শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার পর পেরিয়ে গিয়েছে আড়াই মাস। প্রথম ইউনিট টেস্টও হয়ে গিয়েছে। অথচ সরকারি পাঠ্যপুস্তক এসে পৌঁছয়নি জেলার বহু স্কুলে। বিপাকে পড়েছে পড়ুয়ারা। যথাযথ কৈফিয়ৎ দিতে পারছেন না স্কুল কর্তৃপক্ষও।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক আবদুল হাই জানান, বিষয়টি সর্বশিক্ষা দফতর বলতে পারবে। সর্বশিক্ষা দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক সুদেষ্ণা মিত্র আবার জানান, সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার এক্তিয়ার তাঁর নেই। সব মিলিয়ে পরিস্থিতির সুরাহা কবে হবে তা নিশ্চিত করে জানেন না কেউই।
জেলার বিভিন্ন স্কুলে খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, এক-এক স্কুলে এক-এক রকম পাঠ্যপুস্তক আসেনি। সরকারি নিয়মে, ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণিতে ইংরেজি, গণিত, পরিবেশ পরিচয় এবং ইতিহাস বই দেওয়ার কথা। অষ্টম শ্রেণির জন্য বরাদ্দ ইংরাজি, গণিত এবং পরিবেশ পরিচয়। দুর্গাপুর প্রজেক্টস গার্লস হাইস্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়ারা পরিবেশ পরিচয় এবং সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়ারা ইতিহাস বই পায়নি। মঙ্গলকোটের কোঁয়ারপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণির গণিত বই এবং অষ্টম শ্রেণির ইংরেজি বই আসেনি। কাঁকসার সিলামপুর হাইস্কুলে আসেনি ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস এবং অষ্টম শ্রেণির ইংরাজি ও ইতিহাস বই। ওই স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়ার সংখ্যা ১৭০। অথচ ইংরেজি বই পাঠানো হয়েছে মাত্র ৩৫টি।
বেশির ভাগ স্কুলে মার্চের প্রথম সপ্তাহেই প্রথম ইউনিট টেস্ট নেওয়া হয়ে গিয়েছে। পাঠ্যপুস্তক ছাড়াই পরীক্ষা দিয়েছে পড়ুয়ারা। স্বাভাবিক ভাবেই, কী ফলাফল হবে তা নিয়ে তারা সংশয়ে। তাদের বক্তব্য, পাঠ্যপুস্তকের সংখ্যা অপ্রতুল হলেও সহপাঠীদের কাছে সময়-সুযোগ মতো বই চেয়ে পড়াশোনার কাজ এগোনো যায়। কিন্তু বেশির ভাগ সেই সুযোগও পায়নি। সিলামপুর হাইস্কুলের (উচ্চ মাধ্যমিক) প্রধান শিক্ষক সুকুমার পাল জানান, বিষয়টি তিনি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েছেন। কোঁয়ারপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক, স্যাগেসিয়াস টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সহ-সম্পাদক উদয় চৌধুরী সংগঠনের তরফে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে দরবার করেছেন বলেও জানান।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক আবদুল হাই জানান, বই আসে সর্বশিক্ষা দফতরের মাধ্যমে। তিনি বলেন, “পড়ুয়ারা কেন বই পায়নি তা বলতে পারবে সর্বশিক্ষা দফতরই।” তারা আবার কিছুই জানাতে নারাজ। আপাতত এই দড়ি টানাটানিতেই ঝুলে আছে জেলার হাজার হাজার স্কুল-পড়ুয়ার ভাগ্য। |