নিজস্ব সংবাদদাতা • পাণ্ডুয়া |
মহিলাকে দিয়ে ফোন করিয়ে ফাঁদ পেতেছিল পুলিশ। ‘সুন্দরী’র পাতা সেই জালেই পা দিয়ে আটকা পড়ল দাগি এক ব্যাঙ্ক ডাকাত। তাকে জেরা করে গ্রেফতার হয়েছে ডাকাত দলের আরও তিন জন।
পুলিশ সূত্রের খবর, দক্ষিণবঙ্গে গত কয়েক মাসে ১৮টি ব্যাঙ্ক ডাকাতির ঘটনা ঘটে। কিন্তু ডাকাতদের বাগে আনতে নাজেহাল হচ্ছিল পুলিশ। তদন্তকারীরা হন্যে হয়ে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করলেও ঘটনাগুলির কিনারা হয়নি এত দিন। পুলিশের দাবি, ধৃতদের জেরার সূত্র ধরে শুধু হুগলি নয়, অন্য কয়েকটি জেলাতেও ব্যাঙ্ক ডাকাতির ঘটনার নিষ্পত্তি করা যাবে। ধৃতেরা ইতিমধ্যেই কবুল করেছে, হুগলি ছাড়াও নদিয়া, মুর্শিদাবাদ এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ব্যাঙ্ক ডাকাতির সঙ্গে তাদের দলবল জড়িত। |
মাসখানেক আগে পাণ্ডুয়ার সিমলাগড়ে একটি গ্রামীণ ব্যাঙ্কে ডাকাতি হয়। সেই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ওই চার জনকে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন জেলায় হানা দেন মগরার সার্কেল ইনস্পেক্টর নন্দন পানিগ্রাহী এবং পাণ্ডুয়ার ওসি প্রদীপ দা। দুই ২৪ পরগনার চম্পাহাটি, দেগঙ্গা, সন্দেশখালি এবং হৃদয়পুর থেকে তাঁরা ওই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করেন। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম সত্যজিৎ দাস, সাধন সর্দার, অজিত দে এবং বিশ্বজিৎ করণ। সাধন দলের পাণ্ডা। ধৃতদের কাছ থেকে ২টি রিভলভার, একটি মোবাইল ফোন, ১১ হাজার টাকা এবং চারটি তাজা কার্তুজ উদ্ধার হয়। ধৃতদের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। ওই ঘটনায় জড়িত আরও দুই দুষ্কৃতীর খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। হুগলির পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “ধৃতেরা অপরাধের কথা কবুল করেছে। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ডাকাতির ঘটনায় তাদের যোগসাজস নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।” তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা জানিয়েছেন, লুঠ হওয়া বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ জানায়, গত ২২ ফেব্রুয়ারি পাণ্ডুয়া থানার সিমলাগড়ে একটি গ্রামীণ ব্যাঙ্কে হানা দেয় ছয় দুষ্কৃতী। আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে গ্রাহক এবং ব্যাঙ্ককর্মীদের একটি ঘরে আটকে ম্যানেজারের কাছ থেকে ভল্টের চাবি কেড়ে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা লুঠ করে তারা। সকলের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। ঘটনার তদন্তে নেমে বিভিন্ন সূত্রে খোঁজখবর শুরু করে হুগলি পুলিশ। ‘মহিলার টোপ’ দিয়ে প্রথমে অজিতকে ধরেন তদন্তকারীরা। তার পরে একে একে বাকিদের ধরা হয়। জেলা পুলিশের পাশাপাশি সিআইডির একটি দল এ দিন সন্ধ্যায় হুগলিতে এসে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
|