আদ্রা, আনাড়ার সঙ্কট মেটাতে পাঞ্চেতের জল আনার উদ্যোগ
দুই রেল শহর আদ্রা ও আনাড়ায় পানীয় জলের সমস্যার স্থায়ী সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে রেল। ডিভিসি-র পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল নিয়ে এসে আদ্রা ডিভিশনের এই দুই রেল শহরে জল সরবরাহ করার পরিকল্পনা নিয়েছে রেল.কর্তৃপক্ষ। আদ্রার ডিআরএম অমিতকুমার হালদার বলেন “ওই জল প্রকল্পের বিস্তারিত রিপোর্ট (ডিপিআর) রেল বোর্ডের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলেই কাজ শুরু করা হবে।” রেল বাজেটেই প্রকল্পটির ছাড়পত্র মিলবে বলে আশাবাদী আদ্রা ডিভিশন কর্তৃপক্ষ।
দক্ষিণ-পূবর্র্ রেলের আদ্রা ডিভিশনের সদর আদ্রা ও অপর গুরুত্বপূর্ণ রেল শহর আনাড়াতে পাণীয় জলের সমস্যা দীর্ঘ দিনের। রেলের নিজস্ব পরিকাঠামো থেকে চাহিদা অনুযায়ী জল দিতে সমস্যা হয় রেল কর্তৃপক্ষের। আদ্রার ক্ষেত্রে ইন্দো-জার্মান জল প্রকল্প থেকে কিছু পরিমান জল মিললেও আনাড়াতে সেই সুবিধা না থাকায় জলের চিরস্থায়ী সমস্যা রয়েছে। এই প্রেক্ষিতেই জলের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে রেল।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রাজ্যের ঝাড়খণ্ড সীমান্তে ডিভিসি-র পাঞ্চেত জলাধার থেকে আদ্রা ও আনাড়ায় জল নিয়ে আসার জন্য মোট ৬২ কোটি টাকার ওই প্রকল্প তৈরি করেছে রেল। ডিআরএম বলেন, “পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল নেওয়ার ব্যাপারে ডিভিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। ওঁরা আমাদের জল দিতে প্রাথমিক ভাবে সম্মত হয়েছেন।” রেল সূত্রের খবর, আদ্রা ও আনাড়ার জন্য দৈনিক ১৭ লক্ষ গ্যালন জলের প্রয়োজন। তাঁর মধ্যে আদ্রার জন্য প্রয়োজন ১৪ লক্ষ গ্যালন ও আনাড়ার জন্য দরকার তিন লক্ষ গ্যালন জল। আনাড়ায় নির্মিয়মান রেলের কামরার মধ্যবর্তী পুনর্বাসন কারখানার জন্য প্রয়োজনীয় এক লক্ষ গ্যালন জল ওই প্রকল্প থেকেই দেওয়া হবে।
রেল বাজেটে এই জল প্রকল্পের অনুমোদন মেলে কিনা সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছে দুই রেল শহর।.কারণ রেল বোর্ডের নির্দেশ অনুযায়ী রেল কর্মীদের আবাসনে ২৪ ঘন্টা জল সরবরাহের নিয়ম। কিন্তু বাস্তবে ওই দুই রেল শহরের প্রায় চার হাজার কর্মী আবাসনে দৈনিক দু’বারের বেশি জল সরবরাহ করা হয়.না। গরমের সময়ে জল সরবরাহের পরিমাণ আরও কমিয়ে দেওয়া হয়। রেলের নিজস্ব জলপ্রকল্প থাকা সত্বেও গরম কালে প্রায় চার মাস আবাসনের বাসিন্দাদের জল সঙ্কটে ভুগতে হয়। আদ্রার জন্য দ্বারকেশ্বর নদ থেকে দৈনিক ১০ লক্ষ গ্যালন জল সরবরাহ করা হয়। বাকি দু’লক্ষ গ্যালন মেলে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের ইন্দো-জার্মান জলপ্রকল্প থেকে। তারপরেও ঘাটতি থাকে দু’লক্ষ গ্যালন। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, রেল বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী দুই রেল শহরের প্রায় চার হাজার কর্মী আবাসন, রেলের বিভিন্ন দফতর, রেলওয়ে হাসপাতাল ও স্টেশনে জল দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু বর্তমান পরিকাঠামোয় তা সঠিক ভাবে সম্ভব হচ্ছে না।
ডিআরএমের অভিযোগ, “ইন্দো-জার্মান জল প্রকল্প থেকে যে পরিমান জল পাওয়ার কথা মাঝেমধ্যেই তার চাইতে কম জল মেলে। আবার গরমের সময়ে দ্বারকেশ্বর নদের জল কমে যাওয়ায় জল সরবরাহে ঘাটতি দেখা যায়। আনাড়ার ক্ষেত্রেও একই সমস্যা। সেখানে সাহেববাঁধ থেকে জল সরবরাহ করে রেল। গরমের সময়ে ঘাটতি দেখা দেয় সেখানেও। সম্প্রতি আদ্রায় পরিদর্শনে এসে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বি কে গর্গ জানিয়েছিলেন, প্রস্তাবিত জল প্রকল্পের অনুমোদন পেলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়ে যাবে। চাহিদার পুরো জলটাই মিলবে ডিভিসির জলাধার থেকে।
এই প্রকল্পের অনুমোদনের বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদী দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। কেন?
রেলের এক কর্তা জানান, ২০১০ সালেই এই জল প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছিলেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তৎকালীন জিএম বিনয় মিত্তাল। বর্তমানে তিনি রেল মন্ত্রকের সব্বোর্চ নীতি নিধর্র্রক সংস্থা রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান। তাঁর কথায়, “আদ্রা ডিভিশনের এই জল প্রকল্পের বিষয়ে প্রথম থেকেই সমর্থন রয়েছে বোর্ডের চেয়ারম্যানের। তাঁর নির্দেশেই প্রকল্পটি পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তাই রেল বাজেটে অনুমোদন পাওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সম্ভবনা রয়েছে।”
রেলকর্মী সংগঠন মেনস কংগ্রেসের নেতা সুব্রত দে বলেন, “দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জিএম থাকার সময় বিনয় মিত্তাল আদ্রায় পরিদর্শনে এসে পানীয় জলের সংকট দেখেন। এরপরেই তিনি সরাসরি ডিভিসি থেকে আদ্রা ও আনাড়ায় জল সরবরাহের প্রকল্পের পরিকল্পনা নেন। সংগঠন গত ভাবে আমরাও বারবার এই প্রকল্পের দাবি জানিয়েছি। আশা করি রেল বাজেটে এই প্রকল্পের অনুমোদন মিলবে।”
সম্প্রতি নতুন জিএম এসেও আশার কথা শুনিয়েছিলেন। এখন রেল বাজেটের আগে এই জল প্রকল্পের অনুমোদনের দিকেই তাকিয়ে দুই রেল শহর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.