|
|
|
|
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় |
১০ হাজার টাকার কাজেও এখন টেন্ডার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছেন নতুন উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী। তিনি জানিয়েছেন, এ বার থেকে ১০ হাজার টাকার কেনাকাটাতেও দরপত্র আহ্বান করা হবে। যে সংস্থা সঠিক দামে উপযুক্ত সামগ্রী সরবরাহ করবে, তাদেরই বরাত দেওয়া হবে। এ-সব ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। গুটিকয় ব্যক্তি বা সংস্থাই সব কিছু কেনাকাটার বরাত পেত। উপাচার্যের কথায়, “আগে অনেক ক্ষেত্রে টেন্ডারের ক্ষেত্রে ত্রুটির কথা শুনেছি। আগে কী হয়েছে তা দেখব না, এ বার থেকে ১০ হাজার টাকার কাজেও টেন্ডার করা হবে। স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন তৈরিতে আমি দায়বদ্ধ। সেটাই করার চেষ্টা করব।”
শুধু তাই নয়, সময়ে পরীক্ষার ফলপ্রকাশ না হওয়া, রিভিউয়ের ফলপ্রকাশ নিয়ে টালবাহানাও ঘটেছে অতীতে। এ বার থেকে পরীক্ষার ফলও যথা সময়ে প্রকাশের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। ফলপ্রকাশে কোনও রকম টালবাহানা চলবে না বলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের জানিয়ে দিয়েছেন উপাচার্য। উপাচার্যের কথায়, “পরীক্ষার ফলপ্রকাশ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল বিষয়। এ ক্ষেত্রে অকারণ ঢিলেমি চলবে না। এ বার থেকে প্রতিটি পরীক্ষার ফলই নিয়ম অনুযায়ী যথা সময়ে প্রকাশ করা হবে।” নিয়ম অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলপ্রকাশের কথা কোনও পরীক্ষার ৪৫ দিনের মধ্যে। এই সময়ের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগকে এখন থেকে ফলপ্রকাশের জন্য বলা হয়েছে। কলেজের ক্ষেত্রে ফলপ্রকাশের সময় ৯০ দিন। উপাচার্য বলেন, “এ ক্ষেত্রে আমরা ৭০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশের চেষ্টা করব।” তবে কিছুতেই তা ৯০ দিন পেরোবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। একই ভাবে ‘রিভিউ’য়ের ফলও ৪৫ দিনের মধ্যে প্রকাশ করা হবে বলে তিনি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে একদলীয় শাসন ছিল। যেখানে শাসকদলের সঙ্গে প্রশাসনিক আধিকারিকেরাও যুক্ত হয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ফলে কোনও ক্ষেত্রে স্বজনপোষণ, দুর্নীতি, অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও তার আর বিহিত হত না হলে অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষাগারে সামগ্রী সরবরাহ ও অন্যান্য জিনিসপত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে গুটিকয় ব্যক্তিই সব সময়ে সুযোগ পেতেন বলে অভিযোগ। বহু ক্ষেত্রে দরপত্র আহ্বানের বিষয়ও থাকত না। শুধু তাই নয়, কর্মী ও শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও একই রকম অভিযোগ উঠেছে অনেক বার। ‘ইন্টারভিউ’ হওয়ার আগেই কে চাকরি পাবেন অনেক সময়ে জানাজানি হয়ে যেত বলে অভিযোগ। এ বার থেকে প্রতিটি ক্ষেত্রেই স্বচ্ছতা বজায় রাখার পাশাপাশি আরও বেশি ও দ্রুত কাজের উপরে জোর দিচ্ছেন উপাচার্য। বড় প্রকল্প রূপায়ণে স্বীকৃত বড় সংস্থাকেই বরাত দেওয়া হচ্ছে। চাকরির ‘ইন্টারভিউ’ কারা নেবেন তা-ও যতটা সম্ভব গোপন রাখা হচ্ছে। আর সময়ে প্রতিটি কাজ করার জন্যও পদক্ষেপ করা হচ্ছে। উপাচার্যের কথায়, “বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ অটুট রাখা, স্বচ্ছতা বজায় রাখা ও নিয়ম মেনে প্রত্যেকেরই সময়ে নিজের কাজ করা--এই তিনটি বিষয়ের উপরেই আমি বেশি জোর দিচ্ছি। তা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব।” |
|
|
|
|
|