মহিলাদের উত্যক্ত করায় গ্রেফতার হলেন তৃণমূলের এক নেতা।
কিছু দিন আগেই সহবাসের পরে বিয়ের প্রশ্নে পিছিয়ে যাওয়ায় মালদহের গাজলে এক তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বুধবার মুর্শিদাবাদের সালারে তৃণমূল কার্যালয়ের সামনেই রাস্তার কলে স্নানরতা মহিলাদের কটূ মন্তব্য করায় গ্রেফতার করা হয় স্থানীয় ব্লক তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক হায়দর আলি-সহ তিন দলীয় কর্মীকে। হায়দর অবশ্য এই ঘটনাকে ‘পুলিশ চক্রান্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “এটা সম্পূর্ণ পুলিশের চক্রান্ত। আমরা এমন কিছু করিনি যা জন্য আমাদের গ্রেফতার করতে হবে।”
বৃহস্পতিবার আদালত তাঁদের জামিনে মুক্তি দিলেও ওই ঘটনার নিন্দা করেছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মৎস্য প্রতিমন্ত্রী সুব্রত সাহা। তিনি বলেন, “হায়দর তৃণমূলের সদস্য। তবে ওই ঘটনায় যারাই জড়িত থাক না কেন ঘটনাটি নিন্দনীয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার দাবি করছি।” সালারের দফাদারপাড়া এলাকায় ব্লক তৃণমূলের কার্যালয়ের সামনেই রয়েছে একটি নলকূপ। গ্রীষ্মের শুরুতেই ওই এলাকায় জলের আকাল দেখা দেওয়ায় স্থানীয় গ্রামবাসীদের অনেকেই ওই নলকূপেই স্নান সারেন। বেলা বাড়লে সেখানে ভিড় করেন পাড়ার মহিলারা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই ওই নলকূপের লাগোয়া তৃণমূল কার্যালয় থেকে কটূ মন্তব্য উড়ে আসছিল। কার্যালয়ের বাইরে বেরিয়ে কয়েক জন তৃণমূল সমর্থক অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিও করতেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা জুলেখা বেগমের অভিযোগ, “বুধবার ওঁদের আচরণ সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। বিকেলে আমি ও পাড়ার কয়েক জন মহিলা ওই নলকূপে স্নান করছিলাম। সেই সময় অশ্লীল কটূক্তি শুরু করে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা। এটা নতুন ঘটনা নয়। আমরা তাই অত গা করিনি। প্রতি দিনই ওরা কটূক্তি করত। কিন্তু এ দিন ওরা এমন কিছু মন্তব্য করে যে আর থাকতে পারিনি।” মহিলারা এরপরেই দল বেঁধে স্থানীয় সালার থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান।
জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “স্থানীয় মহিলাদের স্নান করার সময়ে অভিযুক্তেরা কটূক্তি করছিল বলে জানা গিয়েছে। সে জন্যই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ বোঝাতে গেলে তাদেরও হেনস্থা করা হয়।” পুলিশ জানায়, জুলেখা বেগমের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল থানার দুই পুলিশ কর্মী। অভিযোগ, সেই সময় উল্টে পুলিশ কর্মীদের উপরেই চড়াও হয় ওই কার্যালয়ে উপস্থিত তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা। পুলিশকে গালিগালাজ করতে থাকে তারা। এমনকী দুই পুলিশ কর্মীকে ধাক্কাধাক্কি দিয়ে পাল্টা হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে জেলা পুলিশ সুপারের অভিযোগ। এরপরেই থানা থেকে বড়সড় পুলিশ বাহিনী গিয়ে ওই নেতা-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। |