সোমবার রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় স্বস্তি ফিরল শিলিগুড়িতে। ওই দিন গভীর রাতে শিলিগুড়ি এবং লাগোয়া এলাকায় বৃষ্টি নামে। রাতভর কয়েক পশলা বৃষ্টির পরে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির জেরে শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এক ধাক্কায় প্রায় ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস নেমে গিয়েছে। সোমবারও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যেখানে ছিল প্রায় ২৯ ডিগ্রির কাছাকাছি সেখানে মঙ্গলবার দুপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অবশ্য ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশেই ঘোরাফেরা করছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নেমে যাওয়ায় আলমারি তুলে রাখা গরম পোশাক ফের বার করে অনেককেই এদিন সকালে রাস্তায় বার হন। তবে বন ও প্রশাসনের কর্তারা স্বস্তিতে আপাতত জঙ্গলে পাতা পোড়ানোর ধোঁয়া থেকে বাসিন্দারা কয়েকদিন রেহাই পাওয়ায়। |
সপ্তাহ দুয়েক ধরে শিলিগুড়ি লাগোয়া বিভিন্ন বনাঞ্চলের শুকনো পাতা ও ঘাসে রাখালেরা আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় সন্ধ্যার পরে শহরের আকাশ ঘেকে যাচ্ছিল ধোঁয়ায়। গত রবিবার অতিরিক্ত ধোঁয়া জমে যাওয়ায় বাসিন্দাদের অনেকেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। বিষাক্ত গ্যাস লিক হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ায় বাসিন্দারা অনেকেই রাস্তায় বার হয়ে পড়েন। ধোঁয়ার প্রকৃত কারণ জানতে পেরে রাতেই রাস্তায় বার হয়ে শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশ এবং দমকল কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেন। বৃষ্টি নামায় এ বার জঙ্গলে আগুন লাগানো এবং ধোঁয়ার প্রকোপ কমবে বলে আশা করছেন বন কর্মীরাও। শিলিগুড়ির বিধায়ক বলেন, “বৃষ্টি হওয়ায় অনেকটাই নিশ্চিত বোধ করছি। তবে জঙ্গলে এ ভাবে যাতে আগুন লাগানো বন্ধ হয় সে ব্যবস্থা নিতে বন দফতরের সঙ্গে কথা বলব।” উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জেরেই শিলিগুড়ির আবহাওয়ায় পরিবর্তন। |
বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিভাগের প্রধান সুবীর সরকার বলেন, “পশ্চিমী ঝঞ্ঝা থেকেই এই বৃষ্টি হয়েছে। তবে বৃষ্টির পরিমাণ খুবই সামান্য। এক মিলিমিটার। বুধবারের মধ্যে আবহাওয়া ফের স্বাভাবিক হয়ে যাবে।” বৃষ্টি সামান্য হলেও চা বাগান এবং বনাঞ্চল অনেকটাই উপকৃত হল বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিভাগের প্রধান। কার্শিয়াঙের ডিএফও ওয়াই টি এডেনও বলেন, “জঙ্গলের জন্য আরও বৃষ্টি চাই।” চৈত্র বৈশাখের ঝড়বৃষ্টি শুরু হলেই পাতা পোড়ানোর উৎপাত থেকে জঙ্গল রেহাই পাবে বলে মনে করছেন বনকর্মীরা। |