুর প্রস্তাব দিল কেন্দ্র। সেই সঙ্গে এই ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দও গত ২০১১-’১২ অর্থবর্ষের ৬০০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬৬০ কোটি টাকা।
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় এই মুহূর্তে অনেকটাই পিছিয়ে ভারত। পরিসংখ্যান বলছে, যথাযথ পরিকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে বছরে প্রায় ৪৪ হাজার কোটির টাকার ফল ও সব্জি নষ্ট হয় এ দেশে। পরিকাঠামোর সমস্যা মিটিয়ে আরও ভাল ভাবে স্থানীয় চাহিদা পূরণে জোর দিতেই ২০১২-’১৩ অর্থবর্ষে এই খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মিশন চালু হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। রাজ্যগুলির সহায়তায় প্রকল্পটি রূপায়িত হবে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদানেই। সংশ্লিষ্ট শিল্পের সচিব রাকেশ কাকর জানান, এই মিশনের আওতায় প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র গড়বে বিভিন্ন রাজ্য। আর তার জন্য প্রযুক্তি ও পরিবহণ সংক্রান্ত যাবতীয় সহায়তা দেবে কেন্দ্র। এমনকী পরবর্তী কালে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রচার সংক্রান্ত কাজেও কেন্দ্র সহায়তা করবে বলে জানান তিনি। তাঁর দাবি, জুলাই-অগস্ট নাগাদই এই সংক্রান্ত কাজ শুরু হবে। গত প্রায় পাঁচ বছরে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের আয়তন গড়ে বেড়েছে ৮%র বেশি হারে। দেশ জুড়ে খাদ্যশস্য মজুতের বাড়তি ক্ষমতা তৈরির লক্ষ্যেও পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছে কেন্দ্র। এর জন্য ২০ লক্ষ টন শস্য মজুতের ক্ষমতাসম্পন্ন আধুনিক প্রযুক্তির গুদাম তৈরির বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি উদ্যোগীদের গ্যারান্টি প্রকল্পের আওতায় বর্তমানে যে প্রায় ১.৫০ কোটি টন ক্ষমতার মজুত ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে, তার মধ্যে ৩০ লক্ষ টন ক্ষমতার গুদাম তৈরি হবে চলতি অর্থবর্ষের শেষে ও আরও ৫০ লক্ষ টন যোগ হবে আগামী অর্থবর্ষে।
|
ভর্তুকি ১৪% ছাঁটাইয়ের জন্য প্রস্তাব দিলেন প্রণব |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
সার্বিক ভাবে রাজকোষ ঘাটতি কমাতে ভর্তুকি কমানোর প্রস্তাব করলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তবে তেল ও সারে ভর্তুকি কমানোর প্রস্তাব দিলেও গণবণ্টন ব্যবস্থা বজায় রাখতে খাদ্য বাবদ ভর্তুকির পরিমাণ কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী চলতি আর্থিক বছরের তুলনায় ২০১২-’১৩ সালে ভর্তুকির পরিমাণ ১৪% কমবে। চলতি অর্থবর্ষে খাদ্য, তেল ও সারে ভর্তুকি বাবদ কেন্দ্রকে মোট খরচ করতে হচ্ছে ২,০৮,৫০৩ কোটি টাকা। ২০১২-’১৩ সালে ওই বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ১,৭৯,৫৫৪ কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বছরেও ভর্তুকির পরিমাণ ঠিক হয় ১,৩৪,২১১ কোটি টাকা। কিন্তু পরে তা ৫৫% বাড়ানো হয়। নতুন আর্থিক বছরে ডিজেল, রান্নার গ্যাস ও কেরোসিন তেলে ভর্তুকির