তোর্সার জল শোধন করে বাড়িতে সরবরাহের পরিকল্পনা নিল কোচবিহার পুর কর্তৃপক্ষ। কেন্দ্রীয় সরকারের আরবান ইন্সফ্রাস্ট্রাকচার ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড স্মল স্কিম ফর মিডিয়াম টাউন (ইউ আই ডি এস এস এম টি) প্রকল্পে পরিকল্পনা রূপায়ণ করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের ওই প্রকল্পে তোর্সা নদীর জল উত্তোলন করে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে শোধন করে তা বাড়িতে সরবরাহের জন্য বরাদ্দ চেয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। কেন্দ্রীয় সরকার ৩৭ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে। তার ভিত্তিতেই প্রকল্প রূপায়নের প্রাথমিক সমীক্ষা হয়েছে। শোধন করার পরে তোর্সার জল জলাধারে তোলা হবে। তাই কোথায় জলাধার ও ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসানো হবে সে ব্যাপারে মাটিপরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। পুর চেয়ারম্যান বীরেন কুণ্ডু বলেন, “আগামী ২ বছরের মধ্যে পুরো কাজ সম্পূর্ণ করা যাবে বলে আশা করছি।” শহরের ২০ ওয়ার্ডে ১০ হাজারের বেশি বাসিন্দার বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে পানীয় জলের চাহিদা ২৫ হাজার গ্যালন। পাম্পের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জল তুলে তা সরবরাহ করা হয়। সেই পরিকাঠামোও মান্ধাতার আমলের বলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। সংযোগ থাকলেও গরমের মরসুমে জলের চাপ এতটাই কমে যায় যে বাসিন্দারা নাজেহাল হন। ততিনটি জলাধারের সর্বোচ্চ জল মজুত করার ক্ষমতা ২ লক্ষ লিটার। পাম্প বিকল হলে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, পরিস্থিতি সামলাতে চলতি মাস থেকেই শহরে নতুন করে জলের সংযোগ দেওয়া স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে নয়া প্রকল্প সঠিক ভাবে বাস্তবায়িত করা গেলে সমস্যা মিটবে। শহর লাগোয়া তোর্সার কালীঘাট এলাকা থেকে জল তুলে তা ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে শোধন করার পরিকল্পনা হয়েছে। পরে ওই জল জলাধারে তুলে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে। বিবেকানন্দ স্ট্রিটের নন্দনকানন লাগোয়া এলাকায় ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ও জলাধার বসানোর ব্যাপারে পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়েছে। লাগোয়া আরও কয়েকটি এলাকায় সমীক্ষা চালানোর পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। পুর চেয়ারম্যান বলেন, “প্রকল্প চালু হলে শহরের পানীয় জলের সমস্যা থাকবে না। দ্রুত ওই কাজ সম্পূর্ণ করার ওপরে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।” পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের মহানন্দ সাহার বক্তব্য, যতক্ষণ না ওই প্রকল্পের উদ্বোধন না হচ্ছে ততক্ষণ তাঁরা পুর কর্তৃপক্ষের কোনও বিষয়কে গুরুত্ব দিতে চান না। তিনি বলেন, “জলের সমস্যা মেটানো নিয়ে আগেও বহু প্রতিশ্রুতি শুনে এসেছি, কাজ হয়নি। পরের বোর্ড মিটিংয়ে আমরা ওই প্রকল্পের শিল্যান্যাসের দিন ঘোষণার দাবি জানাব।” |