উদ্বিগ্ন জেলা নেতৃত্ব
কেশপুরে ফের তৃণমূলের গোষ্ঠী-সংঘর্ষ, আহত ১২
ফের তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ফের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল কেশপুরে। আহত হলেন ১২ জন। কমবেশি জখম হয়েছেন আরও অন্তত ১৬ জন। সেই সঙ্গে বাড়ি ভাঙচুর, লুঠপাটেরও ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার সাতসকালে কেশপুরের ট্যাঙাগেড়িয়া ও তার আশপাশের এলাকায় সংঘর্ষ বাধে শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। আহতদের প্রথমে কেশপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ৮ জনকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কল্যাণ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “এলাকার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে গ্রামে পুলিশ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।” সংঘর্ষের ঘটনা ঘিরে অবশ্য এলাকায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও উদ্বেগ রয়েছে। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, গোলমালে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
মেদিনীপুর মেডিক্যালে এক আহত। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীই ঘটনার জন্য ঘুরেফিরে সেই একে অন্যের ঘাড়েই দায় চাপিয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের অভিযোগ, ‘অন্য’ গোষ্ঠীর লোকজন সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। নতুন করে কেশপুরকে অশান্ত করার চেষ্টা চলছে। যদিও বিধানসভার বাইরে বিরোধী দলনেতা তথা পশ্চিম মেদিনীপুরেরই সিপিএম বিধায়ক সূর্যকান্ত মিশ্রের মন্তব্য, “যা হচ্ছে তা তৃণমূলেরই মধ্যেকার গণ্ডগোল। সিপিএম ওখানে কোথায়?” বস্তুত, রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই কেশপুরের বহু সিপিএম নেতা-কর্মীই এলাকাছাড়া। নতুন শাসকদল তৃণমূলেরই একচ্ছত্র আধিপত্য। কিন্তু শাসকদলেরই অভ্যন্তরীণ বিবাদে বারে বারেই উত্তপ্ত হয়েছে কেশপুর। এমনকী পরিস্থিতির জেরে প্রশাসনকে ১৪৪ ধারাও জারি করতে হয়েছিল কেশপুরে।
বৃহস্পতিবারের ঘটনা ঘিরে সামনে চলে এসেছে ব্লক তৃণমূল সভাপতি আশিস প্রামাণিকের সঙ্গে ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি শেখ আলহাজউদ্দিনের বিরোধ। যদিও প্রকাশ্যে দুই নেতারই বক্তব্য, এ সবই অপপ্রচার। তবে, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকার নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, সেই নিয়েই সংঘর্ষের সূত্রপাত। বুধবার রাত থেকেই এলাকা উত্তপ্ত হতে শুরু করেছিল। বৃহস্পতিবার সকাল হতেই সংঘর্ষ বাধে ব্লক তৃণমূল সভাপতির অনুগামীদের সঙ্গে ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতির অনুগামীদের মধ্যে। ক’মাস আগে তৃণমূল যে ক’জন কর্মীকে সাময়িক ভাবে দল থেকে বের করে দিয়েছিল, তাদের একাংশও সংঘর্ষে মদত দেয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার সাতসকালেই ট্যাঙাগেড়িয়া, রণপাড়া, ঝাঁটিয়াড়া এলাকায় অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। আহতদের একে একে প্রথমে কেশপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে মনসুর আলি, সলমন আলি, হাসিনা বিবি, শেখ হাসিবুল-সহ ৮ জনকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বেশ কয়েকজন মাথায় চোট পান। কেন এই ঘটনা? ব্লক তৃণমূল সভাপতি আশিসবাবুর দাবি, “কিছু দুষ্কৃতী হামলা চালিয়েছে। লুঠপাঠও করেছে। দলের কেউ কেউ তাদের মদত দিচ্ছে।” ব্লক সভাপতির মতোই গোষ্ঠী-সংঘর্ষের কথা এড়িয়ে ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি আলহাজউদ্দিন বলেন, “গ্রাম্য বিবাদ থেকেই গোলমাল বাধে।” তবে, কেশপুরের মতো এলাকায় ঘনঘন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দেওয়ায় উদ্বিগ্ন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের এক জেলা নেতা বলেন, “ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই সন্ত্রাস চলেছে। সাধারণ মানুষ অত্যাচারিত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে এমন ঘটনা অনভিপ্রেত। আমরা মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, ক্ষমতায় এলে এলাকায় শান্তি ফেরাব। কিন্তু, ওখানে অশান্তির ঘটনাই বেশি ঘটছে!”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.