জন্য ৪৩,৫৮০ কোটি ধরা হয়েছে। যা এ বারের থেকে ২৪,৯০১ কোটি টাকা কম। ইন্ডিয়ান অয়েল, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম ও ভারত পেট্রোলিয়ামকে ওই ভর্তুকি দেওয়া হবে। তাদের মাধ্যমেই প্রকৃত দামের থেকে কম দামে ডিজেল, রান্নার গ্যাস ও কেরোসিন মানুষের কাছে পৌঁছে দেয় কেন্দ্র। কমানো হয়েছে সারের ভর্তুকিও। চলতি আর্থিক বছরের থেকে ৬,২২৫ কোটি কমিয়ে করা হয়েছে ৬০,৯৭৪ কোটি টাকা। বাড়ানো হয়েছে খাদ্যে ভর্তুকি। গনণবণ্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে খাদ্য জোগাতে ২০১২-১৩-এ ভর্তুকির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৭৫,০০০ কোটি, যা ২০১১-’১২ সালে ছিল ৭২,৮২৩ কোটি টাকা।
|
দাম বাড়ছে দেশি, বিদেশি বাইসাইকেলের |
সংবাদসংস্থা • চণ্ডীগড় |
বাজেটে উৎপাদন ও আমদানি শুল্ক বাড়ায় বাইসাইকেলের দাম বাড়তে পারে প্রায় ৩ থেকে ৪%। ইউনাইটেড সাইকেলস অ্যান্ড পার্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট গুরমিত সিংহ কুলার জানান, সামগ্রিক ভাবে উৎপাদন শুল্ক ও পরিষেবা কর ২% করে এবং আলাদা ভাবে সাইকেলে উৎপাদন শুল্ক ১% বাড়ায় দাম বাইসাইকেল পিছু ১০০ টাকারও বেশি বাড়বে। দেশের বৃহত্তম সাইকেল নির্মাতা হিরো সাইকেলের ডিরেক্টর এস কে রাই জানান সাধারণ বাইসাইকেল ছাড়াও, আমদানি করা সাইকেলের দাম ১,০০০ টাকা করে বাড়তে পারে। তবে বাজেটে তৈরি সাইকেলে আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে ৩০% করা বা সাইকেলের যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক বাড়িয়ে ২০% করাকে স্বাগত জানিয়েছে দেশের সাইকেল শিল্প মহল। তাদের দাবি, এ ক্ষেত্রে চিন থেকে সস্তায় যন্ত্রাংশ বা সাইকেল আমদানি করার প্রবণতা কমবে ও দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। লাভ হবে দেশি সংস্থাগুলির। তবে, প্রণববাবু আমদানি শুল্ক বাড়ানোর এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ দেশের বাজারে সাইকেল আমদানি করা সংস্থা ফায়ারফক্স। সংস্থার বিপণন প্রধান অজিত গাঁধী বলেন, দেশে যখন দামি সাইকেল কেনার প্রবণতা বাড়ছে, তখন এই সিদ্ধান্তে মার খেতে পারে ব্যবসা।
|
রোল ব্যাক |
বাজেট বক্তৃতা তখন সবে শুরু হয়েছে। লোকসভা চুপ। হঠাৎই হইহল্লা শুরু বিরোধী বেঞ্চ থেকে। না, কোনও বঞ্চনা বা রাজনৈতিক কারণে নয়। বন্ধ হয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর সামনে রাখা মাইক্রোফোন। ফলে তাঁর ঠোঁট নড়লেও পিছনের সারিতে বসা সাংসদরা শুনতে পাচ্ছেন না কিছুই। বুঝতে পেরে থমকে গেলেন প্রণব। আবার চালু হল মাইক। তিনি পড়তে শুরু করার পরই আওয়াজ উঠল, ‘রোল ব্যাক’, ‘রোল ব্যাক’! অর্থাৎ পড়তে হবে একটু আগে থেকে। সাম্প্রতিক রেল বাজেটের পর ‘রোল ব্যাক’ শব্দটি এখন সংসদ চত্বরে খুবই চালু। প্রণব হেসে বললেন, ‘রোল ব্যাক করছি ঠিকই, কিন্তু তা কেবল কয়েকটি বাক্যের!’ প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিন্হা উঠে বর্তমান অর্থমন্ত্রীকে জানিয়ে দিলেন, ঠিক কোন জায়গা থেকে পড়তে হবে। এর পর ‘রোল ব্যাক’ করলেন প্রণব!
