বিষ্ণুপুরের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে অতিরিক্ত দায়রা জজের এজলাসে মামলাটি বিচারাধীন। এ দিন ছিল দেবযানীর মা শ্যামলী নন্দীর সাক্ষ্যগ্রহণ। মামলার সরকারি আইনজীবী গুরুদাস ভট্টাচার্য জানান, আজ, বুধবার অন্য আত্মীয়দের শুনানিতে ডাকা হয়েছে। পরে আদালত থেকে বেরিয়ে দেবযানীর বাবা, বাঁকুড়ার জয়পুর থানার গেলিয়া গ্রামের বাসিন্দা বৈদ্যনাথবাবু অভিযোগ করেন, “অর্ক এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক হিসাবে আমার মেয়েকে নানা অছিলায় সংগঠনের কাজে দিল্লি, কলকাতা নিয়ে যেতেন। দু’বছর ওদের প্রেমপর্ব চলে। বিয়ের কথাও এগিয়েছিল। পরে অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন অর্ক।” সিপিএমের গেলিয়া লোকাল কমিটির প্রাক্তন সদস্য বৈদ্যনাথবাবুর দাবি, ঘটনার দিন দেবযানীর মোবাইলের কললিস্ট নতুন করে খতিয়ে দেখা হোক। তাঁর বক্তব্য, “আমরা অর্কর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছিলাম। কিন্তু পুলিশ যে ভাবে মামলা সাজিয়েছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট নই। প্রথম থেকেই আমরা সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিলাম। এখন নতুন সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সিবিআই তদন্তের আবেদন জানাচ্ছি।” |
এ দিন বিক্ষোভে সামিল বিষ্ণুপুরের তৃণমূল কাউন্সিলর দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং টিএমসিপি-র বিষ্ণুপুর শহর সভাপতি সুশান্ত দাঁ-এর অভিযোগ, “বাম জমানায় মামলাটিকে লঘু করার জন্য আত্মহত্যায় প্ররোচনার ধারা দিয়েছিল পুলিশ। বাস্তবে এটি খুনের ঘটনা। আমরাও সিবিআই তদন্ত চাইছি।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যাম মুখোপাধ্যায় বলেন, “বৈদ্যনাথবাবুর দাবি নিয়ে আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।” এসএফআইয়ের বর্তমান জেলা সম্পাদক ধর্মেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, “বর্তমানে অর্কর সঙ্গে সংগঠনের কোনও যোগাযোগ নেই। আইন আইনের পখথে চলুক। দোষী প্রমাণিত হলে অর্ক শাস্তি পাক, আমরাও চাই।”
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার প্রণব কুমারের মোবাইলে অনেক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াকার রাজা বলেন, “ঘটনাটি আমার বিশেষ জানা নেই। তাই মন্তব্য করব না।” বর্তমানে কলকাতায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অর্ক এ দিন আদালতে হাজির থাকলেও কোনও কথা বলেননি। তাঁর বাবা, পেশায় সরকারি পশু শল্য চিকিৎসক প্রবীর পোদ্দারের দাবি, “খুনের অভিযোগ মিথ্যা। আর মিথ্যাকে সত্য প্রতিপন্ন করা সহজ নয়।”
|