অনাদায়ি ঋণ
মুখ্যমন্ত্রীর ‘চড়া’ সমালোচনার পথে হাঁটল না সিপিএম
ণের বকেয়া পরিশোধ করতে না-পারলে কৃষকদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত না-করার যে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছেন, তার প্রতিক্রিয়ায় ভিন্ন সুর ধরা পড়ল সিপিএমের অন্দরেই। তবে পঞ্চায়েত ভোটের আগে মমতা যে কারণে ‘জমি-প্রশ্নে’ কৃষকের পাশে দাঁড়াতে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেই একই কারণে প্রধান বিরোধীদল সিপিএমও খুব ‘চড়াসুরে’ সেই সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা করতে পারেনি। এমনকী, সিপিএমের দলীয় মুখপত্রেও মঙ্গলবার তৃণমূলের সমবায়ের ‘সমালোচনা’ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী যা-ই দাবি করুন, জমি ‘ক্রোক’ করছে তৃণমূলের সমবায়। অর্থাৎ, মুখ্যমন্ত্রী যে সিদ্ধান্তই নিন না কেন, তৃণমূল কিন্তু কৃষকের পাশে নেই!
বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র ওই ঘোষণার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন। তবে তিনিও বলেছেন, “ঋণ শোধ করতে না-পারলে কৃষকের সম্পত্তি ‘ক্রোক’ করা হোক, আমরা চাই না। উচিতও নয়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে নেতিবাচক কথা বলেছেন, তাতে সমবায় ধাক্কা খাবে। আবার গ্রামে মহাজনি কারবার ফিরে আসবে। সেই সঙ্গে বেসরকারি মাইক্রো-ফিনান্স ফিরে আসবে।” অর্থাৎ গ্রামে চিট-ফান্ডের রমরমা হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলনেতা। কিন্তু পাশাপাশিই তিনি জানিয়েছেন, তাঁরাও কৃষকের সম্পত্তি ‘ক্রোক’ করার পক্ষপাতী নন।
পক্ষান্তরে, প্রাক্তন ভূমিমন্ত্রী আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা আবার বলেছেন, যে আইনে কৃষকের ভাল হবে, তাকেই দু’হাত তুলে সমর্থন করবেন তিনি! রেজ্জাক অবশ্য নিয়মিতই নানা প্রশ্নে দলের উল্টো সুরে কথা বলার জন্যই ‘পরিচিত’! ক্যানিংয়ের সুন্ধিপুকুরিয়ায় এক চাষির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় এ দিন তাঁর বাড়িতে খোঁজখবর নিতে গিয়েছিলেন রেজ্জাক। সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন তিনি। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য রেজ্জাকের বক্তব্য, “২০০৬ সালে বামফ্রন্ট সরকার যখন সমবায় আইন তৈরি করে, তখন আমি ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের মন্ত্রী ছিলাম। তাই ওই আইন সম্পর্কে জানা সম্ভব ছিল না। এখন যখন রাজ্য সরকার এই আইন পরিবর্তন করতে চাইছে, তখন আমি সরকারকে সমর্থন জানাব। সারা ভারতে যেখানেই কৃষকদের জন্য ভাল কাজ হবে, তাকেই সাধুবাদ জানাব।” অর্থাৎ সমবায়ের বিপদ এবং ঋণ প্রক্রিয়ার সমস্যা হিসাবে না-দেখে রেজ্জাক গোটা বিষয়টিকে কৃষকের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে চেয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা প্রসঙ্গে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু এ দিন বলেছেন, “আগে মুখ্যমন্ত্রী সমবায় আইন পরিবর্তন করুন, তার পরে মন্তব্য করব।” তার মানে কি তিনি মনে করছেন, সমবায় আইন পরিবর্তন করা সম্ভব নয়? বিমানবাবুর জবাব, “আমি তা জানি না। তবে তমলুকের মাত্র একটি সমবায় ব্যাঙ্কে ঋণখেলাপিদের সম্পত্তি ‘ক্রোক’ করার কথা বলা হয়েছে। রাজ্যের আর কোথাও তা বলা হয়নি।”
মুখ্যমন্ত্রী এর পিছনে ‘সিপিএমের হাত’ দেখেছেন। এই প্রসঙ্গে অন্নদাশঙ্কর রায়ের ছড়ার একটি লাইন উদ্ধৃত করে বিমানবাবু বলেন, “যা-ই হোক, সব কমিউনিস্টদের দোষ! ওই ব্যাঙ্কের ১১৫ জন সদস্যের মধ্যে ১১০ জন তৃণমূলের লোক। ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান নিকুঞ্জ বিহারি মান্না তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। তার পরেও কী করে সিপিএমের কথা আসছে?” বিমানবাবুর অভিযোগ, “অহরহ অসত্য, মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে! রাজ্যের মানুষ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে এ কথা বুঝতে পারবেন। আপাতত এই ব্যাঙ্কের ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষ তা বুঝতে পারছেন। নোটিসের পিছনে সিপিএমের কোনও হাত না-থাকা সত্ত্বেও তাদের নামে মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.