|
উষ্ণ দাওয়াই |
তিন দিন আগেও গলা দিয়ে ভাল করে আওয়াজ বেরোচ্ছিল না। নিয়মিত ওষুধ খেয়েও পরিস্থিতির খুব একটা সুরাহা হয়নি। তাই চিন্তা ছিল ভালয় ভালয় বাজেট উতরোবে তো! শুক্রবার কিন্তু প্রায় দু’ঘণ্টা ঠায় বক্তৃতা করলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তার পরেই লোকসভা চ্যানেলকে দিলেন প্রথামাফিক দীর্ঘ সাক্ষাৎকার। এখানেই শেষ নয়। চলল একের পর এক বৈদ্যুতিন চ্যানেলের কাছে বাজেট ব্যাখ্যা। কিন্তু এক বারের জন্যও গলা বুজল না! রহস্যটা কী? কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী স্বীকার করছেন, গলা নিয়ে খুবই উদ্বেগে ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গরম জলের দাওয়াই কাজ করল। বক্তৃতার সময় মাঝে মাঝেই উষ্ণ জলে গলা ভিজিয়েছেন। তাই কোথাও আটকাতে হয়নি।
|
রা ওয়ান |
অবসরের সঙ্গী তাঁর বই। রাজনীতি থেকে দর্শন, সাহিত্য থেকে অর্থনীতি। কিন্তু সিনেমামনস্ক কখনওই নন প্রণব মুখোপাধ্যায়। প্রতিরক্ষামন্ত্রী থাকার সময়, এক বার দায়ে পড়ে ‘রং দে বসন্তী’ দেখতে হয়েছিল আমির খানের সঙ্গে। ছবিটি নিয়ে সে সময় তৈরি হওয়া বিতর্ক মেটাতে। তাই শুক্রবার যখন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির উপর থেকে পরিষেবা ছাড়ের প্রসঙ্গে ‘রাজা হরিশচন্দ্র থেকে রা ওয়ান’-এর উল্লেখ করলেন, তখন বিস্মিত সাংসদেরা। খুশিতে হাততালি দিলেন জয়া প্রদা। তার পর থেকে সংসদে একটি সকৌতুক প্রশ্ন, শাহরুখ অভিনীত রা ওয়ান ছবির খবর কে দিল প্রবীণ অর্থমন্ত্রীকে!
|
অভিনন্দন |
প্রণব যখন বাজেট শেষ করছেন, তখন শততম সেঞ্চুরির দিকে ক্রমশ এগিয়ে চলেছেন সচিন। সেঞ্চুরিতে পৌঁছনোর পর প্রশ্ন উঠল, প্রণবের থেকে কি প্রচারের আলো কেড়ে নিলেন সচিন? দু’বছর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রেল বাজেটের দিনে গ্বালিয়রের মাঠে দ্বিশতরান করেছিলেন সচিন। প্রচারের আলো ঘুরে গিয়েছিল সচিনের দিকে। প্রণব এই প্রতিযোগিতায় যেতে নারাজ। হাসি মুখে জানিয়ে দিলেন, “সচিন শততম সেঞ্চুরিটি করায় আমি খুব খুশি। ওঁকে আমার অভিনন্দন।”
|
সিদ্ধিলাভ |
সকালের চণ্ডীপাঠে আজ একটু বেশি সময় দিয়েছেন। তার পরে নর্থ ব্লকে অফিসে ঢোকার আগে পিতলের গণেশ মূর্তিকে পুজো। ভিতরে ঢুকেও গণেশ মূর্তিকে ফের প্রণাম। এই ভাবেই সিদ্ধিদাতার আশীর্বাদে বলীয়ান হয়ে বাজেট-বাক্স হাতে সংসদে গেলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। বাজেট পেশ শেষ করে একেবারে নিশ্চিন্তে চায়ে চুমুক দিয়ে বললেন, “এই বাজেট আর্থিক বৃদ্ধি ও সুস্থিতির বাজেট।” |
|
|
|
|
|