আজ থেকে ৩ দিন ধর্মঘটের ডাক |
বাড়তি কর চাপায় ক্ষোভ স্বর্ণশিল্পে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
এ বারের বাজেটে সব মিলিয়ে প্রায় ৫ শতাংশ অতিরিক্ত কর সোনার গয়নার উপর চাপল। সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের মতে, নয়া কর কাঠামোয় সোনার দাম আকাশছোঁয়া দাঁড়াবে। বাড়বে প্ল্যাটিনাম এবং হিরে-সহ অন্যান্য মূল্যবান পাথরের দামও। এবং একই সঙ্গে তাঁদের আশঙ্কা, ঊর্ধ্বমুখী দামের ফলে চাহিদা ও ব্যবসা কমবে। যার জেরে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি কারিগররাও মার খাবেন বলে মনে করছেন তাঁরা। কর বসানোর প্রতিবাদে দেশ জুড়ে গয়না বিক্রেতারা আজ শনিবার থেকে তিন দিন লাগাতার ধর্মঘট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ট্রেড ফেডারেশন।
সদ্য পেশ হওয়া বাজেটে সোনার বার, সোনার মুদ্রা ও প্ল্যাটিনামের উপর আমদানি শুল্ক দুই থেকে বেড়ে হল চার শতাংশ। সোনার আকরের উপর শুল্ক ১ থেকে বেড়ে হল ২ শতাংশ। পাশাপাশি ব্র্যান্ডেড নয়, এমন সোনার গয়নার উপরেও ১ শতাংশ উৎপাদন শুল্ক বসানোর প্রস্তাব বাজেটে দেওয়া হয়েছে। বেড়েছে পরিষেবা করও। ১০.২ থেকে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ শতাংশ।
এ ছাড়াও, পরিশোধিত সোনার উপর উৎপাদন শুল্ক দেড় থেকে বাড়িয়ে তিন শতাংশ করা হল। সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের দাবি, বাজেটের এক মাত্র ইতিবাচক দিক হল ব্র্যান্ডেড রুপোর গয়নার উপর উৎপাদন শুল্ক সম্পূর্ণ ভাবে তুলে দেওয়া হয়েছে।
স্বাভাবিক ভাবেই বাজেট নিয়ে অখুশি গয়না শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা। জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান রাজীব জৈনের অভিযোগ, বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার নিয়ন্ত্রণে রাখতে এক তরফা ভাবে গয়না শিল্পের উপর কর চাপানো হয়েছে। তিনি বলেন, “এ ধরনের কর কাঠামো থাকলে এই শিল্পে লগ্নি করতে ভারতে আসবে না কেউ। আমদানি শুল্ক যে হারে বাড়ানো হয়েছে, তাতে বেআইনি ভাবে সোনা আমদানির প্রবণতা বাড়বে। সোনা পাচারের রমরমা হবে।”
বাজেট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে রাজ্যের স্থানীয় গয়না শিল্পমহলও। স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সম্পাদক বাবলু দে বলেন, “সোনার গয়নার দাম কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। ফলে চাহিদা কমবে। সঙ্গে ব্যবসাও কমবে। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি মার খাবেন কারিগররাও। কারণ গয়নার ওজনের উপর তাঁদের পারিশ্রমিক ঠিক হয়।” এর প্রতিবাদে ১৭, ১৮ ও ১৯ মার্চ গয়না বিক্রেতারা লাগাতার ধর্মঘট করবেন বলে জানিয়েছেন বাবলুবাবু।
ব্র্যান্ডেড নয়, এমন সোনার গয়নার উপরে উৎপাদন শুল্ক বসানোর প্রস্তাবে শঙ্কিত ছোট ব্যবসায়ীরা। কারণ এর ফলে তাঁরা নামী-দামি বড় ব্র্যান্ডের সঙ্গে অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়বেন বলে তাঁদের আশঙ্কা। |