ভিক্ষা করছে ২ নাবালিকা
সুস্থ বাবার চিকিৎসা করাতে হবে। চিকিৎসক জানিয়েছেন হাজার তিনেক টাকা দরকার। উপায় কি? আত্মীয়-স্বজনও কেউ পাশে নেই। নিরুপায় হয়ে নাবালিকা দুই মেয়ে মেডিক্যাল কলেজের করিডরেই বাবার চিকিৎসার জন্য ভিক্ষা করে টাকা তুলতে নেমে পড়েছে। কয়েকদিন ধরেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক সংলগ্ন করিডরে তাদের দুই বোনকে কখনও বসে থেকে, কখনও ঘুরে ভিক্ষা করতে দেখেছেন নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকেই।
বৃহস্পতিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফেই জানানো হয়, এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন নদীয়ার বাসিন্দা মইনুর। হার্নিয়ায় আক্রান্ত মইনুরবাবুর অস্ত্রোপচার করাতে হবে। মইনুরবাবু পেশায় দিনমজুর। দুই মেয়ে সবিনা এবং সীমা খাতুনকে নিয়ে তিনি সপ্তাহখানেক আগে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসেছেন। অসুস্থ মইনুরবাবুকে চিকিৎসক ভর্তি করায় দুই মেয়ে হাসপাতালের করিডরেই আশ্রয় নিয়েছেন। বয়স ৮/৯ বছর। তাদের এক জন আবার শারীরিক প্রতিবন্ধী। ২ পায়ে সমস্যা থাকায় আর পাঁচ জনের মতো স্বাভাবিক চলাফেরায় অক্ষম। হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীর পরিবারের লোকদের কাছ থেকে ভিক্ষা করেই তাদের দিন কাটছে।
ঘটনার কথা জানতে পেরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “ওই ব্যক্তির চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। তা ছাড়া ওই নাবালিকাদের থাকা-খাওয়ার একটা ব্যবস্থা করা জরুরি।” হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাস ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “যে চিকিৎসকরা মইনুরবাবুকে দেখেছেন তাঁরা তাঁকে হার্নিয়া অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি করেছেন। চিকিৎসার জন্য হাজার তিনেক টাকা দরকার বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু মইনুরবাবুর যা পরিস্থিতি তাতে তাঁকে বা তাঁর নাবালিকা মেয়েদের টাকা আনার জন্য কেন বলা হল বুঝতে পারছি না। আমাকেও কেউ কিছু জানাননি। খোঁজ নিয়ে জেনেছি তাঁর দুই নাবালিকা কন্যা হাসপাতালের করিডরে সে জন্য ভিক্ষে করতে অনেকেই দেখেছেন। মানবিকতা দিয়ে বিষয়টি দেখা দরকার ছিল। আমি বাইরে রয়েছি। তবে মইনুরবাবুর হার্নিয়া অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা হাসপাতালের তরফেই যাতে ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছি। হাসপাতালের তরফেই মইনুরবাবুর ওষুধ, পথ্য সমস্ত খরচ বহন করা হবে।” হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, হার্নিয়া অস্ত্রোপচারের জন্য ‘মেস’ বা বিশেষ সরঞ্জাম কিনতে হাজার তিনেক টাকা লাগে। দুই বোন জানান, চিকিৎসক তাঁদের জানিয়েছেন বাবার চিকিৎসার জন্য টাকা দরকার। তাই ভিক্ষে করছেন। ভিক্ষের টাকা থেকেই নিজেদের খাবারের খরচ করছেন। বাকি টাকা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের শল্য বিভাগে শয্যাশায়ী বাবার হাতে দিয়ে আসছেন। তাঁদের সঙ্গে মা বা অন্য কোনও বয়স্ক আত্মীয়-স্বজন কেউ নেই কেন? নাবালিকাদের জবাব, তারা ৫ বোন। মা ৩ বোনকে নিয়ে অন্য জায়গায় চলে গিয়েছেন। তাদের সঙ্গে থাকেন না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.