বিয়ে করতে যাওয়ার পথে গ্রেফতার হল বর। অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক তরুণীর সঙ্গে সহবাসের পরে অন্য এক পাত্রীকে বিয়ে করতে যাচ্ছিল সে। যদিও ইতিমধ্যেই তার বিয়ে হয়ে গিয়েছে বলে অভিযুক্ত দাবি করেছে।
পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম রাজু মিস্ত্রি। বাড়ি মেমারির পাল্টা রোড গ্রামের ডিভিসি পাড়ে। বুধবার রাতে তাঁর পাড়ারই এক তরুণী মেমারি থনায় অভিযোগ জানান, দীর্ঘদিন ধরে ‘প্রেম’ এবং বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের পরে রাজু তাঁদের ‘সম্পর্ক’ কথা অস্বীকার করছেন। অন্যত্র তার বিয়ের ব্যবস্থা হয়েছে। |
আদালতে রাজু মিস্ত্রি। নিজস্ব চিত্র। |
এই অভিযোগ পেয়ে পুলিশ রাতেই রাজুর খোঁজ নিতে গিয়ে দেখে, বাড়িতে তালাবন্ধ। গ্রামে খবর মেলে, জামালপুরের আঝাপুরে বিয়ে করতে চলেছেন রাজু। এর পরেই মামলার তদন্তকারী অফিসার, মেমারি থানার সাব-ইনস্পেক্টর সঞ্জয় রায় আঝাপুর মোড় থেকে বরবেশী রাজুকে গ্রেফতার করেন। বৃহস্পতিবার বর্ধমান আদালতে তোলা হলে ধৃতকে ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তরুণীর গোপন জবানবন্দিও নথিভুক্ত করানো হয়েছে।
তরুণীর অভিযোগ, প্রায় চার বছর ধরে রাজু তাঁর সঙ্গে মেলামেশা করছেন। দুই তরফের অভিভাবকেরাই এই সম্পর্কের কথা জানতেন। মাঝে তাঁরা রাজস্থানে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে রাজু তাঁর সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর মতোই ছিলেন। কিন্তু ফিরে এসে রাজু তাঁর সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করে দেন, এড়িয়ে চলতে শুরু করেন। দিন কুড়ি পরে রাজুর বাড়িতে গেলে তাঁর বাবা সুভাষ মিস্ত্রি ও পরিবারের অন্যেরা তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তাঁকে প্রায় গলাধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পাড়ার লোকের কাছেও রাজু তাঁদের ‘সম্পর্কে’র কথা অস্বীকার করেন। এর পরেই তিনি খবর পান, রাজুর বাবা অন্যত্র তাঁর বিয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছেন।
সুভাষবাবু সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “ভাল ঘরে ছেলের বিয়ে দিচ্ছি। মেয়েটি তা ভেস্তে দেওয়ার চক্রান্ত করছে। কয়েক দিন আগে মেয়েটি বাড়িতে এসে দাবি করে, সে আমাদের বৌমা। আমরা এ সবের কিছুই জানতাম না।” রাজু আবার পুলিশের কাছে দাবি করেছে, বুধবার দুপুরেই তাঁর আঝাপুরের কণের সঙ্গে বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তবে পুলিশ তাতে আমল না দিয়ে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের মামলা রুজু করেছে। সিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক ইয়াসমিন আহমেদ রোজুকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। |