|
|
|
|
অভিযুক্ত চিকিৎসক ফেরার |
সহবাসের পরে বিয়েতে আপত্তি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
প্রথা মেনেই বিয়ের আগে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে কিছু দিন ছিলেন আদিবাসী এক তরুণী। অভিযোগ, সেই সময় সহবাস করলেও পরে তাঁকে বিয়ে করতে অসম্মত হয় চিকিৎসক পাত্র। অগত্যা পাত্রের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ এনে থানার দ্বারস্থ হলেন পাত্রী।
রাজকিশোর হেমব্রম নামে বছর আঠাশের অভিযুক্ত ওই চিকিৎসক বেলপাহাড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার। গত বছর নভেম্বরে বাঁকুড়ার ইঁদপুর থানার বাসুদেবপুর গ্রামের বছর আঠারোর এক তরুণীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে ঠিক হয়। রাজকিশোরের বাড়ি বিনপুর থানার সাহাড়ি গ্রামে। কর্মসূত্রে বেলপাহাড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্র লাগোয়া কোয়ার্টারে থাকতেন তিনি।
দুই বাড়িতে পাকা কথার পরে বিয়ের প্রস্তুতি শুরু হয়। আদিবাসীদের প্রথা অনুযায়ী, বিয়ের আগে পাত্রীকে হবু শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে থাকতে হয়। সেই মতো গত বছর ডিসেম্বরে বারো দিনের জন্য ওই তরুণীকে সাহাড়ি গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন রাজকিশোরের অভিভাবকেরা। সেখানে থাকাকালীন রাজকিশোর ওই তরুণীর সঙ্গে একাধিক বার সহবাস করেন বলে অভিযোগ। কিন্তু পরে ওই তরুণীর শারীরিক সমস্যা রয়েছেএই যুক্তিতে বিয়ে ভেঙে দেয় রাজকিশোরের পরিবার।
ওই তরুণীর দাবি, দু’টি পরিবারের তরফে বিয়ের কথা পাকা হয়ে গিয়েছিল। ফলে, বিয়ের আগে দু’জনের মধ্যে মেলামেশায় আপত্তি ছিল না কারও। পরে রাজকিশোর ও তাঁর বাড়ির লোকেরা বিয়েতে অরাজি হওয়ার পাত্রীপক্ষের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। দফায়-দফায় আলোচনায় বসে অনেক বুঝিয়ে-সুজিয়েও পাত্রপক্ষকে বিয়েতে রাজি করানো যায়নি। শেষ পর্যন্ত রাজকিশোর ও রাজকিশোরের বাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে বিনপুর থানায় গত ৭ মার্চ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই তরুণী। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। রাজকিশোরের বাবা, মা, বোন, মামা ও মামিমার বিরুদ্ধেও প্রতারণা ও ধর্ষণে সাহায্য করার অভিযোগ রয়েছে।
এ দিকে, অভিযোগ দায়ের হয়েছে জেনে গত ৮ মার্চ সপরিবারে ‘ফেরার’ হয়ে যান রাজকিশোর। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গত ৮ মার্চ বেলপাহাড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিএমওএইচ-এর দফতরে ছুটির দরখাস্ত জমা দেন রাজকিশোর। তারপর থেকে তিনি আর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসছেন না। মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় অভিযুক্ত চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র অসিত বিশ্বাস বলেন, “বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন, তাই এ নিয়ে মন্তব্য করব না।”
ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার সুপার গৌরব শর্মা বলেন, “৬ অভিযুক্তই পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” এসপি জানান, তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ওই তরুণীর গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করানো হয়েছে। |
|
|
|
|
|