হাত ধরে রেখেছিলেন শ্বশুর। মুখ চেপে রেখেছিলেন আর এক জন। সেই অবস্থাতে সোমবার রাতে তাঁর নিজের ঘরেই দু’জন তাঁকে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ করলেন নদিয়ার ডিগরি গ্রামের এক মহিলা। শ্বশুর শান্তিপদ বালা পলাতক। খোঁজ নেই শাশুড়িরও। বছর উনিশের ওই সদ্য তরুণীর স্বামী কর্মসূত্রে থাকেন ওড়িশায়। টিনের চালার মাটির বাড়িতে পাশাপাশি দু’টি ঘরে শ্বশুর-শাশুড়ির কাছেই থাকতেন তিনি। জেলার পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমণ মিশ্র বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তও শুরু হয়েছে। তবে অভিযুক্তেরা পলাতক।”
বছর খানেক আগে বিয়ে হয়েছিল ওই তরুণীর। কাছেই ভীমপুর গ্রামে তাঁর বাপের বাড়ি। তাঁর শ্বশুর শান্তিপদ পেশায় কৃষিজীবী। মহিলার স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। স্বামী বাড়িতে না থাকায় তাঁর উপরে প্রায়ই অত্যাচার হত বলেও পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন তিনি। মেয়েটির দাদা শুভঙ্কর বিশ্বাস বলেন, “বিয়ের পর থেকেই বোনের উপরে পণের জন্য অত্যাচার চলছিল। অবস্থা এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যে, মাসখানেক আগে বোন কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যারও চেষ্টা করে।” অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে সে সময়ে ভর্তি করতে হয়েছিল শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। সেখান থেকে শ্বশুরবাড়ি নয়, বাপের বাড়ি ভীমপুরেই চলে গিয়েছিলেন তরুণী। গত রবিবার শ্বশুরবাড়ির এক আত্মীয় বুঝিয়ে সুঝিয়ে তাঁকে ডিগরি গ্রামে ফিরিয়ে আনে। শুভঙ্করবাবু বলেন, “আমরাও ভেবেছিলাম মিটমাট হয়ে গেল। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে ওঁদের এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে খবর পেয়ে গিয়ে দেখি বোন তার ঘরের মেঝেতে পড়ে কাতরাচ্ছে। ওকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। তারপরে ওর কাছ থেকে সব কথা শুনে আমরা তো থ! পুলিশে ডায়েরি করা হয়েছে।”
ওই তরুণী জানান, সেই দিন রাতে কেউ তাঁকে চেপে ধরে। ঘুম ভেঙে যায়। তিনি বলেন, “ধস্তাধস্তির সময়ে আমার বুকের উপরে একটা মোবাইল পড়ে যায়। জ্বলে ওঠা সেই মোবাইলের আলোয় দেখি শ্বশুর আমার হাত দু’টো চেপে ধরে রয়েছে। আর এক জন মুখ চেপে রেখেছিলেন। তারপরে তিন জনের অন্তত দু’জন আমাকে ধর্ষণ করে। আতঙ্কে, যন্ত্রণায় আমি জ্ঞান হারাই। সকালে জ্ঞান ফিরতে দেখি মেঝেতে পড়ে রয়েছি।” তারপরে তাঁর কান্না-চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। গ্রামের বাসিন্দা মাধব বিশ্বাস বলেন, “মেয়েটি যে ভাবে পড়েছিল, দেখে বোঝাই যাচ্ছিল ওর উপরে অত্যাচার হয়েছে। সে নিজেও আমাদের বাড়ির মেয়েদের সে কথা বলেছে। তবে ওর শ্বশুর কোনও অভিযোগই মানতে চায়নি। তখন আমরা ওর বাপের বাড়িতে আমরাই খবর পাঠাই।” |