আদালতে বিক্ষোভ তৃণমূলের
দেবযানী মৃত্যু-রহস্যে সিবিআই তদন্ত দাবি
বাঁকুড়ার এক প্রাক্তন এসএফআই নেত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলায় অভিযুক্ত প্রাক্তন এসএফআই নেতার শাস্তির দাবিতে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখাল তৃণমূল। মঙ্গলবার বিষ্ণুপুর আদালতে বিক্ষোভ দেখায় যুব তৃণমূল এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। সংগঠনের সদস্যেদের হাতে প্ল্যাকার্ড, পোস্টার নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবিতে স্লোগান দেন। একই দাবি তুলেছেন মৃতার বাবাও।
২০০৮ সালের ৫ অগস্ট রাতে আসানসোলের কালিপাহাড়ি স্টেশনের কাছে রেললাইনের ধারে তৎকালীন বাঁকুড়া
দেবযানী।
জেলা এসএফআইয়ের সহ-সভাপতি দেবযানী নন্দীর (২১) দেহ উদ্ধার হয়। দেবযানীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ায় অভিযুক্ত হন সেই সময়ে এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অর্ক পোদ্দার। ৭ অগস্ট দেবযানীর বাবা বৈদ্যনাথ নন্দী জয়পুর থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরেই অর্ক বেপাত্তা হয়ে যান। কিন্তু হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে আগাম জামিনের আবেদন নাকচ হওয়ায় ওই বছর ১৬ সেপ্টেম্বর বিষ্ণুপুর আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশ চার্জশিট দিতে না-পারায় ১৫ নভেম্বর জামিনে ছাড়া পান অর্ক। ঘটনাটি নিয়ে তখন সরব হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ ছিল, “যে কোনও ঘটনায় অভিযুক্ত সিপিএম নেতা-কর্মীদের পুলিশ আড়াল করে। তাই অর্ককে পুলিশ ধরেনি।’’ ঘটনার পরেই অর্ককে এসএফআই থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
আদালতে অর্ক।
বিষ্ণুপুরের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে অতিরিক্ত দায়রা জজের এজলাসে মামলাটি বিচারাধীন। এ দিন ছিল দেবযানীর মা শ্যামলী নন্দীর সাক্ষ্যগ্রহণ। মামলার সরকারি আইনজীবী গুরুদাস ভট্টাচার্য জানান, আজ, বুধবার অন্য আত্মীয়দের শুনানিতে ডাকা হয়েছে। পরে আদালত থেকে বেরিয়ে দেবযানীর বাবা, বাঁকুড়ার জয়পুর থানার গেলিয়া গ্রামের বাসিন্দা বৈদ্যনাথবাবু অভিযোগ করেন, “অর্ক এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক হিসাবে আমার মেয়েকে নানা অছিলায় সংগঠনের কাজে দিল্লি, কলকাতা নিয়ে যেতেন। দু’বছর ওদের প্রেমপর্ব চলে। বিয়ের কথাও এগিয়েছিল। পরে অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন অর্ক।” সিপিএমের গেলিয়া লোকাল কমিটির প্রাক্তন সদস্য বৈদ্যনাথবাবুর দাবি, ঘটনার দিন দেবযানীর মোবাইলের কললিস্ট নতুন করে খতিয়ে দেখা হোক। তাঁর বক্তব্য, “আমরা অর্কর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছিলাম। কিন্তু পুলিশ যে ভাবে মামলা সাজিয়েছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট নই। প্রথম থেকেই আমরা সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিলাম। এখন নতুন সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সিবিআই তদন্তের আবেদন জানাচ্ছি।”
বিক্ষোভ তৃণমূলের।
এ দিন বিক্ষোভে সামিল বিষ্ণুপুরের তৃণমূল কাউন্সিলর দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং টিএমসিপি-র বিষ্ণুপুর শহর সভাপতি সুশান্ত দাঁ-এর অভিযোগ, “বাম জমানায় মামলাটিকে লঘু করার জন্য আত্মহত্যায় প্ররোচনার ধারা দিয়েছিল পুলিশ। বাস্তবে এটি খুনের ঘটনা। আমরাও সিবিআই তদন্ত চাইছি।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যাম মুখোপাধ্যায় বলেন, “বৈদ্যনাথবাবুর দাবি নিয়ে আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।” এসএফআইয়ের বর্তমান জেলা সম্পাদক ধর্মেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, “বর্তমানে অর্কর সঙ্গে সংগঠনের কোনও যোগাযোগ নেই। আইন আইনের পখথে চলুক। দোষী প্রমাণিত হলে অর্ক শাস্তি পাক, আমরাও চাই।”
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার প্রণব কুমারের মোবাইলে অনেক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াকার রাজা বলেন, “ঘটনাটি আমার বিশেষ জানা নেই। তাই মন্তব্য করব না।” বর্তমানে কলকাতায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অর্ক এ দিন আদালতে হাজির থাকলেও কোনও কথা বলেননি। তাঁর বাবা, পেশায় সরকারি পশু শল্য চিকিৎসক প্রবীর পোদ্দারের দাবি, “খুনের অভিযোগ মিথ্যা। আর মিথ্যাকে সত্য প্রতিপন্ন করা সহজ নয়।”

ছবি: শুভ্র মিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.