আঠাশের ধর্মঘট
হাজিরার খাতাই নেই, বেতন কাটা নিয়ে প্রশ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে
রকারি নির্দেশ সত্ত্বেও গত ২৮ ফেব্রুয়ারির সাধারণ ধর্মঘটের দিনে অনুপস্থিত শিক্ষকদের বেতন কাটা হবে কি না, সে ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি।
বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের উপরে সরকার এমন কোনও সিদ্ধান্ত চাপাতে পারে কি না, তা নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে। উপরন্তু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের হাজিরা খাতা বলে কিছু নেই। ফলে ধর্মঘটের দিন কোন শিক্ষক অনুপস্থিত ছিলেন, তা বোঝারও উপায় নেই। তাই, সরকার চাইলেও বেতন কাটার সরকারি নির্দেশ কার্যকর করা কঠিন বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের অনেকেই।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি, ১১টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা সাধারণ ধর্মঘটের দিনে সরকারি কর্মচারীদের পাশাপাশি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও কর্মস্থলে উপস্থিত থাকতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। রাজ্য শিক্ষা দফতরের তরফে ইতিমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে, ওই দিন যাঁরা অনুপস্থিত ছিলেন, তাঁদের বেতন কাটা হবে। কিন্তু রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ সরকারের সেই নির্দেশ কার্যকর করার সিদ্ধান্ত এখনও নিয়ে উঠতে পারেননি। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তব্য: ২৮ ফেব্রুয়ারি কাজে অনুপস্থিত শিক্ষকদের বেতন কাটা সংক্রান্ত সরকারি কোনও নির্দেশিকা তাদের কাছে পৌঁছয়নি।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চিন্ময় গুহ জানিয়েছেন, ধর্মঘটের দিন তাঁদের প্রায় সব শিক্ষক-শিক্ষিকা হাজির ছিলেন। তাই বেতন কাটার নির্দেশিকা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যকর করার তেমন প্রয়োজন নেই বলে তাঁর দাবি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বাসব চৌধুরী বলেন, “এই সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ আমরা পাইনি। পাওয়ার পরে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, উপাচার্যই নেবেন।” যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রদীপ ঘোষও জানিয়েছেন, শিক্ষকদের বেতন কাটা সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশিকা তাঁরা পাননি। পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, “বিশ্ববিদ্যালয় স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন কাটা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেবে প্রতিষ্ঠানের এগজিকিউটিভ কাউন্সিল। এ ব্যাপারে সরকারের সিদ্ধান্ত মানতে আমরা বাধ্য নই।”
বিশ্ববিদ্যালয়গুলির এ হেন মনোভাবের প্রেক্ষিতে সরকারের কী বক্তব্য?
রাজ্যের উচ্চশিক্ষা-সচিব সতীশ তিওয়ারি বলেন, “চিঠি পাঠানো হয়েছে। আশা করি, শীঘ্রই তা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় পৌঁছবে।” কিন্তু নির্দেশ মানতে কি তারা বাধ্য? সচিব বলেন, “বাধ্য কি না, দেখাই যাক!”
এ দিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পদস্থ আধিকারিক জানাচ্ছেন, শিক্ষকদের জন্য সেখানে কোনও হাজিরা খাতাই নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে তাঁরা ক্লাস নিলে ছাত্রদের হাজিরা খাতার মাধ্যমে তাঁদের উপস্থিতি জানা যায়। কিন্তু ধর্মঘটের দিন পড়ুয়ারা না-আসায় অধিকাংশ জায়গায় ক্লাস হয়নি। তাই কোনও শিক্ষক নিজের থেকে তাঁর ওই দিনের অনুপস্থিতির কথা ঘোষণা না-করলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে তা জানার উপায় কার্যত নেই।
ধর্মঘটের দিন ‘গরহাজিরা’র জন্য স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের বেতন কেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে যদি তা করা না-যায়, তবে শিক্ষা দফতরের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগও উঠতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষা প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের অনেকে। তাঁদের মতে, এ বিষয়ে স্কুলশিক্ষা এবং উচ্চশিক্ষা দুই দফতরের কাজে ফারাক থাকা উচিত নয়। তাদের ব্যবস্থায় বৈষম্য থাকলে বিষয়টি নিয়ে আইন-আদালতের সম্ভাবনাও থেকে যায় বলে ওই অধিকারিকেরা মনে করছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.