সমাজবাদী পার্টি রয়েছে সমাজবাদী পার্টিতেই! দলের ভাবমূর্তি বদলের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন তরুণ মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। কিন্তু আজ তাঁর শপথগ্রহণের মঞ্চেই সমর্থকদের তাণ্ডব বুঝিয়ে দিল, কাজটা তত সহজ
|
শপথ নিচ্ছেন
রাজা ভাইয়া। |
নয়। শুধু তা-ই নয়, সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া অখিলেশের মন্ত্রিসভায় এ দিন এসেছেন বিতর্কিত রঘুরাজ সিংহ ওরফে রাজা ভাইয়া। খুন ও অপহরণের একাধিক মামলা রয়েছে তাঁর নামে। ফলে উত্তরপ্রদেশের দিনবদল কতটা হবে, তা নিয়ে আজ থেকেই প্রশ্ন উঠেছে।
মায়াবতীর আগে লখনউয়ের তখতে ছিলেন অখিলেশের বাবা মুলায়ম সিংহ যাদব। সেই আমলে গুণ্ডারাজের অভিযোগ এখনও তাড়া করে বেড়ায় সমাজবাদী নেতৃত্বকে। কিন্তু এই ‘গুণ্ডারাজ’ আর হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অখিলেশ। কিন্তু দলের নতুন মুখ তুলে ধরার প্রতিশ্রুতি অন্তত প্রথম দিনেই জলে গেল! একটি কলেজের মাঠে অখিলেশ যখন শপথ নিচ্ছেন, তখনই মঞ্চে ওঠার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন সমর্থকরা। হইচই শুরু হয়। শপথের পর অখিলেশ এবং রাজ্যপাল চলে যেতেই শুরু হয় কর্মী-সমর্থকদের ‘আনন্দোৎসব’। মঞ্চ দখল করে ফেলেন তাঁরা, ফুলের মালা ছিঁড়ে অতিথিদের দিকে ফুল ছুড়তে থাকেন। সোফায় উঠে লাফাতে থাকেন অনেকে। চলে ভাঙচুর। তাতে বাধা না দিয়ে যোগ দেয় পুলিশও। অতিথিদের মধ্যে তখন কারা রয়েছেন? সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পবনকুমার বনশল ও কংগ্রেস নেতা মোতিলাল ভোরা, শিল্পপতি অনিল অম্বানী, সুব্রত রায় এবং অভিনেত্রী ও প্রাক্তন সাংসদ জয়া বচ্চনও। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীর প্রতিনিধি হিসেবে এসেছিলেন নাসিমুদ্দিন সিদ্দিকি ও স্বামীপ্রসাদ মৌর্য। পরে সপা কর্মীদের ‘উচ্ছ্বাস’ ছড়িয়ে পড়ে রাস্তাতেও। যানজট থেমে যায় শহর। |
বুধবারই অবশ্য আর এক মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের উচ্ছ্বাস দেখেছে দেশ। যা অবশ্য মাত্রা ছাড়ায়নি। পঞ্জাবে অকালি দলের নেতা প্রকাশ সিংহ বাদলের শপথ অনুষ্ঠানে আয়োজনও ছিল এলাহি। মোহালির ছপ্পর ছিরি গ্রামে ফতেহ বুর্জ উচ্চতায় কুতব মিনারের চেয়ে উঁচু। সেখানেই শপথ নেন প্রকাশ। হাজির ছিলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হেলিকপ্টার, খাওয়াদাওয়া, ভাংড়া নাচকী ছিল না? তবে তা নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, শপথ অনুষ্ঠানে কেন তিন কোটি টাকা খরচ করেছে অকালি দল ও বিজেপি-র জোট সরকার?
আর বৃহস্পতিবার অখিলেশ জড়ালেন আর এক বিতর্কে। সমর্থকদের তাণ্ডব এবং রাজা ভাইয়াকে মন্ত্রিসভায় নেওয়া নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। সমর্থকদের প্রসঙ্গে অখিলেশ বলেন, “এমন আর ঘটবে না।” তবে রাজা ভাইয়া প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দিনভর এই বিতর্ক সামলে রাতে মন্ত্রিসভায় ‘জনমোহিনী’ দু’টি সিদ্ধান্ত নেয় তাঁর মন্ত্রিসভা। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণদের ল্যাপটপ এবং কম্পিউটার ট্যাবলেট দেওয়া এবং ১০০টাকা করে বেকার ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। দশম শ্রেণি উত্তীর্ণ মুসলিম মেয়েদেরও বিয়ে বা পরবর্তী শিক্ষার জন্য আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে এ জন্য বছরে অন্তত ৪৪০০ কোটি টাকা খরচ হওয়ার কথা। এ দিন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়নের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। |