নজর বিদ্যুতেও
পরিকাঠামো ক্ষেত্রে লগ্নি টানতে জোর
ন্নয়নের লক্ষ্য পূরণে প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিকাঠামো। এই বাজেটে তাই বাড়তি জোর দেওয়া হয়েছে এই ক্ষেত্রটিতে। এক দিকে করমুক্ত ‘ইনফ্রা-বন্ড’ ছেড়ে বাজার থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকা তোলার সংস্থান, পাশাপাশি পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগের জন্য বেসরকারি ক্ষেত্রকে বড়সড় উৎসাহ-ছাড়, অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় বাজেটে এই দুটি বিষয়েই বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। একই সঙ্গে দুর্দশাগ্রস্ত বিদ্যুৎ ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করতেও কিছু পদক্ষেপের প্রস্তাব করছেন।
প্রণববাবু বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, “দেশের উন্নয়নের প্রধান প্রতিবন্ধক পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর অভাব। এ কথা মাথায় রেখেই এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।” অর্থমন্ত্রী জানান, ২০১২-১৭ পর্যন্ত দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ৫০ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। গত বছর বিভিন্ন সংস্থাকে করমুক্ত ‘ইনফ্রা-বন্ড’ ছেড়ে ৩০ হাজার কোটি টাকা তোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এ বার তার পরিমাণ ৬০ হাজার কোটি করা হল। এনএইচএআই, আইআরএফসি, আইআইএফসিএল ও আরইসি-কে ১০০০ কোটি টাকা করে এবং হাডকো, ন্যাশনাল হাউসিং ব্যাঙ্ক, সিডবি এবং বন্দরগুলিকে ৫০০ কোটি টাকা করে তোলার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। প্রণববাবু ঘোষণা করেন, ৮ হাজার কোটি টাকা সংস্থানের লক্ষ্যে গত সপ্তাহেই একটি ‘ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেট ফান্ড’ আন্তর্জাতিক বাজারে ছাড়া হয়েছে। গ্রামীণ আবাসন খাতে বরাদ্দও এক হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে চার হাজার কোটি করা হয়েছে। আবাসন সংস্থাগুলি যাতে প্রয়োজনের ঋণ মসৃণ ভাবে পেতে পারে, তার জন্য একটি বিশেষ তহবিল, ‘ক্রেডিট গ্যারান্টি ট্রাস্ট ফান্ড’ গড়ার কথাও বলা হয়েছে বাজেটে।
পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ (পিপিপি মডেল)-এ প্রকল্প নির্মাণের উপরেও বিশেষ উৎসাহ-ছাড়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বাজেটে। কোনও সংস্থা পিপিপি প্রকল্পে বিনিয়োগে এগিয়ে এলে এক দিকে যেমন কর ও শুল্কে ছাড় পাবে, তেমনই আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কম সুদে ঋণ নেওয়ারও বিশেষ অনুমতি পাবে। নির্মাণযন্ত্র ও প্রকল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রেও বিশেষ শুল্কছাড়ের সুবিধা দেওয়া হবে সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আসা সংস্থাগুলিকে। সেচ, তেল-গ্যাস সঞ্চয় ও টেলি যোগাযোগে বেসরকারি বিনিয়োগ টানতে ‘সাপোর্ট টু পিপিপি ইন ইনফ্রাস্ট্রাকচার’ নামে নতুন একটু বহুমুখী উৎসাহ প্রকল্পের কথাও আজ ঘোষণা করেছেন প্রণববাবু। অনাবাসী ভারতীয়দের জন্যও পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগে করছাড় ঘোষণা করা হয়েছে।
শিল্পোন্নয়নে আর একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র বিদ্যুৎ। প্রধানমন্ত্রী যখন দেশের বাড়তি বিদ্যুৎ-চাহিদা মেটাতে পরমাণু শক্তির জন্য সওয়াল করছেন, দেশের অধিকাংশ চিরাচরিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র তখন নানা সমস্যায় ধুঁকছে। জনমোহিনী রাজনীতির চাপে দাম বাড়াতে না পেরে চরম অর্থসঙ্কটে প্রায় প্রতিটি বিদ্যুৎকেন্দ্র। ব্যাঙ্কগুলিও তাদের আর টাকা ধার দিচ্ছে না। তার উপরে কয়লা বা গ্যাসের মতো কাঁচামালের জোগানের সমস্যাও রয়েছে। কিছু দিন আগে দেশের প্রথম সারির শিল্পপতিরা প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে দেখা করে বিদ্যুতের অপ্রতুলতা নিয়ে নালিশ করে আসেন। তাৎক্ষণিক ভাবে সরকার কিছু পদক্ষেপের কথাও ঘোষণা করে।
আজকের বাজেটেও এ বিষয়ে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এক দিকে যেমন বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির জন্য বাড়তি কিছু অর্থ ও ঋণ সংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে, পাশাপাশি তাদের প্রয়োজনে কয়লা, গ্যাস বা ইউরেনিয়াম জ্বালানি আমদানিতে শুল্কছাড়েরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য টাকার অঙ্কে নেওয়া ঋণ শোধ করতে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কম সুদে ধারের সুযোগও দেওয়া হবে সংস্থাগুলিকে। বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির সঙ্গে সারা বছর কয়লা সরবরাহের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার জন্য কোল ইন্ডিয়াকে যে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সংসদে তা জানান অর্থমন্ত্রী।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.